দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিতে ভয়াবহ ধস নেমেছে by আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

আমার স্ত্রীর মরদেহ সমাধিস্থ করার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলাম ডিসেম্বরের শেষদিকে এবং দিনসাতেক ছিলাম। তার আগে নবেম্বর মাসে তিন সপ্তাহ ঢাকায় ছিলাম।
আমার এই কয়েক দিনের ঢাকা অবস্থানেই মনে হয়েছে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং রাজনীতিতে সকলের অলক্ষ্যে একটা বড় পরিবর্তন হয়ে গেছে। এই পরিবর্তনের স্রোতে সকলেই গা ভাসিয়েছে। ধনী, দরিদ্র, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, উচ্চ, নীচ সকলেই। পেশার ক্ষেত্রে এমনকি সেবামূলক পেশা, যেমন চিকিৎসা, সাংবাদিকতা ইত্যাদির ক্ষেত্রে মূল্যবোধ ও নীতিনিষ্ঠা বহুলাংশে হারিয়ে গেছে। বিচার ও শিক্ষা ব্যবস্থাতেও দুর্নীতি ঢুকেছে। রাজনীতি তা ডান বা বাম যেদিকের হোক আদর্শ ও নৈতিকতা হারিয়েছে। ধার্মিকতা নেই, ধর্মান্ধতা বেড়েছে। অর্থের কাছে সব নীতিবোধ আদর্শ ও ধর্মবোধ বিলীন হয়ে গেছে।
ঢাকার কাছে বাড্ডায় আমার এক গরিব বন্ধু বাস করতেন। পঞ্চাশ বছর আগের কথা বলছি। ষাটের দশকের গোড়ার কথা। আমিও তখন ঢাকায়। এই বন্ধুর নাম ধরে নিন হাফিজ মোল্লা। বেশি লেখাপড়া শেখেননি। সরকারী-বেসরকারী অফিসে টুকিটাকি সাপ্লায়ের কাজ করে সংসার চালাতেন। তাতে সংসার চলত না। প্রায়শ আমার কাছে এসে টাকা ধার চাইতেন। গরিব হলেও তার নীতিবোধ প্রখর ছিল। তিনি ন্যাপ মুজাফফরের সমর্থক ছিলেন। ’৭৩-এর সাধারণ নির্বাচনের সময় তাঁকে রাস্তায় ন্যাপের নির্বাচন প্রতীক কুঁড়েঘর বানাতে দেখেছি। অর্থ ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার লোভে অন্যদলের কাছেও ঘেঁষতেন না।
আমি দেশ ছেড়ে চলে আসার পর দীর্ঘকাল হাফেজ মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। আশির দশকে শুনেছি তিনি মারা গেছেন। অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁর স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। আমার পক্ষে খোঁজখবর নেয়া আর সম্ভব হয়নি। গত নবেম্বর মাসে ঢাকার বনানীতে ইস্টার্ন রেসিডেন্স হোটেলে অবস্থানের সময় একদিন দেখি সুবেশধারী এক মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক এসে হাজির। পরনে প্যান্ট-শার্ট। কিন্তু মাথায় গোল টুপি এবং মুখের থুতনিতে কিছু দাড়ি। এখন এটা নব্য বাঙালীর সামাজিক কালচারের প্রতীক। রাজনীতির ক্ষেত্রেও কারও চেহারা-সুরত দেখে বোঝা যায় না। তিনি সেক্যুলার আওয়ামী পন্থী, না মৌলবাদী জামায়াতী।
ভদ্রলোক পরিচয় দিলেন। তিনি হাফিজ মোল্লার ছেলে নাফিজ মোল্লা। তার ছোট ভাই সবুজ মোল্লা। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। দুবাইতে থাকে। মা এখনও বেঁচে আছেন। নাফিজ ও সবুজের সঙ্গে পুরনো শহরে গে-ারিয়াতে ভাড়া বাড়িতে থাকে। নাফিজ ব্যবসা করে। সবুজ কিছুই করে না। সে রাজনৈতিক কর্মী। তার আয়-উপার্জন নাফিজের চাইতে ভাল।
নাফিজ আমার পুরনো বন্ধু হাফিজ মোল্লার বড় ছেলে (তাকে ছোটবেলায় দেখেছি) জেনে খায়খাতির করে বসতে দিলাম। হোটেলের বেয়ারাকে ডেকে চায়ের অর্ডার দিলাম। জিজ্ঞাসা করলাম তুমি কিসের ব্যবসা কর?
