ইতিহাসের চোখ by মুহম্মদ শফিকুর রহমান

ইতিহাসের স্রষ্টাকে হত্যা করে ইতিহাসটাকে পাল্টে দেবে বলে উদ্ভট চিন্তা মাথায় নিয়ে যারা ভেবেছিল ইতিহাসের চোরাগলি ধরে পার পেয়ে যাবে ইতিহাসই তাদের বিরুদ্ধে চরম প্রতিশোধ নিয়েছে। জাতির পিতার খুনীদের ফাঁসি দিয়েছে।
এর মাধ্যমে একদিকে জাতি গ্লানিমুক্ত হয়েছে তেমনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে যারা আইনের শাসনের দণ্ডটকে বন্দী করেছিল তাদের মুখেও কালিমা লেপে দিয়েছে। আর এ জন্যই সমগ্র জাতি যখন আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করছে, মসজিদ-মন্দির, মঠ-গির্জায় দোয়া প্রার্থনা করছে, গ্লানিমুক্তির আনন্দ করছে তখনো ইতিহাসের খলনায়করা কোন কথা বলছে না। মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। কিন্তু জাতি ব্রটোসদের চেনে।
আমরা পুরোপুরি স্বস্তি পেয়েছি বা গ্লানিমুক্ত হয়েছি এমনটি ভাবা ঠিক হবে না। যেদিন জেল হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ ২৩ জন হত্যা ও শেখ হাসিনাসহ তিন শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকমর্ীকে আহত করা, এসএএমএস কিবরিয়া হত্যা, আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা, যশোরে ও রমনা বটমূলে উদীচীর অনুষ্ঠানে হত্যা, পল্টনে ও বায়তুল মোকাররমে বাম কমর্ী হত্যা করে যারা ন্যায়-ধর্ম-মানবতাকে হত্যা করেছে তাদেরও আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। যারা এখনও বিদেশে পালিয়ে আছে তাদেরও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে এনে দণ্ড কার্যকর করতে হবে। যারা চক্রান্তকারী, যারা হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগী, যারা অর্থ-অস্ত্রের জোগানদার তাদেরও চিহ্নিত করে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। বিচার করতে হবে যুদ্ধাপরাধীদের। আমি বিশ্বাস করি সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন একে একে এসব প্রশ্নের জবাব জাতি পাবে। ইতিহাসের চোখ আর আইনের প্রসারিত হস্ত কাউকে মা করবে না।
জানতাম বিচার একদিন হবেই। এ যে বিধির বিধান। জীবদ্দশায়ই দেখে গেলাম এজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করছি। শুকরিয়া আদায় করছি এ জন্য যে, তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে এই জাতীয় দায়িত্ব পালনের শক্তি ও সাহস দিয়েছেন। বাংলার যে কোটি কোটি মানুষ যারা ভোট দিয়ে সমর্থন দিয়ে শেখ হাসিনাকে দুই-দুইবার প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে এই কার্য সম্পাদনে নৈতিক-সাংবিধানিক অধিকার ও মতা দিয়েছেন তাদের জীবন সুন্দর হোক নিরাপদ হোক এই দোয়া করি। দেখেছি মোশতাক-জিয়া-এরশাদ-খালেদা-নিজামীরা যেভাবে জনতাকে জিম্মি করে এতদিন বিচার কার্য হতে দেয়নি সেই প্রতিবাদী জনতাই আজ তাদের গালে চরম চপেটাঘাতটি দিয়ে দিল। যার যা প্রাপ্য।
