দুনর্ীতির অভিযোগগুলোর বিচার-নি্#৬৩৭৪৩;ত্তিতে স্থবিরতার প্রতিকার by মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী

দুনর্ীতির অভিযোগ উঠলেই অভিযুক্তকে একজন অসৎ ব্যক্তি ভাবতে হবে সেটা পুরোপুরি কিংবা আংশিক ঠিক নয় এবং সে রকম ভাবা অন্যায়ও বটে। আইনের মানদণ্ডও তাই-ই।
যতণ না অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হচ্ছেন ততণ পর্যন্ত তিনি একজন নির্দোষ ব্যক্তি সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে। একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুকূলে এই বিবেচনাটি ষোলো আনা রাখার উপায় হচ্ছে ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক তাঁর বিরুদ্ধে উপস্থাপিত মোকদ্দমাটির দ্রুত নি্#৬৩৭৪৩;ত্তিতে সহযোগিতা করা এবং আগ্রহ দেখানো। এই কাজটির কারণেই অন্যদের মনে দৃঢ় আস্থা জন্মে যে, ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি নিশ্চিত নিরপরাধ এবং তখন তাঁর প েসহানুভূতিশীল জনমত আপনা-আপনি গড়ে ওঠে। একদা ইংল্যান্ডের হাইকোর্ট বিভাগে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির প েআপীল শুনানিকালে তাঁর আইনজীবী একটি যুক্তি উত্থাপন করেন যে তাঁর মক্কেল সংশ্লিষ্ট আইনটি জ্ঞাত ছিলেন না। উত্তরে বিচারপতি বলেন, প্রত্যেক নাগরিক আইন জানেন এটাই আইনী অনুমিতি। প্রতু্যত্তরে আইনজীবী বলেন, মাই লর্ড, নিশ্চয়ই একজন নাগরিক তিনি মুদি-দোকানদার, জুতো-মেরামতকারী, ছুতোর-মিস্ত্রি হন না কেন তাঁর আইন জানা জরুরী, কেবল সেটা আপনার জানা জরুরী নয়, কারণ আপনাকে শোধরানোর জন্য আপীল বিভাগ আছে। এই যুক্তিটির অনুসরণে বলা যায়, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি দণ্ড পেলেও তিনি নির্দোষ বিবেচিত থাকবেন, যতণ না তাঁর দণ্ড সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এ েেত্রও দণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত আপীল নি্#৬৩৭৪৩;ত্তিতে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির আগ্রহ ও উৎসাহ বিবেচ্য।
বাস্তবে কী দেখা যাচ্ছে? একটি সে রকম মোকদ্দমা নিম্ন আদালতে উপস্থাপিত হওয়া মাত্র অনেকে হাইকোর্ট বিভাগে মোকদ্দমাটি সরাসরি খারিজের প্রার্থনা করছেন এবং রুল ইসু্য হওয়া মাত্র মোকদ্দমাটির কার্যক্রম স্থগিত রাখার আদেশ নিচ্ছেন। অতঃপর সেটি দ্রুত নি্#৬৩৭৪৩;ত্তির কোন আগ্রহ বা উৎসাহ আবেদনকারীর দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য কিছু েেত্র নিম্ন আদালতে দায়েরি মোকদ্দমাটি সরাসরি খারিজযোগ্য_ এমন হতেই পারে, কিন্তু সেটা যে তেমন তার প েআবেদনকারীর কোন কার্যক্রম ল্য করা যাচ্ছে না। তাঁদের সকলের অনুকূলে নির্দোষিতার বদলে সন্দেহের গুঞ্জন থেকেই যাচ্ছে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ক ধারা অনুযায়ী ওই সকল আবেদনপত্র হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা হচ্ছে। ধারাটির বঙ্গানুবাদ এই : "অত্র বিধি অনুসারে প্রদত্ত কোন আদেশ কার্যকরী করার জন্য বা কোন আদালতের কার্যক্রমের অপব্যবহার প্রতিরোধের জন্য বা অন্য কোনভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আদেশ প্রদানের বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের যে অন্তর্নিহিত মতা আছে, এ আইনের কোন কিছু এর সীমাবদ্ধ বা ুন্ন করে বলে গণ্য করা যাবে না।" এই ধারাটি ইংরেজ আমলে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যোগ করা হয় এই ল্যে যে কোন আদালতের কার্যক্রমের অপব্যবহার রোধে হাইকোর্ট কর্তৃক দ্রুত মতা প্রয়োগ জরুরী, অন্যথায় ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্য বিনষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর উপরোক্ত ল্যে ফৌজদারি কার্যবিধিতে প্রায় অনুরূপ দুটি ধারা (২৪১ক এবং ২৬৫গ) সংযোজিত হয়, যার বঙ্গানুবাদ এই।
