বিএনপির সংবাদ সম্মেলন-ক্ষমতাসীন দলের বিবাদের জেরে খুন লোকমান

রসিংদী পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান হোসেন হত্যার জন্য ক্ষমতাসীন দলের কোন্দলকে দায়ী করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, এই ঘটনা ক্ষমতাসীন দলের বিবাদের জের। এটা আড়াল করতেই খায়রুল কবীর খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।রিজভী বলেন, 'বিভিন্ন জাতীয় পত্রপত্রিকা ও নিজস্ব সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, কমিটি গঠন নিয়ে এক মন্ত্রীর সঙ্গে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে নরসিংদী পৌরসভার মেয়রের হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে।


নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নরসিংদী জ্বলছে, অথচ সরকার নির্বিকার।'অবিলম্বে খায়রুল কবীর খোকনের মুক্তির দাবি জানিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, অভিযোগ ছাড়াই খোকনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি এমপি, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-শিক্ষা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি ও আসাদুল করীম শাহিন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মুখোশধারী ব্যক্তিদের গুলিতে নিহত হন নরসিংদী পৌরসভার মেয়র লোকমান হোসেন। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খায়রুল কবীর খোকনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রিজভী বলেন, বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমানের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। নিজেদের দ্বন্দ্বের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটলেও বিনা অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। এটা সরকারের গভীর চক্রান্ত।
রিজভী বলেন, পৌর মেয়র লোকমান হোসেনের হত্যাকাণ্ডের পর শহরের ডাকবাংলো ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগকর্মীরা। মন্ত্রী নরসিংদী গেলে ওই সব ডাকবাংলোয় থাকেন। রাজুর ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। ট্রেনে আগুন, সার্কিট হাউস ভাঙচুরসহ পুরো জেলায় তাণ্ডব চলছে_সেদিকে সরকারের কোনো নজর নেই। বরং এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার।
যে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তাঁর গ্রেপ্তার দাবি করেন কি না জানতে চাইলে রিজভী বলেন, এই ঘটনা ক্ষমতাসীন দলের বিবাদের জের। তাই বিরোধী দলকে এ ঘটনায় না জড়িয়ে এর সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। ক্ষমতাসীন দলকে হানাহানি বন্ধ করতে বলেন তিনি।
লোকমান হত্যার পরদিন এগারসিন্দুর এঙ্প্রেসে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর সরকারের নিষ্ক্রিয়তার পরিপ্রেক্ষিতে রিজভী বলেন, 'গত বছর সিরাজগঞ্জে ট্রেন দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা কয়েকটি বগিতে আগুন দিলে আমাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে সরকার মামলা দিয়েছিল। কিন্তু এগারসিন্দুর ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনার দুদিন চলে গেলেও এখনো কোনো মামলা হয়নি।'

No comments

Powered by Blogger.