চট্টগ্রামে ডেসটিনির ৮১ লাখ গাছের মধ্যে ৪৫ লাখের অস্তিত্ব মিলেছে- দুদক তদন্ত টিমের গণনা by মহিউদ্দিন আহমেদ

 ডেসটিনি গ্রুপের গাছ গণনা প্রায় শেষ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত টিম। ৮১ লাখ গাছের মধ্যে সরজমিনে গিয়ে পাওয়া গেছে ৪৫ লাখের মতো। অথচ গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় সাত কোটি গাছ লাগানোর কথা বলে আড়াই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ডেসটিনি গ্রুপ।
এদিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হয়েছে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন ব্যাংক হিসাবে সে টাকাও নেই। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে জনকণ্ঠকে এ তথ্য জানান। ডেসটিনি ট্রি প্ল্যানটেশন লিমিটেড (ডিটিপিএল) কর্তৃপক্ষ সাধারণ জনগণ ও বিনিয়োগকারীদের অধিক লাভের আশা দেখিয়ে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতিতে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের মাধ্যমে অবৈধভাবে ৬ কোটি ১৮ লাখ ৬৩০টি গাছ ও পাওলোনিয়া ট্রি স্ট্যাম্প বিক্রি করে সর্বমোট ২ হাজার ৩শ’৩৫ কোটি ৭৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা সংগ্রহ করে। ২০০৬ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০০৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে আইন ও বিধিবিধান লঙ্ঘন করে গাছ বিক্রি করে জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। প্রত্যেক ট্রি প্ল্যান্টেশনের গোল্ডেন প্যাকেজের ছয় বছর মেয়াদী ৮ হাজার টাকার প্যাকেজ থেকে ৪২৬০, প্রিমিয়ারের ৯ বছর মেয়াদী প্যাকেজ থেকে ৪২৬০, নয় বছর মেয়াদী ক্ল্যাসিক প্যাকেজ থেকে একই পরিমাণ করে টাকা নিয়ে যান অভিযুক্তরা। ১২ বছর মেয়াদী ৫ হাজার টাকার সিলভার প্যাকেজ থেকে ৩৭৭৫, একই মেয়াদের ১০ হাজার টাকার সুপার সিলভার প্যাকেজ থেকে ৪৩০০, একই মেয়াদের ৮ হাজার টাকার সুপার গোল্ড প্যাকেজ থেকে টাকা নিয়ে যান ৪৩০০ টাকা। একইভাবে ১২ বছর মেয়াদী ৭৫০০ টাকার পাওলোনিয়া ট্রি স্ট্যাম্প প্যাকেজ এবং ৮৫০০ টাকা প্যাকেজ থেকে ৪৩০০ টাকা করে কমিশন নিয়ে যান শীর্ষ কর্মকর্তারা। কমিশনের নামে এ টাকা নেয়ার বিষয়ে গ্রাহকদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। তবে এ জন্য ডেসটিনির শীর্ষ কর্তাদের একটি গোপন চুক্তির বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। এভাবে ২ হাজার ১শ’ কোটি টাকা বিভিন্নভাবে কূট কৌশল করে নিয়ে যান অভিযুক্ত আসামিরা। অভিযোগে আরও বলা হয়, এমএলএম পদ্ধতিতে অস্তিত্বহীন গাছ বিক্রির বিধান না থাকা সত্ত্বেও ডিটিপিএল কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের মাধ্যমে গাছ বিক্রি করে। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এমন জালিয়াতি ধরা পড়ার পর দুদক কর্মকর্তা মোঃ মোজহার আলী সরদার বাদী হয়ে ট্রি প্ল্যান্টেশন খাতে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় কলাবাগান থানায় ২০১২ সালের জুলাই মাসে মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রফিকুল আমিন ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। ওই মামলায় রফিকুল আমিন কারাগারে রয়েছেন। শর্তসাপেক্ষে জামিনে আছেন হারুন-অর-রশীদ।

No comments

Powered by Blogger.