মনে পড়ে অতীত দিনের কথা। কত ঘটনা কত বেদনা মানসপটে ভাসছে। বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখছিলাম। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। যতই দেখছি মনে হয়েছে বাঙালীর এমন সুন্দর প্রতিবিম্ব আর তো দেখলাম না। দেখবও না হয়ত। দুই দশক আগে এক নিবন্ধে লিখেছিলাম-ছ'ফুট দীর্ঘাঙ্গী ফর্সা দোহারা গড়ন, ব্যাক-ব্রাশ করা মাথা ভর্তি চুল, মোটা গোঁফ, প্রশস্ত কপাল, কালো মোটা প্রেমের চশমার নিচে ভাসা ভাসা স্বপ্নময় দুটি চোখ, সফেদ পাঞ্জাবির ওপর কালো মুজিব কোট এবং একদিকে যেমন বুকের ভেতর বাংলার শিশিরের মতো কোমল হৃদয় অন্যদিকে তেমনি বাংলা ও বাঙালীর প্রশ্নে রাজপথে, বক্তৃতা মঞ্চে, পার্লামেন্টে, রাষ্ট্রীয় সভায়, আন্তর্জাতিক সম্মেলনে চৈত্রের কাদামাটির মতই কঠিন আপসহীন। যে মহানায়ক জাতিকে এমন প্রতিবিম্ব উপহার দিলেন, দার্শনিকের মতো ভবিষ্যতের পথ দেখালেন, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও জীবনের জয়গান গাইলেন, সেই প্রিয় মানুষটিকে হত্যা করতে পারল ঘাতকরা! এদের কি বলব? এদের পরিচয় কি? এরা কি বাঙালী? এরা মানুষ? এরা কি ধর্মের? এরা কি বর্ণের? _না, এরা বাঙালী নয়, এরা মানুষ নয়। এরা ধর্মের নয়, এরা বর্ণের নয়, এরা মানুষের অবয়বে অন্য কিছু, অন্য কোন জন্তু।
মৃতু্য অমোঘ। আমরা কেউ পৃথিবীতে থাকব না। কিন্তু কিছু মৃতু্য যা ভীষণ কষ্ট দেয়। অস্বাভাবিক হলে তো মেনে নেয়া যায় না । যেমন বঙ্গবন্ধু হত্যা কেউ মেনে নিতে পারেনি, পারবে না। যেমন পারেনি শেখ রাসেলেরও। শেখ কামালেরও। বঙ্গবন্ধুর মতই রাসেলকেও দূর থেকে দু'একবার দেখেছি। কত বয়স? নয় কি দশ। কখনও দেখেছি স্কুল পোশাকে, কখনও বঙ্গবন্ধু ভবনের লনে দুরন্ত শিশু, কখনও ব্যাট হাতে ৩২ নং সড়কে। ওকে আদর করা যায়, ওর সঙ্গে জোরে কথাও বলা যায় না। শেখ কামালকে কাছে থেকে দেখেছি। কি টগবগে মেধাবী তরুণ। ছ'ফুটের কাছাকাছি হালকা-পাতলা গড়ন, ব্যাক-ব্রাশ করা চুল, কালো মোটা ফ্রেমের চশমার ভেতর তীক্ষ্ম দুটি চোখ আড়াল করতে পারত না। কাসে, পরীার টেবিলে, খেলার মাঠে, নাট্যমঞ্চে, রাজপথে, বক্তৃতা মঞ্চে, মিছিলে, মুক্তিযুদ্ধে, সংগঠনে কি দৃঢ় প্রত্যয়ী। পিতার মতই স্বপ্ন দেখতে জানতো, স্বপ্ন দেখাতে পারত।
তখন সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নতুন সমাজ নতুন অনুভূতি। আমরা বিদায়ী। শেখ কামাল সম্ভবত ২য় বা ৩য় বর্ষে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংস্কৃতি অঙ্গন মুক্তিযুদ্ধ ফেরত ছাত্রছাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত। এখানে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, ওখানে নাটকের মহড়া। তখন কবিতা, গদ্য সৃষ্টিরও স্বর্ণযুগ। মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে সৃজনশীল বাংলা সাহিত্য, বিশেষ করে বাংলা কবিতায় রবীন্দ্র-নজরুল উত্তর সুফিয়া কামাল, জসিম উদ্দীন, শামসুর রাহমান, আল-মামুদ, সাইয়িদ আতিকুল্লা, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, বেলাল চৌধুরী, আবদুল মান্নান সৈয়দ প্রমুখের বলয় ভেদ করে ষাটের দশকের শেষার্ধে নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, আসাদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির, রফিক আজাদ, হেলাল হাফিজ, আবুল হাসান, ফরহাদ মাযহার, মুহম্মদ নূরুল হুদারা এক বিশাল ভাণ্ডার গড়ে তুলেছিলেন। গদ্যে তারও আগে থেকে আবুল ফজল, আনিসুজ্জামান, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, শওকত ওসমান, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, আবুল কালাম শামসুদ্দিন, আলাউদ্দিন আল আজাদ, সৈয়দ আলী আহসান, হাসান আজিজুল হক এবং শিল্পকলায় জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান, কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন্নবী, কালিদাস কর্মকাররা তা কানায় কানায় ভরে দিয়েছিলেন।
