কাশ্মীরে সেনা 'হত্যা'-জাতিসংঘে যাবে না ভারত

কাশ্মীরের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিরসনে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এদিকে ভারতীয় দুই সেনা হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘের দরবারে যাওয়ার প্রস্তাব গতকাল বৃহস্পতিবার নাকচ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি।
আগের দিন বুধবার পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার এ প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গতকাল হিনা আশা প্রকাশ করেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় দুই দেশের শান্তি আলোচনা ব্যহত হবে না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল দুপুরে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাদের গুলিতে পাকিস্তানি এক সেনার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হাবিলদার পদের এ সেনার নাম মহিউদ্দিন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এ দাবি করে।
ভারতের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার দুই দেশকে বিভক্তকারী নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) অতিক্রম করে ভারতীয় সেনাদের ওপর হামলা চালায় পাকিস্তানি সেনারা। এতে তাদের দুই সেনা মারা যান। এদের একজনের 'মাথা কেটে নেওয়া' হয়েছে বলেও নয়াদিল্লি দাবি করে। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে দরকারে জাতিসংঘের দারস্থ হতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানায়। গত রবিবারের ঘটনায় তারা নিজেরা ইতিমধ্যে জাতিসংঘে নালিশ করেছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র মার্টিন নেসিরকি গত বুধবার এ কথা নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, গত রবিবার এলওসি পার হয়ে তাদের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া ভারতীয় সেনাদের হামলায় এক পাকিস্তানি সেনা মারা গেছেন।
নয়াদিল্লিতে গতকাল বৃহস্পতিবার নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের (সিসিএস) বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেন, 'গত মঙ্গলবারের ঘটনাকে অবশ্যই আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি না এবং এ ব্যাপারে জাতিসংঘের তদন্তের অনুমোদন আমরা দেব না।' সেনা হত্যার ঘটনাকে নৃশংস উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এ ঘটনাকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি... এ ব্যাপারে যা করণীয়, তাই করা হবে।'
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নেসিরকি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, 'সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতি জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক দলের (ইউএনএমওজিআইপি) নজর আছে। অস্ত্রবিরতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে উভয় পক্ষের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।' তিনি জানান, কাশ্মীরে নিযুক্ত ইউএনএমওজিআইপি পাকিস্তানের অভিযোগের পর তদন্ত শুরু করেছে। রবিবারের ঘটনার ব্যাপারে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে। নেসিরকি বলেন, 'যত শিগগির সম্ভব তদন্ত শেষ করা হবে।'
কাশ্মীরে ইউএনএমওজিআইপির প্রায় ৪০ জন সদস্য রয়েছে। ১৯৪৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয় ভারত ও পাকিস্তান। এ অস্ত্রবিরতি যথাযথভাবে মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করে জাতিসংঘের দলটি।
এদিকে চলমান অস্থিরতার মধ্যে দুই দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বুধবার বলেন, 'সংঘাত কোনো দেশের জন্যই সমাধান বয়ে আনবে না।' পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উভয় দেশের সরকারের সঙ্গে ওয়াশিংটন কাজ করছে বলেও জানান তিনি। সূত্র : এএফপি, ডন, জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.