যে কোন মুহূর্তে ঢাবি মলচত্বরে ছাত্রলীগের ৩ গ্রুপে বন্দুকযুদ্ধ- লাশের জন্য পেয়েছে ২০ লাখ টাকা কয়েক নেতার বিশেষ ভবন কানেকশনের ভিডিও ফুটেজ by মামুন-অর-রশিদ

ছাত্রলীগের তিনটি গ্রম্নপ রণ প্রস্তুতি নিয়েছে। যে কোন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্ব্বর এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের শঙ্কা রয়েছে। সংগঠনের বর্তমান এবং সাবেক নেতাদের গ্রম্নপ তিনটি আধিপত্য বিসত্মারের লড়াইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করেছে।
টেন্ডার কমিশনের কোটি টাকা ভাগের অমিল গ্রম্নপগুলোকে যুদ্ধংদেহী অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। এফ রহমান হলের ঘটনা ছিল রণ প্রস্তুতির ট্রায়াল বা মহড়া। ছাত্রলীগের অভ্যনত্মরীণ বিরোধ, প্রশাসনের একটি চিহ্নিত অংশের বিশেষ ইন্ধন, ৰমতাসীন একাধিক মহলের সম্পৃক্ততা, সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনের অঢেল অর্থের প্রলোভনসহ চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে ক্যাম্পাস স্থিতিশীলতার বিরম্নদ্ধে। ছাত্রলীগ এখন মহাজোট সরকারের কাঁধে সবচেয়ে বড় 'বিষ ফোঁড়া'।
সমালোচকদের অনেকে ব্যঙ্গ করে ছাত্রলীগকে 'টেন্ডারলীগ' বলছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের অভ্যনত্মরীণ সংঘর্ষে মেধাবী ছাত্র আবু বকর নিহত হওয়ার পরদিনই ছাত্রলীগের দু'গ্রম্নপের সংঘর্ষে কুমিলস্নার মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগের দিন ঢাকা কলেজের শিৰকরা ছাত্রলীগের ভর্তিবাণিজ্যের বিরম্নদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধানত্ম ছাড়া ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করা ভুক্তভোগী সকল প্রতিষ্ঠানের জন্যই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তবে প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেৰণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের যাবতীয় কাজ সেনাবাহিনীর প্রকৌশল দফতরকে দিতে পারে বলে দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

২০ লাখ টাকার লেনদেনে লাশ
সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের পরস্পরবিরোধী তিনটি গ্রম্নপের মধ্যে মূল গ্রম্নপটির নিয়ন্ত্রণ সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের হাতে। এৰেত্রে বিপুল অঙ্কের লেনদেনের কথা ক্যাম্পাসে ভাসছে। কথিত আছে, ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের মিশন বাসত্মবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতার কাছ থেকে ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন। এ ২০ লাখ টাকাই এফ রহমান হলের সাধারণ ছাত্রের লাশ হওয়ার অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে কিনা- সে প্রশ্নও রয়েছে। গোয়েন্দারা সরকারের শীর্ষ পর্যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে তাদের রিপোর্ট দিয়েছে। ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতার সঙ্গে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতার 'আন্ডারহ্যান্ড রিলেশনই' এখন টক অব দ্য ক্যাম্পাস। অবশ্য বিএনপি-জামায়াত ৰমতায় থাকতে এ শীর্ষ নেতৃত্ব বিশেষ ভবনের যুবরাজের পদধূলি নেয়ার এবং বিপুল অর্থ গ্রহণের ভিডিও ডকুমেন্টও নাকি গোয়েন্দারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সরবরাহ করেছিল। বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে যারা টেন্ডার কমিশনের জন্য ক্যাম্পাসে রক্তৰয়ী সংঘর্ষ ঘটিয়েছে, অপহরণসহ নানা অপকর্মের দায়ে শেষ পর্যনত্ম সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হয় এবং জোট আমলে চুটিয়ে ব্যবসা করেছে তারাই আবার ক্যাম্পাসে আধিপত্য কায়েমের জন্য ছাত্রলীগে উপদলীয় কোন্দল তৈরির কৌশল অবলম্বন করছে। এ কৌশলেই চিহ্নিত মহলটি ইতোমধ্যে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করেছে। এফ রহমান হলে আবু বকর হত্যার মূল অনুঘটক সাইদুজ্জামান ফারম্নক অতীতে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তারা ছাত্রদলের হয়ে কাজ করতেই পারে। ছাত্রলীগের বর্তমান তৎপরতা দেখে ক'দিন আগে জামায়াত নেতা নিজামী বলেছেন, 'সরকারের বিরম্নদ্ধে আমাদের আন্দোলন করতে হবে না। ছাত্রলীগই সরকারকে টেনে নামাবে।'

