এসএসসি পরীক্ষা শুরু প্রথম দিনেই অনুপস্থিত ৭৩৪৫ পরীক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার: এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিনেই অনুপস্থিত ছিল ৭৩৪৫ জন শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় বহিষ্কার করা হয়েছে ৩৮ শিক্ষার্থী ও ২ শিক্ষককে। গতকাল বাংলা প্রথম পত্রের মধ্য দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা  শুরু হয়। অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ১০৪০, রাজশাহী বোর্ডে ৫৬০, চট্টগ্রাম বোর্ডে ২২৫, কুমিল্লা বোর্ডে ৪২৩, বরিশাল বোর্ডে ১৩৭, দিনাজপুর বোর্ডে ৩৩৭, সিলেট বোর্ডে ১০৮, যশোর বোর্ডে ৪৯৭, মাদরাসা বোর্ডে সর্বোচ্চ৩৩৯০ ও কারিগরি বোর্ডে ৬২৮ জন। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে একজন, রাজশাহী বোর্ডে ১ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ২ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১ জন, যশোর বোর্ডে ১ জন, কারিগরি বোর্ডে ৭ জন এবং মাদরাসা বোর্ডে সর্বোচ্চ ২৫ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২ জন শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ দু’জনই মাদরাসা বোর্ডের। এসএসসি, দাখিল সমমানের পরীক্ষায় এবার ১৪ লাখ ২০ হাজার ৫৭ জন পরীক্ষার্থীর অংশ নেয়ার কথা। এ সংখ্যা গতবারের চেয়ে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৫ বেশি। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৩৫ হাজার ২২৯ জন, ছাত্রী ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৮ জন। এবার এসএসসি পরীক্ষায় ৮টি সাধারণ বোর্ডে অংশ নিচ্ছে ১৫ হাজার ৯৩৩টি প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৯ জন পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ২০ হাজার ১৫১ জন, ছাত্রী ৫ লাখ ৩২ হাজার ৮১৮ জন। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৯১৯৭টি প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩০ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৭৮ জন, ছাত্রী ১ লাখ ২৭ হাজার ৫২ জন। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের আওতায় ১৭২৫টি প্রতিষ্ঠানের ৯১ হাজার ১৫৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে পরীক্ষায়। এদের মধ্যে ছাত্র ৬৬ হাজার ২০০ জন, ছাত্রী ২৪ হাজার ৯৫৮ জন। ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, দাখিল ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে ২৪৬৪টি কেন্দ্রে গতকাল থেকে ৪ঠা মার্চ পর্যন্ত এসএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা হবে। এবার ২৬ হাজার ৮৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। এছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেদ্দা, রিয়াদ, আবু ধাবি, দুবাই, দোহা, বাহরাইন ও ত্রিপলি কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা হবে। বিদেশের কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭৪। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার অতিরিক্ত সময় ১৫ মিনিট থেকে বাড়িয়ে ২০ মিনিট করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই তারা শ্রুতি লেখককে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন ঢাকা বধির স্কুলে ৪৬ জন শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়া ২১টি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হবে। ২০১০ সালে ২টি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। গত বছর ১০টি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হয়। এবার এসএসসিতে বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি ১ম ও দ্বিতীয় পত্র এবং গণিত ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হবে। এদিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে সংঘাতময়, বিশৃঙ্খল কর্মসূচি না দেয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিন রাজধানীর ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে শিক্ষামন্ত্রী একথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আশা করি, আমাদের রাজনীতিবিদদের বুদ্ধি বিবেক আছে। যারা পরীক্ষা দিচ্ছে, তারা আমাদেরই সন্তান। আপনারা এমন কর্মসূচি দেবেন না যাতে পরীক্ষার রুটিন ব্যাহত হয়, পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হয়। শিক্ষার্থীদের কাছে পরীক্ষা এখন আর কোন ভীতি নয়। তারা এরই মধ্যে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে দু’টি পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তারা উৎসবের মধ্য দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বাংলা ও ইংরেজি ছাড়া অন্য সব বিষয় সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে, যা বিশ্বমানের। তিনি আরও বলেন, প্রথম বারের মতো সব বোর্ডের মধ্যে অনলাইন যোগাযোগ রয়েছে। ফলে পরীক্ষা চলার সময় সব খবর তৎক্ষণাৎ পাওয়া সম্ভব হবে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. নোমান-উর-রশিদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফাহিমা খাতুন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবুল কাসেম উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.