খোদ যুক্তরাষ্ট্রে ৯০ লাখ পরিবারকে ৰুদ্রঋণের আওতায় আনছে গ্রামীণ- মন্দা মোকাবেলায়- ভূমিকা রাখায়- উচ্ছ্বসিত প্রশংসা- অর্জন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক ঋণ ব্যবস্থার বাইরে থাকা ৯০ লাখ পরিবারকে ৰুদ্র ঋণের আওতায় আনার লৰ্য নিয়ে কাজ করছে গ্রামীণ ব্যাংক।
ঋণের পরিমাণ কম হলেও ৰুদ্র উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে চলমান অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা প্রশংসা অর্জন করেছে। ৰুদ্র উদ্যোক্তাদের গ্রম্নপ গঠন করে ঋণ প্রদানের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্যের হার বেশি বলে টাইম ম্যাগাজিনের সর্বশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে উলেস্নখ করা হয়েছে। ১৯৮০ দশকের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরম্ন হয়। ওই সময় গ্রামীণের পৃষ্ঠপোষকতায় সাউদার্ন বেনকর্প আরাকানসাসে ৰুদ্র ঋণ কর্মসূচী চালু করে। তবে ওই পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণের ৩০ শতাংশই অনাদায়ী থাকত। এরপর থেকে ধীরে ধীরে আদায়ের হার বাড়তে থাকে। মূলধন যোগানের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের দৰতা বৃদ্ধির উদ্যোগের কারণেই গ্রামীণ ব্যাংকের অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে।
টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বারবারা কিভিটের নিবন্ধে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যনত্ম গ্রামীণ ব্যাংক নিউইয়র্ক শহরে ১ হাজার ৭০০ উদ্যোক্তার মধ্যে ৰুদ্র ঋণ বিতরণ করেছে। গত জুনে ওমাহায় ব্যাংকের দ্বিতীয় শাখা চালু হয়েছে। এছাড়া সানফ্রান্সিসকো, বোস্টন এবং চার্লট এনসিতেও গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকা- রয়েছে। স্থানীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠী গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রাথমিক পুঁজি সংগ্রহের পাশাপাশি স্বল্প ব্যয়ে সঞ্চয়ী হিসাব পরিচালনা করতে পারছে। নিউইয়র্কে গ্রামীণ ব্যাংকের অংশীদার সিটি ব্যাংকের ৰুদ্র ঋণ বিষয়ক পরিচালক বব এনিবেল বলেন, যেসব নাগরিক সাধারণ ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুফল পান না তারাই গ্রামীণের ৰুদ্র ঋণ গ্রহীতা। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বড় প্রতিষ্ঠানের মতো সিটি ব্যাংকও ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে থাকা জনগণের মধ্যে বাজার সম্প্রসারণে সচেষ্ট। তবে এসব গ্রাহাককে আকৃষ্ট করা অত্যনত্ম দুরূহ। গ্রামীণ ব্যাংকের ৰুদ্র ঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে সেই লৰ্য সফল হচ্ছে বলে বব এনিবেল জানান। নিউইয়র্কে গ্রামীণ ব্যাংকের দেয়া ঋণ আদায়ের হার এখন ৯৯ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে ৰুদ্র ঋণ কর্মসূচী পরিচালনার ৰেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ বলে টাইমের নিবন্ধে উলেস্নখ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে নগদ টাকার আপাত সঙ্কট সত্ত্বেও 'পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী' দেশটিতে এখনও প্রথাগত ব্যাংকের ১ লাখেরও বেশি শাখা সক্রিয় রয়েছে। যদিও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশা করছেন, কয়েক বছরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে গ্রামীণ ব্যাংক অত্যনত্ম সফল ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হবে। ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে থাকা ৯০ লাখ এবং দৈনিক পরিশোধভিত্তিক ঋণের আওতায় থাকা ২ কোটি ১০ লাখ মানুষের কল্যাণে ৰুদ্র ঋণ ব্যবস্থা লাভজনক পর্যায়ে উন্নীত হবে।
টাইম ম্যাগাজিনের নিবন্ধে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশে তৃতীয় বিশ্বের ৰুদ্র ঋণ ব্যবস্থার ভূমিকা সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করা হলেও যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় অন্যান্য ৰুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে পৃথক কর্মপন্থার কারণে গ্রামীণ ব্যাংক স্বতন্ত্র অবস্থান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ঋণ প্রদানের আগে গ্রম্নপ গঠন করায় উদ্যোক্তাদের সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি ঋণ ফেরতেরও প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। এরপরও মাত্র দেড় হাজার ডলার ঋণ নিয়ে লাভজনক ব্যবসা সম্ভব কিনা_ সেই প্রশ্ন উঠছে।
আলটাগ্রাসিয়া ফ্যামিলিয়া নামে এক ঋণগ্রহীতার উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমের নিবন্ধে বলা হয়, নারী কর্মীদের উন্নয়নই গ্রামীণ ব্যাংকের মূল লৰ্য। ঋণগ্রহীতা নারীরা একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিৰা নিচ্ছে। পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.