নাফিজের মুখে চোখে একটু বিব্রত ভাব দেখা দিল। বলল, আপনার কাছে সত্য কথা বলতে হবে। নইলে যে সমস্যায় পড়েছি, তা থেকে বাঁচব না। মাও বললেন, আপনার কাছে আসতে।
জিজ্ঞাসা করলাম, আমি যে ঢাকায় এসেছি, তা কি করে জানলে?
নাফিজ বলল, আমরা সব সময় আপনার খোঁজখবর রাখি। তাছাড়া কাগজে খবর বেরোয়।
বললাম, বেশ এবার তোমার সমস্যাটা বল।
নাফিজ মাথাটা একটু নিচু করল। বলল, আমি ফেনসিডিলের ব্যবসা করি। ভারত থেকে চোরাপথে ফেনসিডিল আসে। আমি একটা এলাকার হোলসেল এজেন্ট। খুচরো ব্যবসায়ীরা আমার কাছ থেকে মাল নেয়।
ঃ বুঝলাম অবৈধ ব্যবসা কর। এখন সমস্যা কি?
নাফিজ বলল হঠাৎ আমার একটা ট্রাকভর্তি মাল পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। আমার লোকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমাকেও গ্রেফতার করবে। মামলা দেবে কোর্টে।
জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি কি ভাবে বাঁচতে চাও?
নাফিজ বিনা দ্বিধায় বলল, ঘুষ দিয়ে। পুলিশ দশ লাখ টাকা ঘুষ চায়। আমি অত টাকা দিতে পারব না। পাঁচ লাখ পর্যন্ত দিতে পারি।
ঃ আমি কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
নাফিজ বলল, শুনেছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন আলমগীর আপনাকে বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করেন।
তাঁকে বাধা দিয়ে বললাম, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব, এই পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে তোমাকে ছেড়ে দিতে?
নাফিজ সঙ্গে সঙ্গে মাথা নেড়ে বলল, ছিঃ ছিঃ তা আমি বলছি না। ঘুষের টাকাটা আমি পুলিশকেই দেব। তারপরও পুলিশ যাতে আমাকে মামলায় না দেয়, সেজন্য মন্ত্রী মহোদয়কে একটু বলে দেবেন।
মৃদুস্বরে বললাম, নাফিজ এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তুমি হাফিজ মোল্লার ছেলে। তোমার জন্য আমি সব কাজ করতে পারি, কিন্তু এ কাজটা করতে পারব না। পাঁচ লাখ টাকা যখন ঘুষ দিতে পার, তখন দশ লাখ টাকাও পারবে। তুমি নিজেই পুলিশের সঙ্গে বিষয়টা মিটমাট করে নাও। আর ফেনসিডিলের ব্যবসা ছেড়ে দাও।
ভেবেছিলাম এরপর নাফিজ বিদায় নেবে। কিন্তু সে বিদায় নিল না। অধোমুখে বসে রইল। জিজ্ঞাসা করলাম, আর কিছু বলবে?
সে বলল, তার ভাই সবুজ এখন জেলে। সেই পরিবারের সব চাইতে বেশি আয়-উপার্জন করে।
জিজ্ঞাসা করলাম, তার অপরাধ?
নাফিজ বলল, সে কিছুদিন আগে জামায়াতের ডাকা হরতালের দিন রাস্তায় তার দল নিয়ে নেমেছিল। সে গাড়ি পুড়িয়েছে। পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গা করেছে।
বললাম, তুমি বলেছ, সে রাজনৈতিক কর্মী। জামায়াতের কর্মী তাতো বলনি।
নাফিজ বলল, সে জামায়াতের কর্মী নয়। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতের হরতাল, প্রতিবাদ দিবসে তার ডাক পড়ে। সে দলবল নিয়ে তাদের ডাকে যায়। সেজন্য বিরাট অঙ্কের টাকা পায়। এবার পুলিশের সঙ্গে মারপিট করতে গিয়ে ধরা পড়েছে।
ঃ এ কাজটা সে কতদিন ধরে করছে?
