শেখ জামালকে হারিয়ে বিজেএমসি’র প্রতিশোধ

স্পোর্টস রিপোর্টার: গ্রামীণফোন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালকে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছে প্রায় তিন দশক পর ফুটবলে ফেরা টিম বিজেএমসি। গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়নদের ৩-১ গোলে হারিয়ে মওসুমে প্রথম শিরোপা হারানোর প্রতিশোধ নিলো তারা। যদিও এটাকে প্রতিশোধ বলতে নারাজ টিম বিজেএমসির কোচ জাকারিয়া বাবু। গতকাল ম্যাচের শুরুতেই এক গোল হজম করে টিম বিজেএমসি। কেস্টার গোলে এগিয়ে যায় তারা। এরপর একেএকে টিম বিজেএমসির হয়ে তিন গোল করেন ইকাঙ্গা, খোকন দাস ও ইসমাইল বাঙ্গুরা। গতকাল পেশাদার লীগের উদ্বোধনী ম্যাচেই দুই অধিনায়ককে ছাড়া মাঠে নামে শেখ জামাল ও টিম বিজেএমসি। অনুশীলনে ঘাড়ে ব্যথা পান আমিনুল আর জাকারিয়া বাবুর ট্রামকার্ড হিসেবে মাঠের বাইরে থাকেন আলফাজ। ফেডারেশন কাপের দুই ফাইনালিস্টদের এই ম্যাচে ৭ মিনিটে এগিয়ে যায় আগমনে লীগ শিরোপা  জেতা শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। বাঁপ্রান্ত থেকে ফেমির অরুনিমির ফ্রিকিকে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড কেস্টার হেডে বল জালে জড়ান (১-০)। এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে শেখ জামাল। এর ফলোশ্রুতিতে ২৮ মিনিটেই সমতায় ফেরে ফেডারেশন কাপের রানার্সআপ টিম বিজেএমসি। ২৮ মিনিটে আজাগুন আব্দুর রশিদের কর্নারে ইসমাইল বাঙ্গুরার পুশ ফিরে এলে জিয়ান জুলস ইকাঙ্গা বল জালে জড়াতে ভুল করেননি। ইকাঙ্গার গোলে ম্যাচে ফিরে বিজেএমসি (১-১)। ৪৩ মিনিটে নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হলো বিজেএমসি। আগুয়ান গোলরক্ষক পিরুকে কাটিয়ে ফাঁকা বারে বল ঠেলেছিলেন ইসমাইল বাঙ্গুরা। কিন্তু তার শট শেষ মুহূর্তে ক্লিয়ার করেন মিশু। ৫১ মিনিটে ইসমাইল বাঙ্গুরাকে ডি-বক্সে ফেলে দেন ইউসুফ ইশা। পেনাল্টি পায় বিজেএমসি। অথচ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ বাঙ্গুরা। তার সেট পিস বামদিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন আমিনুলের পরিবর্তে খেলতে নামা  গোলরক্ষক পিয়ারুজ্জামান পিরু। ৬১ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে বিজেএমসিকে এগিয়ে নেন খোকন দাস। আজাগুনের ব্যাকপাস আয়ত্তে এনে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডানপায়ের বাঁকানো শট পিরুর গ্লাভস ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় দ্বিতীয় জালে (২-১)। ৬৫ মিনিটে অ্যাসোগবা অ্যালেনকে লালকার্ড দেখতে হয় বেবেককে ডি-বক্সের ভেতরে অফ দ্য বল ফাউল করার অভিযোগে। ৭৫ মিনিটে বেবেক লং পাস দেন ইসমাইল বাঙ্গুরার কাছে। আগুয়ান গোলরক্ষক পিরুর পাশ দিয়ে বলের দিক পরিবর্তন করে বিজেএমসিকে ফের এগিয়ে নেন বাঙ্গুরা (৩-১)। শেষ তিন মিনিটে সহজ দুটি সুযোগ হেলায় হারালে ৩-১ এর ব্যবধান নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় টিম বিজেএমসিকে। এদিকে ম্যাচে হেরে নাখোশ শেখ জামালের কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, এই ম্যাচে আমরা সব ডিপার্টমেন্টেই খারাপ খেলেছি। শুরুতে এগিয়ে থাকাবস্থায় ম্যাচটা আমাদের হাতেই ছিল। কিন্তু এরপর থেকে ছেলেরা চাপ নিয়ে খেলতে থাকে। বলের নিয়ন্ত্রণ ওদের দিয়ে দেয়। এই সুুযোগটা কাজে লাগিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টিম বিজেএমসি। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে এই শেখ জামালের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল বিজেএমসি। গতকাল তাদের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে জয় পেয়েছে জাকারিয়া বাবুর শিষ্যরা। তারপরেও এই জয়কে  প্রতিশোধ বলতে চান না তিনি। ‘এটাকে প্রতিশোধ বলবো না। ফাইনালে আমাদের ছেলেরা সুযোগ মিস করেছিল। আজ সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছে বলেই জয় এসেছে। আমি সবসময় বলে এসেছিল প্রতিটি ম্যাচেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। এখানেই তাই হয়েছে- বললেন জাকারিয়া বাবু’। আলফাজকে না খেলানোর প্রসঙ্গে বাবু বলেন, আলফাজ আমার ট্রাম্পকার্ড। লীগের যে কোন সময় যে কোন পরিস্থিতিতে আমি তাকে ব্যবহার করবো। শেখ জামাল: পিরু, ইউসুফ, মিশু, ফেমি, রাজু (সোহেল রানা), অ্যালেন, কোমল (মিন্টু), শরীফ (সবুজ), কেস্টার, ইউসুফ ইসা ও রায়হান। টিম বিজেএমসি: হিমেল, জনি, আবুল (বিপ্লব), রনি (আলফাজ), খোকন দাস (মোকলেস), জিয়ান জুলস ইকাঙ্গা, বেবেক, সাইফ, আজাগুল আব্দুর রশিদ, আশরাফুল ও ইসমাইল বাঙ্গুরা।

No comments

Powered by Blogger.