বুকে ব্যথা

বুকে ব্যথা খুব সামান্য কারণেই হতে পারে যেমন বদ হজম, মানসিক চাপ আবার অনেক কঠিন অসুখের কারণে হতে পারে_ যেমন হার্ট এ্যাটাক, পালমোনারি ইমরোলিজম।
আর অন্যসব ব্যথার মতন বুকের ব্যথার জন্য মেডিক্যাল পরামর্শ লাগবে। নিচের কিছু বিষয়ে আলোকপাত করা হলো যা কিনা আপনাকে অনেকটা বলে দেবে আপনার বুকের ব্যথা মেডিক্যাল ইমারজেন্সি কিনা।

হার্ট এ্যাটাক
আপনার হৃৎপি-ের রক্তনালী যখন চলাচল বন্ধ হয়ে হৃৎপি-কে অক্সিজেন দিতে ব্যর্থ হয়, তখন হার্ট এ্যাটাক হয়।
* হার্ট এ্যাটাক সাধারণত বুকের ব্যথার সৃষ্টি করে যা কিনা ১৫ মিনিটের বেশি সময় থাকে। আবার এও সত্য হার্ট এ্যাটাক নীরব হতে পারে।
* অনেক মানুষ হার্ট এ্যাটাকের কিছুদিন বা সপ্তাহ আগে থেকে টের পেতে থাকে কিছু একটা ঘটবে হয়ত। কারণ সামান্য বুকে ব্যথা বা চাপ চাপ ভাব। সবচেয়ে বড় লৰণ হলো পরিশ্রম করলেই বুকের ব্যথা বা চাপ বাড়ে আবার বিশ্রাম নিলে কমে যায়।
* হার্ট এ্যাটাক হলে নিচের সবগুলো বা যেকোন একটি লক্ষ্মণ প্রকাশ পাবে, _অস্বাভাবিক চাপ চাপ ভাব। বুক ভরা ভরা ভাব অথবা বুকের মাঝখানে তীব্র ব্যথা অনুভব কিছুৰণ ধরে।
_ ব্যথা ছড়িয়ে যায় হাত, বাহু কাঁধে।
_ মাথা শূন্য শূন্যভাব। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অনেক ঘাম ঝড়তে থাকে, অথবা বমি বমি ভাব এবং শ্বাস নিতে কষ্ট।
কি করবেন, যদি মনে হয় হার্ট এ্যাটাক হয়েছে_
* পাঁচ মিনিটের বেশি এ রকম লৰণ সহ্য করবেন না। যদি কোন মেডিক্যাল সাহায্যের ফোন নং জানা থাকে তবে পাশের বাড়ির প্রতিবেশীকে ডাকুন এবং পাশর্্ববতর্ী হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনুরোধ করম্নন, নিজে না গাড়ি চালিয়ে যাওয়াই ভাল। তবে নিছক প্রয়োজন হলে শেষ আশ্রয় হিসেবে_ গাড়ি চালিয়ে চলে যাবেন।
* একটা ৩০০ মি. গ্রাম এ্যাসপিরিন খেয়ে ফেলুন। আপনার বস্নাডে বাধা সরে যাবে। তবে পূর্বে যদি আপনার ডাক্তার এ্যাসপিরিন খেতে নিষেধ করে থাকেন কিংবা এ্যাসপিরিনে যদি আপনার এ্যালার্জি হয় তবে না খাওয়াই ভাল।
* নাইট্রোগিস্নসারিন নিতে পারেন। যদি আপনার ডাক্তার বুঝে আগে থেকে তা আপনাকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

পালমোনারি ইমবোলিজম
ইনবোলাস স্বভাবতই রক্তে জমাকৃত বর্জ্য। সাধারণত তা রক্তের জমাট। যা কিনা রক্তনালীতে তার চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে রক্তে প্রবাহিত অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত হয়ে দেহ কোষ। পালমোনারি এমবোলিজমে স্বভাবতই পায়ের দিক থেকে আগত কোন জমাট রক্ত এসে ফুসফুসের রক্তপ্রবাহকে বন্দ করে দেয়।
পালমোনারি এমবোলিজে সাধারণত_
* খুব বেশি বুকে ব্যথা হয়। যা কিনা কাশিতে বা শ্বাসে তীব্রতর হয়। শ্বাসকষ্টও থাকে সাথে।
* হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই শ্বাসকষ্ট (কোন ব্যথা নাও থাকতে পারে)
* কাশীতে রক্ত কফ।
* হৃদক্রিয়ার অধিক গতিময় ছন্দ বেড়ে যাবে_ অনেক।
* দুশ্চিনত্মা এবং অনেক ঘাম হতে থাকবে।
হার্ট এ্যাটাকের মতনই এটি একটি মেডিক্যাল ইমারজেন্সি। ইমারজেন্সি মেডিক্যাল সাহায্যের জন্য তৎপর হোন।

নিউমোনিয়া এবং পিস্নওরেসি
নিউমোনিয়ার লৰণগুলো হলো কাশি, বুকে ব্যথা সাথে জ্বর কাঁপুনি এবং কাশিতে রক্ত বা গন্ধমযুক্ত কফ।
নিউমোনিয়া হলে সাথে ফুসফুসের চারপাশের পদার্থও আক্রানত্ম হয়। এবং শ্বাস নিলে অস্বসত্মি হতে থাকে। এই অবস্থাকে আমরা পিস্নওরেসি বলি।
* পিস্নউরেসিতে সবচেয়ে বড় লৰণ হলো শ্বাস বন্ধ রাখলে ব্যথা থাকে না বা ব্যথার জায়গায় চাপ দিলে ব্যথা থাকে না। কিন্তু হার্ট এ্যাটাকে তা হয় না। আপনি ডাক্তার দেখান যদি আপনার জ্বর কাশি বুকে ব্যথা থাকে। তবে শুধু পিস্নউরেসি মেডিক্যাল ইমারজেন্সি নয়।

বুকের খাঁচার ব্যথা
সবচেয়ে কম ৰতিকারক বুকের ব্যথার মধ্যে বুকের খাঁচার মাংসপেশীর ব্যথা অন্যতম। চাপ দিলে ব্যথার চারপাশেও ব্যাথা ব্যথা অনুভূত হয়। কিন্তু এমনটি হয় যদি যে আপনি আঙ্গুল দিয়ে ব্যথা নির্দিষ্ট করতে পারছেন তবে সেটা কখনোই হার্ট এ্যাটাকের মতন সিরিয়াস কিছু নয়।

বুকের ব্যথার আরও কারণ
* অধিক কাশের জন্য বুকের মাংসপেশীতে ব্যথা।
* বুকের মাংসপেশীতে রক্তৰরণ এবং ব্যথা।
* অধিক মানসিক চাপ এবং দ্রম্নত শ্বাসপ্রশ্বাস।
* পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বা গলবস্নাডের ব্যথা বুকে অনুভূত হতে পারে।
ডা. এ টি এম রফিক উদ্দিন
সূত্র : মায়ানিক কিনিক .পড়স

No comments

Powered by Blogger.