বাবু বাহিনীর প্রস্থান
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ৰমতায় আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম টেন্ডার ছিল ২৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত তরম্নণ শিৰকদের আবাসিক ভবন। তখন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাইনুদ্দীন বাবু ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির হাতেগোনা পাঁচ-সাত নেতাকে নিয়ে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তারা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৭৫ লাখ টাকা বিট মানিতে সমঝোতায় পৌঁছে। নির্ধারিত প্রাক্কলিত অর্থেই তারা ঐ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার কথা চূড়ানত্ম করে। টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে ঐ প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিলে বাবু গ্রম্নপকে ৭৫ লাখ টাকা দেয়া হবে। এ টাকার সিংহভাগ ভবিষ্যতে ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু অস্ত্র সরবরাহের জন্য ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হয়। বিট মানির বাকি অর্থ বাবু সবাইকে ভাগ করে দেবেন বলে কথা হয়। কিন্তু বিধি বাম। টেন্ডার তারা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। প্রশাসনের সক্রিয়তায় আরও দু'টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এবং লেস দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান কাজ নিয়ে নেয়। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল দফতরের ধর্মীয় লেবাসধারী এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর নজিরবিহীন দুর্নীতির কারণে আরেকটি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়। নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানটিতে নিশ্চিত কাজ পাইয়ে দিতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ বেশি হওয়ার অন্যতমও শর্ত ছিল কাজ এক্সটেনশন এবং বাজেট রিভাইসড করা হবে। ইতোমধ্যে সেই প্রচেষ্টা চলছে। এ প্রকৌশলী নির্মাণকাজ শর্ত মোতাবেক না হওয়ার আগেই ঠিকাদারকে আংশিক বিল দেয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে; তবে তা খুবই কূটকৌশলে। যে কারণে কোন অপকর্মের সাৰ্য-প্রমাণ তিনি রাখেননি। এ প্রকৌশলীর হয়ে এক সহকারী প্রকৌশলী ছাত্রলীগ ক্যাডারদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের টেন্ডারবাজির পথ চিনিয়েছেন। একই সঙ্গে বিনা পুঁজিতে লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা আয়ের পথ দেখিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এভাবে জনৈক প্রকৌশলী প্রথম টেন্ডারের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। নানামুখী তৎপরতায় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ তখন সম্ভব না হওয়ায় বাবু ক্যাম্পাসের এ টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ মহড়া থেকে সরে যায়।

শফিক বাহিনীর
আধিপত্য বিসত্মারের চেষ্টা
বাবুর নীরব প্রস্থানে এবার আবির্ভাব ঘটে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত এবং ছাত্রলীগ মুহসীন হল শাখা সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কৃত শফিক। শফিকের আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ার সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অনেক পুরনো। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে সে নিজের আসল পরিচয়ে চুটিয়ে ব্যবসা করেছে। বর্তমান সরকারের সময় প্রথম টেন্ডারে ধাক্কা খেয়ে বাবু পিছু হটার পর ক্যাম্পাসের সূর্যসেন, এফ রহমান এবং মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েক নেতার কাঁধে ভর করে টেন্ডারবাজি কব্জা করতে নানা প্রক্রিয়ায় এগুতে থাকে শফিক। এ প্রক্রিয়ার ট্রায়াল পর্বেই এফ রহমান হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং আবু বকর নিহত হয়। শফিক মোহাম্মদপুর এলাকার আওয়ামী লীগদলীয় সাবেক এক সংসদ সদস্যের পুত্রকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তিন কর্তাব্যক্তির একজনের সঙ্গে কথা বলে গেছেন। প্রশাসনের এ কর্তা ঘুষ-দুর্নীতিবিরোধী হওয়ায় খুব একটা ভাগ পায়নি শফিক। শফিক তখন ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির দু'শীর্ষ নেতার একজনের কাঁধে ভর করে এগুনোর চেষ্টা করে। সেখানে শফিক সফল হওয়াতেই ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ দু'নেতা টেন্ডারবাজদের কাছ থেকে নির্ধারিত অঙ্কের কমিশন পেতে ক্যাডার গ্রম্নপগুলোর তৎপরতায় প্রচ্ছন্ন সমর্থন দিতে থাকে। তবে এৰেত্রে দু'শীর্ষ নেতার মধ্যে একজন সর্বত্র 'মালের ধান্ধা' করেন বলে ক্যাম্পাসে প্রচার রয়েছে। এছাড়া ছাত্রলীগের সর্বশেষ বিদায়ী কমিটির শীর্ষ নেতা, ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির সাবেক এক নেতা এ শফিক বাহিনীকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করছে। মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সূর্যসেন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হায়দার তুহিন বিপুল অর্থের বিনিময়ে শফিকের হয়ে কাজ করছে। শফিক ক্যাম্পাসে আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা শুরম্নর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রকে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। শেষ পর্যনত্ম শফিক আধিপত্যের লড়াইয়ে টিকে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তার খেসারত দিতে হবে।

