নিউ ইয়র্ক রুট চালু নিয়ে বিমান অনিশ্চয়তায়

নাশরাত চৌধুরী: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিউ ইয়র্ক রুট চালু করা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। ওই রুট চালুর ব্যাপারে উড়োজাহাজ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি তাদের থাকলেও  সেখানে উড়োজাহাজ চলাচলের এখনও অনুমতি নেই। বিমান নানাভাবে চেষ্টা করেছে ওই রুটটি চালু করার অনুমতি নেয়ার। তবে আগামী জুনের আগে এ রুটের ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে কোন রকম ইতিবাচক সাড়া    পৃষ্ঠা ৮ কলাম ৩
পাওয়া যাবে না। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, বিমানবন্দরের আপগ্রেডেশন কর্মকাণ্ড দেখতে বিশেষজ্ঞ দল আগামী এপ্রিল-মে মাসে বাংলাদেশ সফরে আসবে। ওই সময়ে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্পন্ন হওয়া কাজ ও গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থার পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন। তারপর রিপোর্ট দেবেন। সূত্র জানায়, সিভিল এভিয়েশন অথরিটিকে বিমানবন্দরের ক্যাটিগরি উন্নতির জন্য যে সব শর্ত দেয়া হয়েছিল এর প্রায় সবই পূরণ করেছে। কেবল পূরণ করতে পারেনি জনবলের শর্তটি। আইকাওয়ের পক্ষ থেকে বিমাবন্দরের ক্যাটিগরি উন্নতির জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, জনবল বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি শর্ত দেয়। সিভিল এভিয়েশন অথরিটি ইতিমধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জনবল বাড়ানোর ব্যাপারে তেমন কিছুই করতে পারেনি। এব্যাপারে সিভিল এভিয়েশন অথরিটির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, বিশেষজ্ঞ টিম এর আগে বিমানবন্দর পরিদর্শণ করে আমাদের জনবল কম বলে মত দেন এবং তা বাড়ানোর জন্য বলেন। চাইলেও আমরা জনবল বাড়াতে পারছি না। এটি সরাসরি আমরা করি না।
সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের ক্যাটিগরি উন্নতি করতে না পারার কারণে ঢাকা-নিউ ইয়র্ক রুটে বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ফ্লাইট পরিচালনা করার অন্যতম শর্ত হিসেবে ক্যাটিগরির উন্নতি করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ক্যাটিগরি উন্নত না হলে বিমান কোন ভাবেই ওই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে না। এর আগে গত বছরের শেষ দিকে সরকার থেকে বিমানবন্দরের ক্যাটিগরির উন্নতির কাজ শেষ না হলেও যাতে বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে সে চেষ্টাই করা হয়। কিন্তু তা করতে দেয়া হয়নি। ফলে নিউ ইয়র্ক রুট চালুর সব চেষ্টাই বিফলে যায়। একজন কর্মকর্তা বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের চেয়ে কম সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরকে ক্যাটিগরি এ’তে উন্নীত করা হয়েছে। আমাদেরকে দেয়া হচ্ছে না। বি’ ক্যাটিগরিতে রাখা হয়েছে। এর পেছনে নানা হিসাব-নিকাশ রয়েছে, কিন্তু এ হিসাব-নিকাশ মেলানো কঠিন। সিভিল এভিয়েশনের একজন সদস্য বলেন, বিশেষজ্ঞ দল এপ্রিল-মে মাস নাগাদ আসার সিডিউল দিয়েছে। তারা এসে কাজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এরপর যদি মনে করেন ঠিক হয়েছে তাহলে সমস্যা হবে না। আর যদি শর্ত পূরণ যতখানি হয়েছে তা ধরে ছাড় না দেন তাহলে ক্যাটিগরি উন্নতি হবে না। তা না হলে দেখা যাবে আমরা নিউ ইয়র্ক রুটের ফ্লাইট চালু করতে পারছি না। এদিকে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি ক্যাটিগরি উন্নতির জন্য অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকার দরুণ দিনে দিনে বিমানের নিউ ইয়র্ক রুটের ফ্লাইট চালু করাও অনিশ্চিত রয়েছে। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এয়ার কমোডর (অব.) জাকিউল ইসলাম বলেন, বহরে নতুন বোয়িং যোগ হয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম বহরে নতুন বোয়িং আসার পর নিউ ইয়র্ক রুট চালু করা সম্ভব হবে। এ নিয়ে আমরা পরিকল্পনাও করেছিলাম। এখন তা সম্ভব হচ্ছে না।

No comments

Powered by Blogger.