ঢাকা নিউইয়র্ক রুটে বিমানের ফ্লাইট ফের চালুর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীঘ্রই ঢাকা-নিউইয়র্ক রম্নটে বিমানের ফ্লাইট পুনরায় চালু করার উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। খবর বাসসর। প্রবাসী বাংলাদেশীদের চাহিদা বিবেচনা করে বিদেশে বিমানের সকল বন্ধ রম্নট পুনরায় চালু করতেও তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপৰকে নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার বিমানের নতুন লোগো ও পোশাক উদ্বোধন এবং বিমানবহরে অত্যাধুনিক বোয়িং-৭৭৭ -২০০এআর ও বোয়িং-৭৩৭-৮০০ এনজি বিমান অনত্মভর্ুক্তি উপলৰে ঢাকা আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে বক্তৃতাকালে এ নির্দেশ দেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড তার বিমানবহরে অত্যাধুনিক বোয়িং বিমান সংযুক্তির মাধ্যমে নবযাত্রা শুরম্ন করেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী বিমানের ফ্লাইটে সেবার মান বাড়াতে কর্তৃপৰকে নির্দেশ দেন_ যাতে যাত্রীরা ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ বিমানকে বেছে নিতে আগ্রহী হয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রবাসী বাংলাদেশীরা সব সময় ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ বিমানকেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে উলেস্ন্লখ করে এ সুযোগ কাজে লাগাতে কর্তৃপৰের প্রতি নির্দেশ দেন।
বিমানকে আরও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ৰা পূরণে বিমান বাংলাদেশ লিমিটেডের সকল দুনর্ীতি ও অনিয়ম বন্ধে কার্যকর পদৰেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ই-টিকেটিং চালু করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রশংসা করে বলেন, এ উদ্যোগ টিকেট বুকিংয়ের ৰেত্রে দীর্ঘদিনের অনিয়ম বন্ধে প্রভূত সহায়ক হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী জি এম কাদের, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব) জামাল উদ্দিন এবং বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এয়ার কমোডর জাকিউল ইসলামও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী উলেস্ন্লখ করেন যে, দেশের স্বাধীনতার ১৯ দিন পর ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার যাত্রা শুরম্ন করে।


প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উন্নয়নে তাঁর বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নেয়া বিভিন্ন পদৰেপ তুলে ধরে বলেন, বিমানকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে এসব পদৰেপ গ্রহণ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, '১৯৯৬ সালে মতা গ্রহণের পর তাঁর সরকার বিমানকে অত্যনত্ম দুর্দশাগ্রসত্ম অবস্থায় পায় এবং তখন বিমানকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে ব্যাপক পদৰেপ গ্রহণ করে।'
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'তারা বিমানকে চিরতরে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল।'
শেখ হাসিনা চলতি অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে ৩৫ কোটি ও দ্বিতীয় তিন মাসে ৮৩ কোটি টাকা মুনাফা করার জন্য বিমানের কর্মকর্তাদের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে পুরনো বিমান চালনার জন্য বিমানের পাইলট, ক্রু ও অন্যান্য কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, 'আমি সত্যিই আপনাদের সাহসের তারিফ করি, আপনারা প্রমাণ করেছেন যে, বাঙালীরা সব সময় নিভর্ীক ও সাহসী।'
বিমানের পুরনো বিমানগুলোকে পণ্যবাহী কার্গোতে রূপানত্মরের জন্য সংশিস্ন্লষ্ট কর্তৃপৰকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, এতে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের যে কোন স্থানে পণ্য পরিবহনে সহায়ক হবে এবং এর সুবাদে আমাদের ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবে।
প্রধানমন্ত্রী অভ্যনত্মরীণ রম্নটে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে আর লোকবল নিয়োগের ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে নতুন লোগো অঙ্কিত কেক কাটেন এবং নতুন প্রজন্মের একটি বিমানে আরোহণ করেন। তিনি বোয়িং-৭৭৭ ও ৭৩৭ বিমানের দু'টি মডেল গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বিমানের ৭টি নতুন ইউনিফর্ম প্রদর্শন করা হয়। বিমানের যাত্রীসেবা ও গ্রাউন্ডে কাস্টমার টাচ পয়েন্টে নিয়োজিত কর্মচারীরা এসব পোশাক পরবেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তাদের সেবার মান বাড়াতে লিজ ভিত্তিতে বোয়িং-৭৭৭-২০০ ইআর ও ৭৩৭-৮০০ এনজি ক্রয় করছে।
বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর-এ ২৯৩টি সুলভ ও ৩০টি শোভন শ্রেণীর আসন রয়েছে।
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এনজিতে বর্তমানে ১৭৭টি আসন রয়েছে। শীঘ্রই এসব আসনের ১৫০টিকে সুলভ ও ১২টিকে শোভন শ্রেণীর আসনে রূপানত্মর করা হবে।
বহরে নতুন বিমান যুক্ত করার মধ্য দিয়ে বিমান কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়া রম্নটে ফ্লাইট পুনরায় চালু ও কিছু নতুন গনত্মব্যে ফ্লাইট চালু করতে পারবে বলে আশা করছে।
বিমানের একটি সূত্র জানায়, ৭৭৭-২০০ ইআর ইউরো আটলান্টিক এয়ারওয়েজ ও ৭৩৭-৮০০ জিইসিএএস থেকে লিজ নেয়া হয়েছে। জিইসিএএস থেকে দ্বিতীয় ৭৩৭-৮০০ বিমানটি বুধবার ঢাকা পেঁৗছার কথা।
বিমান আইএলএফসি থেকেও একটি ৩১০-৩০০ বিমান লিজ নিচ্ছে, এটি ৭ ফেব্রয়ারি বিমান কতর্ৃপৰের কাছে হসত্মানত্মর করা হবে। এছাড়া এ মাসের শেষ নাগাদ ইউরো আটলান্টিকের কাছ থেকে দ্বিতীয় ৭৭৭-২০০ ইআর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রানত্ম সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ সদস্যগণ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.