মানুষকে মাদকের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে
প্রথম আলো ট্রাস্ট আয়োজিত মাদকবিরোধী সেরা
প্রতিবেদনের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অতিথিদের
সঙ্গে পুরস্কারবিজয়ী সাংবাদিকেরা l প্রথম আলো
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাদক প্রতিরোধে সমাজের সর্বস্তরের সচেতন মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে। মানুষকে মাদকের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
গতকাল সোমবার প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলন আয়োজিত মাদকবিরোধী সেরা প্রতিবেদন পুরস্কার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর মাদকের কারণে যে কত বাবার হাহাকার শুনি, কত মায়ের কান্না শুনি, তা বলে শেষ করা যাবে না। মাদক মানুষের মেধা ও মননকে নষ্ট কর দেয়। দেশের বাইরে থেকে আমাদের দেশে মাদক, বিশেষ করে ইয়াবা ও ফেনসিডিল ঢুকছে। আর মাদকের বাহক হিসেবে কাজ করছে রোহিঙ্গারা। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি দিচ্ছি। কিন্তু সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও অন্য অতিথিরা সাংবাদিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নেওয়া মাদকবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, প্রতিটি পরিবার আজ মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে শঙ্কিত। তাই মাদককে আইনগতভাবে মোকাবিলার পাশাপাশি সচেতনতাও বৃদ্ধি করতে হবে।
প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট মনোচিকিৎসক মোহিত কামাল বলেন, মাদক মানুষকে দানবে পরিণত করে। প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকের ভয়াবহতা রোধে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসব কার্যক্রমে প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরাও অংশ নেন।
সেরা প্রতিবেদন প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি প্রতিবেদকদের উদ্দেশে বলেন, মাদকবিরোধী প্রতিবেদনে যথাযথ তথ্য, সরেজমিন বিশ্লেষণ ও তথ্যের সপক্ষে প্রমাণ থাকতে হয়। সাধারণ আলাপচারিতা দিয়ে প্রতিবেদন হয় না। প্রতিবেদকদের এ বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের কোষাধ্যক্ষ সামন্ত লাল সেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের উপদেষ্টা চিকিৎসক আহমেদ হেলাল, ফারজানা ইসলাম, অভ্রদাশ ভৌমিক ও জিল্লুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা আজিজা আহমেদ।
যাঁরা পুরস্কার পেলেন: মাদকবিরোধী সেরা প্রতিবেদনের জন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ছয়জন পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কার হিসেবে প্রথম ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ২৫ হাজার টাকা ও তৃতীয় স্থান অধিকারী পেয়েছেন ১৫ হাজার টাকা। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীরা চেক, সনদ ও মেডেল পেয়েছেন। এবার সংবাদপত্র বিভাগে মোট ২০টি এবং টেলিভিশন ও রেডিও বিভাগে মোট ১৫টি প্রতিবেদন জমা পড়ে।
পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক উদিসা ইসলাম, দ্বিতীয় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী আনিছ এবং তৃতীয় আঞ্চলিক পত্রিকা বরিশালের কথার নিজস্ব প্রতিবেদক এ এম জুয়েল। টেলিভিশন ও রেডিও শাখায় প্রথম হয়েছেন মাছরাঙা টিভির নিজস্ব প্রতিবেদক ওবায়দুল কবির, দ্বিতীয় বৈশাখী টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক দীপু সারওয়ার এবং তৃতীয় হয়েছেন ইনডিপেনডেন্ট টিভির মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি রাজিবুল হক সুমন।

No comments

Powered by Blogger.