ইরানে হামলার ছক যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের

রানে যৌথভাবে হামলার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। দেশ দুটির দাবি, ইরানের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অপরিশোধিত ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা দিয়ে চারটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা যাবে। ইরানে হামলার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল_ এমন খবরের একদিন পর এ খবর দ্য ডেইলি মেইল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ইরানকে তার পরমাণু কর্মসূচির জন্য চাপের মুখে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি। খবর জি নিউজ, রয়টার্স ও মেইল অনলাইনের।


ইরানে সামরিক হামলা চালানো হলে ব্রিটেনের কৌশল কী হবে তা নির্ধারণ করতে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ ইউনিটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে সমর বিশেষজ্ঞরা যুদ্ধ প্রস্তুতি ও কলাকৌশল নিয়ে কাজ করবেন। রাজকীয় নৌবাহিনী ও টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন, ব্রিমসটন বোমা ও মিসাইলবাহী রাজকীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান ও পর্যবেক্ষণকারী বিমান মোতায়েন এবং আকাশে বিমানে জ্বালানি ভরার খুঁটিনাটি দিকগুলো চূড়ান্ত করবেন তারা। ব্রিটিশ সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান সম্প্রতি বেশ আগ্রাসী হয়ে উঠেছে, তবে এটি কেন হচ্ছে এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত নন। পশ্চিমা গোয়েন্দাদের মতে, ইরান দুর্গের ভেতর সুরক্ষিত বাঙ্কারে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ করে যাচ্ছে, সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্রের পক্ষে সেখানে প্রবেশ সম্ভব নয়। ইরানি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বরাবরই বলে আসছেন, তার দেশ বোমা বানাচ্ছে না, বরং বিদ্যুৎ তৈরির জন্য তারা পারমাণবিক কার্যক্রম চালাচ্ছে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির হুমকি মোকাবেলা এবং আঞ্চলিক সংঘাত এড়াতে ব্রিটেন চাপ প্রয়োগ এবং আলোচনা_ এ দ্বৈত কৌশলই বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, আমরা সমঝোতার মাধ্যমেই সমাধান চাই, তবে সব দিকই বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানে কোনো ধরনের হামলা চালালে ব্রিটেন তাতে অবশ্যই সমর্থন দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য আগামী বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগের এ সময়টায় বারাক ওবামা ইরান হামলার পক্ষপাতী নন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে মার্কিন প্রশাসনের ওপর এ নিয়ে চাপ তৈরি করতে পারে ইসরায়েল। দেশটি তার জন্য ইরানকে সবচেয়ে বড় হুমকি বলে মনে করছে। দেশটিতে সম্প্রতি পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগই ইরানে ইসরায়েলি হামলার পক্ষে রয়েছে। মিসাইল হামলার মুখে আত্মরক্ষার কৌশল শেখাতে রাজধানী তেল আবিবে মহড়াও শুরু করেছে ইসরায়েল। দেশটি এ অঞ্চলে উদ্ধার ও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা এবং নাগরিকদের মধ্যে গ্যাসরোধী মাস্ক বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে বারাক ওবামা বলেছেন, ইরানকে তার পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি ইস্যুতে চাপের মুখে রাখার বিষয়ে তিনি ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি একমত হয়েছেন। জি২০-এর রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন ফ্রান্সের কান শহরে রয়েছেন। সম্মেলনের আগে গতকাল সারকোজির সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ফলে সৃষ্ট হুমকি অব্যাহত রয়েছে। ইরান যাতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার নিয়ম-কানুন মেনে চলতে বাধ্য হয় সে জন্য অব্যাহত চাপ প্রয়োগে আমি এবং সারকোজি একমত হয়েছি।

No comments

Powered by Blogger.