ঃ বহুকাল ধরে। আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে তেমন ভাড়াটে লোক দরকার হয় না। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতের দরকার হয়। এখন মহল্লায় মহল্লায় রাজনৈতিক কর্মী গোষ্ঠী নামে বহু দল উপদল গঠিত হয়েছে। আসলে এদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। টাকা পেলেই এরা যে কোন দলের ভাড়া খাটে। এই যে বিএনপি-জামায়াতের বিশাল বিশাল মিছিল, মিটিং দেখছেন, এর বারোআনা লোক ভাড়াটে। ঢাকার প্রতিটি মহল্লা, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও ভাড়া করা হয়। এদের ট্রেন ভাড়া। খাবারের টাকা হোটেলের টাকা এবং মাথাপ্রতি একটা মোটা টাকা মজুরি দেয়া হয়। যে দলটি তাদের ভাড়া করে। তাদের কর্মী বলে তারা পরিচয় দেয়। এভাবে আজ তারা জামায়াতের কর্মী, কাল বিএনপির কর্মী, পরশু হয়ত আওয়ামী লীগের কর্মী। টাকা পেলে এরা গাড়ি দোকানপাট ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি সব করতে পারে।
বললাম, নাফিজ তোমার বাবাতো একসময় ন্যাপ-মুজাফ্ফরের অন্ধ সমর্থক ছিলেন।
নাফিজ বলল, সেসব দিনের কথা ভুলে যান চাচা। এখন ন্যাপ-ট্যাপ, রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। এখনকার আদর্শ হলো ফেলো টাকা মাখো তেল।
কৌতূহল হলো। জিজ্ঞাসা করলাম, সবুজের মাসিক আয় কত?
ঃ তা কয়েক লাখ টাকাতো হবেই।
ঃ ঢাকার এই ধরনের সব রাজনৈতিক কর্মী গোষ্ঠীর এই ধরনের আয়?
নাফিজ বলল, সব গোষ্ঠীরই কমবেশি এই রকম আয়। তবে জামায়াতের সঙ্গে যাদের স্থায়ী সম্পর্ক তাদের আয় বেশি। জামায়াতের হাতে প্রচুর টাকা। মাদ্রাসা, মসজিদে তারা দু’হাতে টাকা খরচ করে কর্মীও রিক্রুট করে। তাছাড়া তাদের ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, এনজিও এবং হাসপাতালে চাকরির প্রলোভনও দেখানো হয়।
বললাম, এবার সবুজ ধরা পড়েছে জামায়াতকর্মী পরিচয়ে। জামায়াত তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করছে না?
নাফিজ বলল, তারা করছে, কিন্তু সুবিধা করতে পারছে না। সরকার বিশেষ করে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কঠোর দমননীতি গ্রহণ করায় জামায়াত এখন কোণঠাসা। তাদের ছোট বড় অনেক নেতা এখন বন্দী। ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ভ-ুল করার জন্য তারা বিএনপির সাহায্যে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির বিশাল প্রোগ্রাম নিয়েছিল। কিন্তু সরকারের কঠোর ব্যবস্থায় সব ভ-ুল হয়ে গেছে।
বললাম, তারা নতুন করে আবার মাঠে নামার চেষ্টা করছে না?
নাফিজ বলল, চাচা, আমি সব কথা জানি না। সবুজ জানে, সে তো এখন জেলে, তাকে ছাড়িয়ে আনার একটা ব্যবস্থা যদি করে দেন। তাহলে খুবই কৃতজ্ঞ হবো। আমার আয়-উপার্জন এখনবন্ধ। সবুজের আয়-উপার্জনও বন্ধ থাকলে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। মা তাই বললেন, আপনার সঙ্গে দেখা করতে আপনি যদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটু বলে দেন।
একটু কঠোর কণ্ঠে বললাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কি বলব, জামায়াতের একগু-াকে বিনা শাস্তিতে ছেড়ে দিতে?
নাফিজ বলল, সে জামায়াতের গু-া নয়, সে জামায়াতের কর্মী পরিচয়ে ভাড়া খাটতে গিয়েছিল। জামায়াত ও বিএনপির এ রকম অসংখ্য ভাড়াটে কর্মী আছে। হরতাল, প্রতিবাদ দিবসে তাদের মাঠে নামানো হয়।
একটু ভেবে বললাম, নাফিজ, একটা কাজ কর। সবুজকে বল, সমস্ত অপরাধ কবুল করে পুলিশকে একটা স্বীকারোক্তি দিতে। তাতে কারা তাকে টাকা দিয়েছে। গাড়ি পোড়াতে বলেছে, পুলিশের সঙ্গে মারদাঙ্গা করেছে, তার পুরো বিবরণ দিতে বল! আমি তারপর দেখব কি করতে পারি?