সাইফুল বাহিনীর উত্থান
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে অস্ত্রের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ক্যাম্পাসে রমরমা টেন্ডার বাণিজ্যে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভাগ না পেয়ে নিজেই একটি গ্রম্নপ তৈরি করেন। তার হয়ে ক্যাম্পাসে কাজ করছে জিয়া হলের সভাপতি রিফাত হোসেন জিকু এবং বর্তমানে কারানত্মরীণ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি সাইদুজ্জামান ফারম্নক। সাইফুলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সভাপতির এক ধরনের সমঝোতা হয়। এর প্রেৰিতে ওই দুই সভাপতি কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুসারী হয়ে যায় হঠাৎ করেই। এফ রহমান হলে দু'গ্রম্নপের সংঘর্ষ এবং সংঘর্ষে আহত আবু বকরের মৃতু্য ও ফারম্নকের গ্রেফতারের পর কিছুটা বেকায়দায় আছে এ গ্রম্নপটি। তবে এখন আবারও গ্রম্নপ গোছানোর কাজ শুরম্ন হয়ে গেছে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতার বিরম্নদ্ধে হল কমিটি নিয়ে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ধমক দিয়ে ফারম্নককে এফ রহমান হলের সভাপতি বানান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির দু'নেতার একজনের বিরম্নদ্ধে সকল টেন্ডারের বখরা আদায় এবং বণ্টনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির শীর্ষ দু'নেতার মধ্যে যিনি বরিশালকেন্দ্রিক তিনি ক্যাম্পাস উত্তপ্তকে করতে প্রশাসনের একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনও পাচ্ছেন। যদিও এসব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের কলকাঠি নাড়ছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের একাধিক গ্রম্নপসহ ৰমতাসীন মহল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জিম্মি করে সকল টেন্ডার তাদের একক নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে গ্রম্নপগুলো।

বিভিন্ন টেন্ডারের কমিশন
ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা নতুন করে ঠিকাদারি শুরম্ন করেছেন। তিনি কুয়েত মৈত্রী হলের দেয়াল সংস্কারের ৮ লাখ টাকার কাজ পেয়েছেন। শতকরা ১০ ভাগ হারে তাঁকে এ কাজের জন্য দিতে হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। এ টাকা ভাগ হয়েছে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে। আর এ টাকা বণ্টনের দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকাদার সমিতির এক নেতা। এভাবে লাখ টাকার কাজ থেকে কোটি কোটি টাকার কাজের কমিশনের অর্থের ভাগ বণ্টনে বৈষম্যই ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করছে। এ মুহূর্তে ক্যাম্পাসে জগন্নাথ হলের ২০ কোটি টাকার কাজ চলছে। এখান থেকে অর্ধকোটি টাকার কমিশন নেয়া হয়েছে। এছাড়া টুইন টাওয়ারের ২০ কোটি টাকা থেকে কাজ শুরম্নর সময় নেয়া হয়েছে ১৭ লাখ টাকা। জনৈক ঠিকাদার একাই তা ভাগ-বণ্টনের দায়িত্ব নিয়ে আত্মসাত করায় ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। তরম্নণ শিৰকদের আবাসিক ভবন নির্মাণের ২১ কোটি টাকার কাজে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ঠিকাদারকে দিতে হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের একটি গ্রম্নপকে দিয়ে হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। শহীদুলস্নাহ হলে ২ কোটি টাকার রিপেয়ারিং কাজ, জিমনেশিয়ামে চলছে ২ কোটি ২০ লাখ টাকার কাজসহ সকল কাজ থেকেই কমিশনের ওপর একক নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতেই আধিপত্যের লড়াই চলছে। আর এ লৰ্যে ক্যাম্পাসের জিয়া হল, সূর্যসেন, মুহসীন এবং এফ রহমান হলে বিপুল অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে পল্টন টাওয়ারে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন শফিক বাহিনীর প্রধান শফিকুল ইসলাম। শফিক বাহিনীর টেন্ডারবাণিজ্য এখন ক্যাম্পাসের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আওয়ামী লীগের তিন সাংগঠনিক সম্পাদককে ছাত্রলীগ দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরেও যখন ছাত্রলীগের বোধোদয় হয়নি তখন ছাত্রলীগ সামলানোর বিষয়ে অনেকের সন্দেহ-সংশয় রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.