লাভ by বিশ্বজিৎ দাস

কিনবে না কিনবে করতে করতে মাছটা শেষ পর্যন্ত কিনেই নিল রুম্মান। দাম নিল সাড়ে তিন হাজার টাকা। ঊর্মি নিশ্চয়ই রাগ করবে। বাড়তি খরচ একেবারে পছন্দ করে না ও। তা হোক। নববর্ষ বলে কথা। হোক না ইংরেজি, তবু নববর্ষ তো।
নববর্ষের দিন মাছ খেতে হয়। বড় বড় মাছ।
বড় মাছের প্রতি দুর্বলতা রুম্মানের ছোটবেলা থেকেই। আজ শর্মিকে বাসায় দাওয়াত দিতে হবে। শর্মিও খেতে খুব পছন্দ করে। ওর বোন ঊর্মি আবার একেবারে উল্টো। মোটা হওয়ার ভয়ে খেতে চায় না একেবারে।
‘কত নিল?’ গম্ভীরভাবে জিজ্ঞেস করল ঊর্মি।
‘দুই হাজার।’ ভয়ে ভয়ে দাম কমিয়ে বলল রুম্মান।
‘এত বড় মাছের এত কম দাম।’
‘আজ নববর্ষ তো। মাছের আমদানি তাই বেশি। সে জন্যই দামও কম।’
ঊর্মিকে আর কথা বাড়ানোর সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে পড়ল রুম্মান অফিসের উদ্দেশে। বাসা থেকে অফিসটা ওর কাছেই। দুপুরে খেতে আসতে পারে অনায়াসে।
দুপুরে আগ্রহ নিয়ে খেতে বসল রুম্মান। শর্মি এসেছে। ভাতের সঙ্গে বড় মাছের মাথাটা খেতে কেমন লাগবে ভেবে কল্পনায় শিহরিত হলো রুম্মান।
শর্মি মুচকি হাসল।
‘একি, ছোট মাছ কেন?’ রুম্মান অবাক হলো।
‘শোনো, রাগ কোরো না। পাশের ফ্ল্যাটের আন্টির মেয়ে জামাইসহ বেড়াতে এসেছে ১২টার দিকে। আন্টির বাসায় মাছ-মাংস কিছুই ছিল না। তাই আমি ওটা আন্টির কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।’ ঊর্মি বলল।
‘বিক্রি করেছ মানে! কত দামে বিক্রি করেছ?’
‘তুমি তো দুই হাজারে কিনেছ না। আন্টির কাছে আমি ওটা আড়াই হাজারে বিক্রি করেছি। বছরের প্রথম দিনেই ৫০০ টাকা লাভ করেছি। বছর ভালোই যাবে, কী বলো?’

No comments

Powered by Blogger.