নাফিজ ভীত কণ্ঠে বলল, চাচা, বলছেন কি? সবুজ জামায়াতীদের দায়ী করে কোন স্বীকারোক্তি পুলিশকে দিলে সে প্রাণে বাঁচবে ভাবেন? সে জেল থেকে খালাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার রাস্তায় অথবা ড্রেনের মধ্যে তার লাশ পাওয়া যাবে। চাচা, আপনি আমার চাইতে ভাল জানেন, জামায়াত কোন রাজনৈতিক দল নয়, আসলে একটি ঘাতক বাহিনী।
সবুজকে মুক্ত করার ব্যাপারে নিজের অক্ষমতা জানালাম। নাফিজ বলল, সবুজকে মামলায় দেয়া হয়েছে। পুলিশকে ঘুষ দিয়ে তাকে হয়ত ছাড়ানো যাবে। কিন্তু কতদিন লাগবে তা সে জানে না।
তাকে বললাম, তোমাদের বাসার ঠিকানাটা দিয়ে যাও, যদি সম্ভব হয় তোমার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাব।
নাফিজ বলল, মা-ও এখন বদলে গেছেন। তিনি এখন মহল্লার মেয়েদের নিয়ে কোরান শিক্ষার ক্লাস বসান বাসায়। প্রতি সপ্তাহে এই ক্লাস বসে। কোরান শিক্ষা দানের নামে জামায়াতের মহিলা কর্মীরা এখানে আসে। তারা মেয়েদের শিক্ষা দেয়, আওয়ামী লীগ ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমনদের পার্টি। এই দলকে ভোট দেয়া হারাম। ’৭১ সালে ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ হয়েছিল। এখন যাদের যুদ্ধাপরাধী বলা হচ্ছে। তারা আসলে ভারতকে ঠেকিয়েছে। ফলে বাংলাদেশে ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষা পেয়েছে।
শুধু দেশের শহরাঞ্চলে নয়, গ্রামাঞ্চলেও ধর্ম প্রচারের নামে জামায়াতীদের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের খবর আমি পেয়েছি। কিন্তু ধর্ম নিয়ে এই রাজনৈতিক ব্যবসা প্রতিহত করার জন্য আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলের কোন পাল্টা কর্মকা- ও কর্মসূচী নেই। ফলে সমাজের ভিত বদলাচ্ছে। ধর্মান্ধতার বীজ দেশের মাটিতে ছড়িয়ে পড়ছে। পাকিস্তান আমলেও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক কালচারের যে একটি সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক চরিত্র ছিল তা যে আজ ধ্বংস হয়ে ধর্মান্ধতার কালচার সর্বাত্মকভাবে সমাজ দেহকে গ্রাস করছে তার মূল কারণ এখানেই।
দেশের গণতান্ত্রিক দলগুলো শহরের ড্রয়িংরুমে বসে গণতন্ত্র ও সেক্যুলারিজমের মাহাত্ম্য বর্ণনা করছেন, সভা, সেমিনার গোলটেবিল করছেন। মিডিয়ায় বড় বড় আর্টিকেল লেখা হচ্ছে। কিন্তু তলে তলে সমাজ দেহের একেবারে ভিত পর্যন্ত মধ্যযুগীয় ধর্মান্ধতা ও তার কালচারের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে, সেদিকে কারও নজর আছে কি? ধর্মান্ধতার কালচারের এই সংক্রমণ আমাদের রাজনীতিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। গণতান্ত্রিক দলগুলো এমনকি আওয়ামী লীগও এই কালচারের সঙ্গে আপোস করে ক্রমাগত পিছু হটছে। দেশের সংবিধানেও পড়েছে তার কালো ছায়া। তাই দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপরের স্তরে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের নামে যত হাঁকডাক চলুক, ভেতরের দিকের এই পচনশীল ব্যবস্থাটি রোধ করার উপায়টা কি?
এই প্রশ্নটা মনে নিয়েই এবার ঢাকা থেকে লন্ডনে ফিরে এসেছি। আমার পাঠকদের সবশেষে সবিনয়ে জানাই, বাড্ডার হাফিজ মোল্লা ও তার ছেলেদের কাহিনীটি কল্পিত নয়। কিন্তু তারা যাতে কোনভাবে বিব্রত না হন, সেজন্য তাদের আসল নামধাম আমি পাল্টে দিয়েছি। কিন্তু নাম পাল্টালেও সমাজচিত্রটি পাল্টাইনি।

লন্ডন, ১৫ জানুয়ারি, মঙ্গলবার, ২০১৩

No comments

Powered by Blogger.