সবার জন্য শিক্ষার বার্তা নিয়ে গোলাপ হাতে 'জাগো'র কর্মীরা

নগনে রোদে গায়ে হলুদ টি-শার্ট, হাতে লাল গোলাপ, কারো হাতে পপকর্ন, কারো হাতে লিফলেট। এই নিয়ে হাসিমুখে বিনীত ভঙ্গিতে একঝাঁক তরুণ অনুরোধ জানিয়ে বললেন, 'আমরা জাগো ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছি, আপনারাও আমাদের হেল্প করুন, প্লিজ...।' গতকাল বৃহস্পতিবার এভাবেই বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে ফুল বিক্রি করে সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত পথশিশুদের একটি অন্য রকম আনন্দমুখর দিন উপহার দিলেন ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে পথশিশুদের পরিবর্তে তাঁরা অবস্থান নিয়েছেন সারা দিনই। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিভিন্ন করপোরেট সংস্থার প্রতিনিধিরা।


আর পথশিশুরা আনন্দে মেতেছিল ওয়ান্ডারল্যান্ডসহ বিভিন্ন পার্কে। এর মধ্য দিয়ে সর্বসাধারণের মধ্যে সর্বজনীন
শিশু দিবস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে অংশ নেন তাঁরা। কর্মসূচিটি একযোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ফেনী শহরে পালন করা হলো। কর্মসূচিতে অংশ নেয় সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
কর্মসূচির অধীনে ছিল উত্তরা, বিজয় সরণি, গুলশান, ধানমণ্ডি, আসাদ গেট, বেইলি রোড, শাহবাগ, বনানী, বারিধারা, পান্থপথ, আগারগাঁও, মিরপুর, তেজগাঁওসহ ঢাকার ২০টি ট্রাফিক সিগন্যাল।
গতকাল সকাল থেকেই জাগো ফাউন্ডেশন এবং ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ (ভিবিডি) এ কর্মসূচি শুরু করে।
উদ্যমী তরুণদের এ সচেতনতামূলক কাজে সাহস জুগিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আমেরিকান সেন্টারের পরিচালক লওরেন লাভলেস, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আনিসুল হক, এয়ারটেল বাংলাদেশের প্রধান সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং কর্মকর্তা অভয় শেঠ, মুক্তিযোদ্ধা আক্কু চৌধুরী, ওয়ান্ডারল্যান্ডের প্রতিনিধি এলিন সারা খান, অ্যাডকম লিমিটেডের উপপরিচালক নাজিম ফারহান চৌধুরী, সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু, এলিটা করিম, ওয়ারফেস, নেমেসিস, ওল্ড স্কুল ব্যান্ডের সদস্যরা, জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভী রাকশান্দ, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, পিৎজা হাট, কেএফসি, ফারইস্ট লিমিটেড, অসটেন, ওয়ান্ডারল্যান্ড, গ্রিন ওয়ার্ল্ড, প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট, এলিট ফোর্স, কাহারবা প্রডাকশন, এভাটিঙ্, কার্পেট ব্যাগ, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং এবং টিটিএল।
উল্লেখ্য, জাগো ফাউন্ডেশন ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলের ৫০০ এবং ২০১০ সালে দুই হাজার পথশিশুকে নিয়ে শহরের ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কে একটি আনন্দঘন দিনের আয়োজন করে; যেখানে সুষম খাদ্য, স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক এতে অংশ নেয়।
ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি সম্পর্কে করভী রাকশান্দ বলেন, "শহরের বিভিন্ন পথে ফুলসহ নানা সামগ্রী বিক্রি করে এমন পথশিশুদের জন্যই এ কর্মসূচি। এর মধ্য দিয়ে তাদের শৈশবের একটি দিন ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। আর পথশিশুদের নিত্যদিনের কাজে যোগ দিলেন আমাদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সব কষ্ট ভুলে ওরা আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছিল। আমাদের উদ্দেশ্য সর্বজনীন শিশু দিবসটি সম্পর্কে সব মহলে সচেতনতা সৃষ্টি করা, পাশাপাশি 'সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা' বার্তাটি পেঁৗছে দেওয়া।"
উল্লেখ্য, ২০ নভেম্বর সর্বজনীন শিশু দিবস পালিত হবে।

No comments

Powered by Blogger.