নাব্য বাড়াতে প্রধান চারটি নৌরুটে শীঘ্রই ড্রেজিং- ঢাকা-দিল্লী যৌথ ঘোষণার আওতায় এই উদ্যোগ by সোহেল রহমান

 নৌপথের নাব্য বাড়াতে দেশের প্রধান চারটি নৌরুটে শীঘ্রই ড্রেজিং শুরু হচ্ছে। ঢাকা-দিল্লী যৌথ ঘোষণার আওতায় গুরুত্বপূর্ণ এই নৌরম্নটগুলোতে ড্রেজিং করা হবে। এছাড়া সংস্কারের মাধ্যমে আশুগঞ্জ বন্দরকে মডেল নদীবন্দর হিসাবে গড়ে তোলা হবে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় দু'দেশের মধ্যে নৌপথে পণ্য পরিবহনের জন্য প্রটোকল অব ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট এ্যান্ড ট্রেড-এর আওতায় উভয় দেশ পণ্য পরিবহনের সুবিধা পায় প্রথম পর্যায়ের এমন নৌরুটগুলোতে ড্রেজিং কাজ করা হবে। সূত্র জানায়, গত মাসের শেষ দিকে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ প্রতিনিধি দল বরিশাল, সিলেট, সিরাজগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ_ এই চারটি নৌপথ প্রথম পর্যায়ের ড্রেজিংয়ের জন্য চিহ্নিত করে। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে দু'দেশের মধ্যে ৫০ দফা যৌথ ঘোষণা স্বারিত হয়। যৌথ ঘোষণায় ভারত বাংলাদেশের নৌপথের উন্নয়নে ১শ' কোটি ডলার ঋণ সাহায্য দেয়ার অঙ্গীকার করে।
সূত্র জানায়, যৌথ ঘোষণার আলোকে নদী খনন ও নৌপথের উন্নয়নে প্রাথমিক জরিপের ল্যে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল জানুয়ারির শেষ দিকে বাংলাদেশ সফরে আসে। ইন্ডিয়ান ইনল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অথরিটি (আইডবিস্নউটিএ) সদস্য প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে উচ্চ মতাসম্পন্ন এই জরিপ দলের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের নৌ পরিবহন, পানি সম্পদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। দলটি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং আশুগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল ও সিরাজগঞ্জ পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে ভারতীয় প্রতিনিধিদলটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকতর্াদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নদী খননেন বিষয়ে তিনটি সুনির্দিষ্ট প্রসত্মাব দিয়েছেন। ভারতীয় সহায়তাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ কিভাবে নৌপথের উন্নয়ন করতে পারে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তা জানতে চেয়েছেন। তাঁরা ভারতের তত্ত্বাবধানের সরাসরি নদী খনন অথবা ড্রেজারসহ খননের যন্ত্রপাতী দেয়ার কথা জানিয়েছেন। এ েেত্র বাংলাদেশকে নয়টি ড্রেজার দেয়া হবে বলে জানা গেছে। নদীর খনন কাজের জন্য ভারতীয় প্রতিনিধিদল নিজেরা ড্রেজার সরবরাহ কিংবা তৃতীয় কোন দেশ থেকে ড্রেজার দেয়ার প্রসত্মাব দিয়েছেন। সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে একটি জরিপ রিপোর্টের ভিত্তিতে বাংলাদেশের নদীগুলোর নাব্য বৃদ্ধি এবং বেশ কয়েকটি গুরম্নত্বপূর্ণ পয়েন্টে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে সহায়তা করার জন্য ভারত সরকারকে প্রসত্মাব দেয় বাংলাদেশ। গত বছরের গোড়ার দিকে এই প্রসত্মাবের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে রাজি হয় ভারত। সম্প্রতি ঢাকা-দিলস্নী যৌথ ঘোষণার বিষয়টি অনত্মভর্ুক্ত করা হয়।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার মতা গ্রহণের পর ২০০৯ সালের মার্চ মাসে দু'দেশের মধ্যে দু'বছর মেয়াদী নৌ প্রকোটল নবায়ন করা হয়। বাংলাদেশ-ভারত নৌ-প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মংলা ও সিরাজগঞ্জ নৌবন্দরে পোর্ট অব কল সুবিধা পায় ভারত। অন্যদিকে ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, করিমগঞ্জ ও পান্ডুতে পোর্ট অব কল সুবিধা পেয়ে থাকে বাংলাদেশ। এর বাইরে এখন থেকে আশুগঞ্জে ভারত এবং আসামের শীলঘাটে বাংলাদেশ পোর্ট অব কল সুবিধা পাবে। প্রটোকল অনুসারে দুই দেশে একে অপরের আটটি রম্নটে পণ্যবাহী কাগের্াকে ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে থাকে। রম্নটগুলো হলো কলকাতা-হলদিয়া-রায়মঙ্গল-চালনা-খুলনা-মংলা-কাউখালী-বরিশাল-হিজলা-চাদপুর-নারায়ণগঞ্জ-আরিচা-সিরাজগঞ্জ-বাহাদুরাবাদঘাট-চিলমারী-পান্ডু, একইভাবে রম্নটটি পান্ডু-চিলমারী থেকে চালনা হয়ে হলদিয়া থেকে কলকাতা পর্যনত্ম বিসত্মৃত। আরেকটি রম্নট কলকাতা-হলদিয়া-রায়মঙ্গল-মংলা-বরিশাল-চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ-ভৈরববাজার-আজমিরীগঞ্জ-শেরপুর-ফেঞ্চুগঞ্জ-জকিগঞ্জ-করিমগঞ্জ। একইভাবে রম্নটটি করিমগঞ্জ থেকে কলকাতা পর্যনত্ম বিসত্মৃত। আরেকটি রম্নট রাজশাহী-গোদাগাড়ি-ধুলিয়া। একইভাবে রম্নটটি ধুলিয়া থেকে রাজশাহী পর্যনত্ম বিসত্মৃত। শেষ রম্নটটি করিমগঞ্জ-জকিগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ-আজমিরিগঞ্জ-ভৈরববাজার-চাঁদপুর-আরিচা-সিরাজগঞ্জ-বাহাদুরাবাদঘাট-চিলমারি-ধুবরি-পান্ডু। একইভাবে রম্নটটি পান্ডু থেকে আরিচা হয়ে করিমগঞ্জ পর্যনত্ম বিসত্মৃত।

No comments

Powered by Blogger.