ধারা-২৪১ক। "আসামীকে যখন মুক্তি দিতে হবে : ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট উপস্থিত হলে কিংবা তাকে উপস্থিত করা হলে ম্যাজিস্ট্রেট মামলার নথি ও সে সঙ্গে দাখিলকৃত যাবতীয় কাগজপত্র বিবেচনা করে যদি ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন মনে করেন সে অনুযায়ী আসামীর জবানবন্দী গ্রহণ করে এবং ফরিয়াদী ও আসামীকে বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দান করে যদি মনে করেন যে অভিযোগ ভিত্তিহীন, তাহলে তিনি আসামীকে রেহাই দিবেন এবং এরূপ করার কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।"
ধারা-২৬৫গ। "অব্যাহতি (ডিসচার্জ) : মামলার নথি ও তৎসহ দাখিলী দলিলাদি বিবেচনা এবং তৎসম্পর্কে আসামী ও সরকার পরে অভিযোগকারীর বক্তব্য শ্রবণ করার পর আদালত যদি মনে করেন যে, আসামীর বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাবার কোনই হেতু নেই, তাহলে আদালত আসামীকে অব্যাহতি দিবেন এবং তা করার কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।"
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১-ক ধারাটি যখন সংযোজিত হয়েছিল তখন হাইকোর্ট বিভাগের ওই অন্তর্নিহিত এখতিয়ারটি একক ছিল, সেটা বিকল্প কিংবা অতিরিক্ত ছিল না, বরং প্রতিকারের আর অন্য কোন বিধান ফৌজদারি কার্যবিধিতে না থাকায় ওই বিধানটি ন্যায়বিচারের স্বার্থে দ্রুত ও সরাসরি প্রয়োগ জরুরি ছিল। কিন্তু উপরোক্ত ২৪১ক এবং ২৬৫গ ধারা দুটি বর্তমানে সংযোজিত হওয়ায় ৫৬১ক ধারার সরাসরি প্রয়োগ পরোভাবে বাতিল হয়ে গিয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের একটি ফৌজদারি দ্বৈত বেঞ্চের আমি যখন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি তখন ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ক ধারা মতে রুল ইসু্যকৃত অনেক ফৌজদারি রিভিশন প্রিম্যাচিউর বা অকালিক গণ্যে খারিজ করে দেই এই যুক্তিতে যে, আবেদনকারীর উচিত ছিল পূর্বে ২৪১ক কিংবা ২৬৫গ ধারা মতে আবেদন করা এবং তাঁদের সে আবেদনপত্রটি শুনানি অন্তে খারিজ হলে তাঁরা ৫৬১ক ধারা মতে হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করতে পারতেন। আমাদের এই সিদ্ধান্তটির পেছনে এই যুক্তি ছিল, যদি কথিত অভিযোগ সঠিক না হয় তাহলে মামলাটির মৃতু্য দ্রুত ঘটবে এবং অভিযুক্তের প্রতিকূলে অর্থাৎ মোকদ্দমাটি চালু রাখার প েনিম্ন আদালত যদি আদেশ দেন সে েেত্র আদেশটিতে কারণসমূহ থাকবে এবং তাহলে কারণগুলো যুক্তিযুক্ত কিনা সেটা হাইকোর্ট বিভাগ রুল ইসু্য করার সময় বিবেচনা করবেন। কিন্তু ৫৬১ক ধারায় সরাসরি আবেদনপত্রে সেমত বিবেচনা করার সুযোগ না থাকায় ন্যায়বিচারে বিভ্রাট ঘটতে পারে এবং কিছু েেত্র ঘটছেও। ফৌজদারি বিচারে কেবল রাষ্ট্র ও অভিযুক্তও উপস্থিত থাকলেই হবে না, সমাজেরও উপস্থিতি জরুরী। কারণ দণ্ড প্রদান দ্বারা সমাজ অপরাধীর প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে থাকে। আমাদের রায়টি আপীল বিভাগ কর্তৃক বাতিল হয়ে যায়। বর্তমানের পরিপ্রেেিত জাতীয় সংসদ কর্তৃক ৫৬১ক ধারার শেষে একটি শর্ত সংযোজিত করা জরুরী যে, ২৪১ক কিংবা ২৬৫গ ধারা অনুযায়ী আবেদন না করে সাী-প্রমাণ গ্রহণের আগে মামলা খারিজের প্রার্থনায় সরাসরি ৫৬১ক ধারায় আবেদন করা যাবে না।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি

No comments

Powered by Blogger.