বিএনপির চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটি প্রত্যাখ্যান দলের একাংশের- আজ সমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচী

চট্টগ্রাম অফিস বিএনপির চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে দলের একাংশ। ৰুব্ধ এ অংশটি আজ বুধবার আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, কমিটিতে সত্যিকারের ত্যাগী ও আদর্শিক নেতাদের স্থান হয়নি। বরং জায়গা হয়েছে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী এবং চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কর্মকা- ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িতদের। সেখানে রয়েছে জামায়াত ও জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য যোগদানকারী নেতাদের আত্মীয়স্বজন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ কমিটি কোনভাবেই মেনে নেবে না তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকমর্ী ও সমর্থকরা।
চট্টগ্রাম প্রেসকাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউনুছ চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন চাকসু ভিপি নাজিমউদ্দিন, এএইচএম মঞ্জুরম্নল আলম, এ্যাডভোকেট আবু তাহের, আবদুল আওয়াল চৌধুরী, জসিমউদ্দিন সিকদার, সেকান্দর চৌধুরী, হাজী এমএ কাসেম, জেলী চৌধুরীসহ অনেকেই। তাঁরা কোন ধরনের কাউন্সিল ছাড়াই পছন্দের লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করায় ৰোভ প্রকাশ করেন এবং এ কমিটি কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, সভাপতি হিসেবে ঘোষিত গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী একজন রাজাকার। তিনি কখনই দলে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন না। আন্দোলন সংগ্রামে তাঁর কোন ভূমিকা নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে জনসম্মুখে তিনি উপস্থিত হতে পারেন না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাত্রদলের প্রথম কমিটি থেকে গিয়াস কাদেরকে বহিষ্কার করেছিলেন। ওয়ান ইলেভেনপরবতর্ী সময়ে সংস্কারপন্থীদের বিএনপির বিকল্প দল গঠনে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। এ গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী তাঁর নির্বাচনী এলাকা রাউজানে নিজের বাবার কবর জিয়ারত করতেও যেতে পারেন না। অসুস্থ শরীর নিয়ে বেশিরভাগ সময় থাকেন বিদেশে। তাঁর পৰে সভাপতির দায়িত্ব পালন কি করে সম্ভব। নতুন কমিটির সহ-সভাপতি এসএম ফজলুল হক সম্পর্কে তাঁরা বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন না পেয়ে তিনি বিএনপিতে এসেছিলেন। এখানেও মনোনয়ন না পেয়ে বার বার ষড়যন্ত্র করেছেন দলের বিরম্নদ্ধে। বিএনপি সরকারের প্রত্যৰ সহায়তায় বিজিএমইএ'র খ-কালীন সভাপতি হয়ে ওয়ান ইলেভেনপরবতর্ী সময়ে বিভিন্ন টকশোতে এবং হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিভিন্ন আলোচনাসভায় তারেক রহমানকে তারেক সওদাগর এবং বেগম খালেদা জিয়াকে দুনর্ীতির আশ্রয়দাতা ও হাওয়া ভবনকে উদ্দেশ্য করে কুরম্নচিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছিলেন। সে কারণে তিনি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে নেতাকমর্ীদের হাতে লাঞ্ছিতও হন। যুগ্ম সম্পাদক নুরম্নল আমিন দলের পুরনো কমর্ী হলেও চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদখল, মুহুরি প্রজেক্টের মাছ লুটসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত। দল থেকে তিনি বার বার বহিষ্কৃতও হন। আরেক যুগ্ম সম্পাদক বেলায়েত হোসেন জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা। এরশাদ সরকারের পতনের পর তাকে গণদুশমন ঘোষণা করলে তিনি সন্দ্বীপ থেকে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কারণে ওয়ান ইলেভেনপরবতর্ী সময়ে তিনি আবারও পলাতক হন। অর্থ সম্পাদক সালামত আলী এখনও উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং রাউজান থানা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। অথচ তিনিও এখন বিএনপির নেতা। ডা. জাহাঙ্গীর ছাত্রশিবিরের প্রাক্তন ক্যাডার এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রভাবশালী নেতা হয়েও উত্তর জেলা কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন। কমিটিতে আবদুলস্নাহ আল নোমান, এলকে সিদ্দিকী, মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, ডা. এমএন ছাফা, নুরী আরা ছাফা, ড. ইনামুল হক, আলাউদ্দিন, এওয়াইবি সিদ্দিকী বা তাদের কোন অনুসারীর স্থান হয়নি। এ কমিটি আমরা কখনই মেনে নিতে পারি না। সংবাদ সম্মেলন থেকে তীব্র আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে আজ বুধবার বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ আহ্বান করা হয়। সকল থানা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন থেকে সেখানে যোগ দেবে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকমর্ী ও সমর্থকরা। এ সভা থেকে ঘোষণা করা হবে কঠোর কর্মসূচী।

No comments

Powered by Blogger.