আরও সমৃদ্ধ ও পুষ্ট হলো এই দশকে মুনীর চৌধুরী, সৈয়দ শামসুল হকদের বৃত্ত ভেদ করে সেলিম আল দীন, নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আসাদ্দুজামান নূর, ম. হামিদ, সৈয়দ হাসান ইমাম, হুমায়ূন আহমেদ, মামুনুর রশীদ, রইসুল ইসলাম আসাদ, আলী যাকের, আল মনসুররা সৃজনশীল গণমানুষের নাটক সৃষ্টির বন্যা বইয়ে চলছিলেন। শেখ কামালকে দেখেছি একদিকে আবাহনী ক্রীড়াচক্র গড়ে তুলতে আবার টিএসসির মঞ্চে অভিনয় করতে, নাটকের পৃষ্ঠপোষকতা করতে। নিজে সেতার বাজাতে জানতেন, গড়ে তুললেন স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী।
রাজনীতিতে শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদর্ী, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, কমরেড মনি সিং, অধ্যাপক মুজাফ্ফর আহমদরা নেতৃত্বের যে মিনার গড়ে তুলেছিলেন, তাকে ছাপিয়ে বেরিয়ে এলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এত দ্রুত নেতৃত্বের শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা ইতিহাসে বিরল ঘটনা। তাকে কেন্দ্র করে অর্থাৎ তারই পেছনে হাঁটতে হাঁটতে সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর মিছিল থেকে বেরিয়ে এলেন শেখ ফজলুল হক মণি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, বেগম সাজেদা চৌধুরী, মোহাম্মদ ফরহাদ, সাইফুদ্দিন আহমদ মানিক, রাশেদ খান মেনন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, কাজী আরেফ আহমেদ, আবদুল মান্নান ভূঞা, আবদুর রউফ, কাজী জাফর আহমেদ, খালেদ মুহম্মদ আলী, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, হাসানুল হক ইনু, মমতাজ বেগম, মালেকা বেগম, শেখ হাসিনা, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নূহ-উল-আলম লেলিন, ওবায়দুল কাদের, দীপা দত্ত, রাফিয়া আখতার ডলি, আয়েশা খানমরা। এ যেন ভরা চাঁদের চারপাশে উজ্জ্বল তারকারাজি। বস্তুত সাতচলি্লশের পর স্বাধীনতার স্বপ্ন ভরা সেই উত্তাল দিনগুলোতে পদ্মা-যমুনা-গৌরী-মেঘনার অববাহিকায় হাজার বছরের কবিতা, গদ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, শিল্পকলা, নাট্যকলা তথা সামাজিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক জাগরণের যে কালজয়ী বিপ্লব ঘটেছিল এবং একাত্তরে যার সফল পরিণতি শেখ কামাল ছিলেন সেই বিপ্লবের ইতিহাসের বরপুত্র।
ওঁর মনটাও ছিল বাবার মতই কোমল। একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে। তখন বাংলা কবিতাঙ্গণে ঝাঁকে ঝাঁকে পায়রা। এরই মধ্যে একজন কবি এলেন ক্যাম্পাসে, সবার দৃষ্টি কাড়লেন। নাম সাফদার সিদ্দিকী। ছালার চট দিয়ে তৈরি পায়জামা কোর্তা পরতেন। চরম অগোছালো, বোহেয়ান। আমরা তখন ক্যাম্পাসে বিদায়ী। এক সকালে শরীফ মিয়ার ক্যান্টিনে বসে চা খাচ্ছিলাম। ছিলেন মহাদেব সাহা, রফিক আজাদ। সাফদার সিদ্দিকী তার চিরাচরিত বিশেষ সিগারেটে ধোঁয়া দিতে দিতে ক্যান্টিনে ঢুকলে একজন বলল, এই যে 'গাঁজাখোর'। সাফদার বলল, খাচ্ছি তো কি হয়েছে। এই বলে বঙ্গবন্ধু ও তার সন্তানদের সম্পর্কে অহেতুক অপ্রাসঙ্গিক আপত্তিকর একটা মন্তব্য করে বসল। মুহূর্তেই সামনে তাকিয়ে দেখলাম ছাত্রলীগের কয়েকজন কমর্ী তার দিকে