আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

 বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রথম প্রস্তাব আসে এক ব্রিটিশ লেখকের কাছ থেকে, ১৭৭৮ সালে। সেই লেখকের নাম ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হলহেড। তিনি কোম্পানির হয়ে বাঙালীদের ইংরেজী শেখাবার জন্য 'এ গ্রামার অব দি বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ' নামক একটি বই প্রকাশ করেন।
এটিকে 'হলহেড ব্যাকরণ' বলা হয়। তখন উপমহাদেশের রাষ্ট্রভাষা ছিল ফার্সি। এ বইটির ভূমিকায় হলহেড ফার্সির পরির্বেত বাংলাকে সরকারী কাজকর্মে ব্যবহার করা হলে কোম্পানি সরকারের কি কি সুবিধা হবে, তা তুলে ধরে ফার্সির পরিবর্তে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রসত্মাব দেন। তারপর থেকে নানা চড়াই-উৎরাই পার করে হাজার বছরের সমৃদ্ধ বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায় '৫২-এর এই ফেব্রুয়ারি মাসে।
আজ শুক্রবার ৫ ফেব্রম্নয়ারি। '৫২-এর এদিনে ঢাকায় পূর্ব পাকিসত্মান মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের এক জরম্নরী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাকে পাকিসত্মানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানান। এ দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিৰোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নীলফামারীতে পালিত হয় হরতাল। খয়রাত হোসেন, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ঢাকায় জামিরাত হাইস্কুলের ছাত্ররা ধর্মঘট পালন ও মিছিল করে। এভাবেই ফেব্রম্নয়ারির দিন যত পার হয়, আন্দোলন তত বেগবান হয়। ইতিহাসের এ গৌরবান্বিত আন্দোলনগুলো দেশ ও বিশ্বের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লৰ্যে ফেব্রম্নয়ারি মাস এলেই শুরম্ন হয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বইমেলার মূলমঞ্চে 'ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকথা ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৩' শীর্ষক আলোচনায় 'ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস' বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. আহমদ রফিক। কবি আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন সাঈদ হায়দার, অধ্যাপক আহমদ কবির ও অধ্যাপক সাদেকা হালিম। এছাড়া ভাষার মাস স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে পথনাটক উৎসব ও বায়তুল মোকারম প্রাঙ্গণে চলছে ইসলামিক বইমেলা। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় প্রেসকাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে 'রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ' বইয়ের প্রকাশনা উৎসব। প্রধান অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমণি। বইটি লিখেছেন গবেষক এমআর মাহবুব।

No comments

Powered by Blogger.