মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: বিকাল পাঁচটা পাঁচ। প্রধানমন্ত্রী গোলাপে আবৃত লাল ফিতা কাটলেন। হাততালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো বাংলা একাডেমী। পর্দা ওঠে বছরের সেরা এক সাংস্কৃতিক উৎসব অমর একুশে গ্রন্থমেলার। গতকাল দুপুর থেকেই একাডেমীর গেটের বাইরে ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বেরিয়ে গেলে দর্শনার্থীরা   পৃষ্ঠা ৫ কলাম ৩
মেলা স্থলে প্রবেশ করতে শুরু করেন ।
প্রথম দিনে ছিল দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে মেলায় ঢোকার ভিড়। উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে শুরু হয় মেলা চত্বরে ঢোকার হুড়োহুড়ি। এরই মাঝে প্রকাশকরা বই সাজাতে থাকেন। বিদ্যা প্রকাশের মজিবুর রহমান খোকা বললেন, মেলার সার্বিক প্রস্তুতি ভাল। এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। দু’-একদিনের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।
মেলার টুকিটাকি: মেলাকে ঘিরে একাডেমী চত্ব্বরকে এবার ৯টি স্পটে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো- রবীন্দ্র চত্বর, নজরুল চত্বর, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চত্বর,  বেগম রোকেয়া চত্বর এবং শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত চত্বর এবং পাঁচ ভাষাশহীদ চত্বর (সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত ও শফিউরও।

ই-তথ্য কেন্দ্র থাকছে বরাবরের মতো

অনলাইন সেবা দিতে মেলায় এবারও থাকছে ই-তথ্য কেন্দ্র। মেলা প্রাঙ্গণের মূল ফটকের পাশেই স্থাপন করা হচ্ছে বিশেষ ‘ই-তথ্যকেন্দ্র। এখান থেকে মেলায় আসা দর্শনার্থী ও ক্রেতারা জেনে নিতে পারবেন যে কোন তথ্য। কোন লেখকের কতটি বই মেলায় এসেছে বা পুরাতন কোন লেখকের বই মেলায় আসবে কিনা ইত্যাদি তথ্য এখান থেকে জানা যাবে। ই-তথ্য কেন্দ্রে গেলে পাওয়া যাবে লেখক-কবিদের বিস্তারিত জীবনীও। গ্রন্থবদ্ধ বইয়ের পাশাপাশি মেলায় এবার প্রকাশ হচ্ছে ছোটদের জন্য এনিমেশন লার্নিং ভিডিও সিডি। পাশাপাশি থাকছে বিভিন্ন সফটওয়্যার লার্নিং বা টিউটোরিয়াল সিডি, আউটসোর্সিং বিষয়ক সিডি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ও  দেশের গান, বাংলা সাহিত্য সম্ভার, দেশীয় সংস্কৃতির ই-বুক, বাংলা ডিজিটাল বিশ্বকোষ।

চলছে স্টল নির্মাণের কাজ: মেলা শুরু হয়ে গেলেও প্রকাশকরা শেষ করতে পারেননি স্টল নির্মাণ ও সাজানোর কাজ। গতকাল মেলা শুরু হওয়ার পরও বহু স্টলের নির্মাণকাজ চলছিল। বাংলা একাডেমীর রাস্তায় বরাদ্দ পাওয়া বেশির ভাগ প্রকাশনীই প্রথম দিন স্টলে বই ওঠাতে পারেনি। হাতুড়ির ঠুকঠাক শব্দ আর এবড়ো-থেবড়ো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাঠের গুঁড়ো যেন মেলার আবেদনকে বিশৃঙ্খলায় বেঁধে রাখতে চায়। আরও আছে ধুলো-বালির যন্ত্রণা। প্রতিবারের মতো এবারও ধুলোর বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে দর্শনার্থীদের। প্রকাশকরা প্রস্তুতি শেষ না হওয়ার জন্য একাডেমী কর্তৃপক্ষের একদম শেষের দিকে এসে স্টল বরাদ্দ দেয়াকে দায়ী করেন। দু’-একদিনের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।  প্রতিদিন বিকাল ৩টা  থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। তবে ছুটির দিনগুলোয় মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়। ২১শে  ফেব্রুয়ারিতে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত  মেলা চলবে বলে জানান, একাডেমী কর্তৃপক্ষ।
গতকাল আড়ম্বরপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে  শুরু হলো বাংলাভাষী বাংলাদেশী লেখক-সাহিত্যপ্রেমী পাঠকদের চির আকাঙ্ক্ষিত ২৯ দিনের পথচলা। এ চলা সৃষ্টিশীল পথে, ক্রমোৎকর্ষের দিকে।

No comments

Powered by Blogger.