জামায়াত-শিবিরের হামলা

রাজধানীসহ সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের ভাংচুর ও হিংসাত্মক তা-ব অব্যাহত রয়েছে। প্রায়ই তারা এখানে ওখানে ঝটিকা মিছিল বের করছে। যেন অরাজক অবস্থা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চায়।
গত কয়েক মাস ধরে জামায়াত-শিবির আগের তুলনায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী ও মতিঝিলে জামায়াত-শিবির হটাতই ঝটিকা মিছিল বের করে। এ সময় তারা কমপক্ষে দশটি যানবাহন ভাংচুর করে। তারা পুলিশ ও নিরীহ পথচারীর ওপর হামলা চালায়। উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে জামায়াত-শিবিরের জঙ্গী হামলার অন্যতম লক্ষ্য হলো পুলিশ বাহিনী ও নিরীহ পথচারী। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে জামায়াত-শিবিরের জঙ্গী মিছিল থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। তারা থেমে থেমে কয়েক দফায় পুলিশের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। জানা গেছে, পুরো আধা ঘণ্টা মহাখালী এলাকা যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ রাবারের বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসব ঘটনায় পুলিশ কয়েকজন শিবিরকর্মীকে আটক করে।
গত কয়েক মাস ধরে জামায়াত-শিবিরের হামলা, তা-ব, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের কারণে সারাদেশে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তারা যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওপর হামলা চালাচ্ছে এবং সরকার ও জনগণের সম্পত্তি বিনষ্ট করছেÑতা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহিতা।
জামায়াত-শিবির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলার মাধ্যমে যেন সরকারের আইন শৃক্সক্ষলাবাহিনীর উপর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চায়। অনেকের মনে প্রশ্ন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত এমন সাহস পাচ্ছে কোথা থেকে? তাদের মদদদাতা কারা? জামায়াত-শিবিরের জঙ্গী মিছিল ও তা-ব দেখে অনেকেরই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালে জামায়াতের হিংস্র রূপ ও বর্বরোচিত কর্মকা-ের কথা জাতি কোনদিনই বিস্মৃত হবে না। সে সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের তারাই ছিল প্রধান সহযোগী।
এখন পর্যন্ত বর্তমান মহাজোট সরকার জামায়াত-শিবিরের ব্যাপারে যথেষ্ট সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু এভাবে আর কতকাল? এ অবস্থা বেশিদিন চললে দেশের সব উন্নয়ন কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে যে বার্ষিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে সেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জামায়াত-শিবির চক্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার। দুখের বিষয় বিরোধীদলের অনেকেই প্রকাশ্যে জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচীর সমর্থন করে যাচ্ছে।এসব কিছুর মূলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার ষড়যন্ত্র। তাই যত শীঘ্র সম্ভব দেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া সমাপ্ত করতে হবে ও বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.