প্রধানমন্ত্রীর সভার পাশে আবারও বিএনপির বিক্ষোভ

যুক্তরাজ্য সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাস্থলের পাশে আবারও বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় বিএনপি। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এক সভায় যোগ দিতে যান। এ সময় স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে সভার আয়োজন করেন দেশটির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি লেবার দলীয় এমপি কীথ ভাজ। হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বার্কো প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অভ্যর্থনা জানান। ছবি: সংগৃহীত
মাথায় কালো কাপড় বেধে আর বিভিন্ন ব্যানার হাতে যুক্তরাজ্য বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে এ নিয়ে টানা চার দিন বিক্ষোভ করল যুক্তরাজ্য বিএনপি। গতকাল রোববার তাঁরা লন্ডনের পিকাডেলির পার্ক লেইন শেরাটন হোটেলে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার সময় বিক্ষোভ করেন। এর আগে শুক্র ও শনিবার তাঁরা প্রধানমন্ত্রী যেই হোটেলে অবস্থান করছেন (পশ্চিম লন্ডনের হিলটনপার্ক লেইন) তার সামনে বিক্ষোভ করেন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে যুক্তরাজ্য বিএনপির বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে আসা ঘটনার একাধিক ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, পার্লামেন্টের সামনের রাস্তায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গন্ডগোল হয়। একপক্ষ আরেক পক্ষকে ধাওয়া দেয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
হট্টগোলের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করেছিলেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানে যাবেন সেখানেই তাঁরা বিক্ষোভ করবেন।
যুক্তরাজ্য সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এক সভায় যোগ দেন। তাঁর সম্মানে যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে ওই সভার আয়োজন করেন দেশটির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি লেবার দলীয় এমপি কীথ ভাজ। ছবি: সংগৃহীত
তবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমানের ভাষ্য, তিনি হট্টগোলের কোনো খবর জানেন না। সভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর যে গেট দিয়ে বের হওয়ার কথা ছিল সেখানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কারও কোনো সমস্যা হয়নি।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান আরও বলেন, দীর্ঘ দুই মাস বাংলাদেশে গাড়ি পুড়িয়ে, মানুষ মেরে বিএনপি কিছুই অর্জন করতে পারেনি। বরং নিজেদের জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। এখন বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে তাঁরা বিক্ষোভের নামে অসভ্য আচরণ করছে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে ওই সভার আয়োজন করেন দেশটির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি লেবার দলীয় এমপি কীথ ভাজ। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রধানমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বার্কো প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে অভ্যর্থনা জানান। যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি প্রধানমন্ত্রীর ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকসহ প্রায় ৩০জন ব্রিটিশ এমপি সভায় উপস্থিত ছিলেন। ব্রিটিশ এমপিরা প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে সভার আয়োজন করেন দেশটির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি লেবার দলীয় এমপি কীথ ভাজ। হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বার্কো প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অভ্যর্থনা জানান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রায়ণে যুক্তরাজ্যের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ওয়েস্টমিনস্টার ধাঁচের গণতন্ত্রকে অনুসরণ করছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিটি ধর্ম ও বিশ্বাসচর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.