আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি সভা-নৈতিক বিষয়ে বিশেষ কোর্স চালুর দাবি

ধর্মীয় সম্প্রীতি বাড়াতে বিভিন্ন ধর্মের নৈতিক শিক্ষার বিষয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা অথবা স্বতন্ত্রভাবে বিশেষ কোর্স চালু করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ধর্মীয় নেতারা। গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ‘আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব দাবি জানান।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং আন্তধর্মীয় ও আন্তসাংস্কৃতিক সংলাপ কেন্দ্র যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। জাতিসংঘ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহকে ‘আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি সপ্তাহ’ ঘোষণা করে।
সভাপতির বক্তব্যে আন্তধর্মীয় ও আন্তসাংস্কৃতিক সংলাপ কেন্দ্রের পরিচালক কাজী নূরুল ইসলাম ২৫ মে কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনকে আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি দিবস ঘোষণার দাবি জানান।
সম্প্রীতি সপ্তাহের উদ্বোধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘দেশে দেশে চেহারায়, বর্ণে মানুষের ভিন্নতা থাকলেও ভেতরে আমরা সবাই এক। আন্তধর্মীয় চর্চার মাধ্যমে মানবিক সংস্কৃতিবোধ তৈরি করতে হবে, মানবতাবাদের উন্মেষ না ঘটলে অর্থনৈতিক উন্নতি মূল্যহীন।’
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী অমেয়ানন্দজি মহারাজ বলেন, পূর্ণজ্ঞানই জগতের সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে। তিনি বলেন, সব ধর্মই সঠিক। ধর্ম নিয়ে মহাপুরুষদের মধ্যে কোনো বিভেদ ছিল না।
ইন্টারন্যাশনাল বুদ্ধিষ্ট মনাস্ট্রির উপাধ্যক্ষ ভেনারেবল বুদ্ধানন্দ মহাথেরো বলেন, বর্তমান বিশ্বে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি চলছে, এটা সুখকর নয়। যাঁর ধর্ম তাঁর কাছে বড়, এ নিয়ে বাড়াবাড়ি সমাজে অশান্তি ডেকে আনে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সহনশীল হতে হবে।
ঢাকার মোস্ট রেভারেন্ড বিশপ থিওটোনিয়াস গোমেজ বলেন, সম্প্রীতি একটি কঠিনতম হার্দিক আচরণ। এটি কেবল আলোচনার বিষয় নয়, এটাকে হূদয়ে ধারণ করতে হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (প্রকাশনা বিভাগ) আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিষয়টি কেবলই প্রতীকী। হয়তো রাজনৈতিক কারণে এটা করা হয়েছে। বাস্তবে এর কোনো প্রভাব নেই।
আলোচনা শেষে ফাদার তপন ডি রোজারিও প্রার্থনা পরিচালনা করেন। সভায় জানানো হয়, ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা থেকে একটি সম্প্রীতি শোভাযাত্রা বের করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.