ক্রোধ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। দেরি না করে সাফদারের হাত ধরে বললাম চলো বাইরে যাই। মহসিন হল ছাত্রলীগের সেই জুনিয়র সদস্য (সম্ভবত নাম নজরুল) রীতিমত আমার হাঁটু ধরে বলল শফিক ভাই ওকে নিয়ে যাবেন না, ওকে আজ পেট ভরে 'গাঁজা' খাওয়াব। না, বলে আমি ওকে নিয়ে পাবলিক লাইব্রেরীর (তখন ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীর পাশেই ছিল পাবলিক লাইব্রেরী) গেটে একটা রিকশায় তুলে দিয়ে বললাম, আজ আর ক্যাম্পাস এসো না। আমি ডিপার্টমেন্টের দিকে চলে যাচ্ছিলাম। রফিক আজাদ, মহাদেব সাহা দৌড়ে এসে বললেন, 'গুর'ি সাফদারকে কয়েকজন আটকেছে (তখন আমরা এ জগতের একজন আরেকজনকে গুরু বলে ডাকতাম)। বুঝতে বাকি রইল না, সফদারের ভাগ্যে আজ কি ঘটতে যাচ্ছে। ক্যান্টিনের সামনে গিয়ে দেখি ২৫/৩০ জন তাকে ঘিরে রেখেছে আর সে তখনো ধোঁয়া ছাড়ছে। আমার কিছু করার ছিল না। কি করব ভাবছিলাম এমন সময় দেখলাম শেখ কামাল কলাভবনের বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। তাকে ইশারা করতেই কাছে এসে সালাম দিয়ে বললেন কি শফিক ভাই? ওকে একান্তে ঘটনাটা বললাম। কামাল বলল দাঁড়ান, আমি ব্যবস্থা করছি। বলে দুটি ছেলেকে পাঠিয়ে আমাকে নিয়ে তার গাড়িতে উঠলেন ও ড্রাইভিং সিটে আমি পাশে। গাড়ি নিয়ে ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরীর সামনে আসতেই ছেলে দু'টি সাফদারকে নিয়ে এসে গাড়ির পেছনের সিটে বসিয়ে দিল। কামাল গাড়ি চালিয়ে সোজা প্রেসকাব সামনে এসে সাফদারের হাতে পঞ্চাশটি টাকা দিয়ে বলল ক'দিন আর ক্যাম্পাসে যাবেন না। একটি বারের জন্যও প্রশ্ন করল না কেন এই বাজে কথা বললেন। পরে জেনেছিলাম প্রথমবার আমি রিকশাওয়ালার হাতে ২ টাকা দিয়েছিলাম নিউ মার্কেটে নামিয়ে দিতে আর সাফদারের হাতে ৫ টাকা দিয়ে বলেছিলাম এটা তোমার খাবার জন্য। নিউ মার্কেটের কথা এ জন্য বলেছিলাম যে তখন নিউমার্কেটের 'মনিকো' রেন্টুরেন্টেও কবিদের জমজমাট আড্ডা হতো।
আরেকবার তখন উত্তরবঙ্গে দুর্ভি চলছে। এই প্রোপটে রচিত নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে টিএসসি অডিটরিয়ামে। ক্যাম্পাস ছেড়ে দিয়েছি তবুও নস্টালজিয়ায় তাড়িয়ে মাঝে মধ্যে ক্যাম্পাসে নিয়ে যায়। সম্ভবত আল-মনসুরের লেখা নাটক হচ্ছিল। ছালার চট, ছেঁড়া-তালি দেয়া পোশাকে নারী-পুরুষের ভুখা মিছিলের দৃশ্য ছিল নাটকে। দেখলাম মিছিলের পুরোভাবে সানকি হাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে শেখ কামাল। তখন বঙ্গবন্ধুর সরকার রাষ্ট্র মতায়। আর তারই সন্তান ভুখা মিছিল করছে। অবাক হবার কথা, হইনি, কারণ তার রাজনৈতিক শিা।
শেখ কামাল সম্পর্কে কথাগুলো বলছি এ জন্য যে, তাকে নিয়ে খলনায়কদের মুখে নির্লজ্জ মিথ্যা বলতে শুনেছি, এমনকি ওরা ইতিহাসের বরপুত্রকে এক অশিতি অর্থলোভী বিতর্কিত যুবকের কাতারে দাঁড় করানোর অপচেষ্টাও কম করেনি, কিন্তু ইতিহাসের অমোঘ নিয়মেই অাঁস্তাকুড়ে নিপ্তি হয়েছে। আজ যখন সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার হলো তখনও সেই অপশক্তি নীরব। দেশব্যাপী মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে, মসজিদ-মন্দির-মঠ-গির্জায় দোয়া প্রার্থনা করছে তখনও তাদের প্রতিক্রিয়া নেই। ওদের করুণা করা ছাড়া আর কি বলা যায়।
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

No comments

Powered by Blogger.