বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায় বাংলায় রূপান্তর : by এনামুল হক

(পূর্ব প্রকাশের পর) নিমাই মণ্ডল ও অন্যান্য বনাম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এআইআর ১৯৬৬ কলকাতা ১৯৪ মামলায় একই দৃষ্টিভঙ্গির প েসমর্থন। পাওয়া যায়। সেই মামলায় বলা হয়েছিল যে ভিন্ন ভিন্ন অভিমতসহ মামলাটি তৃতীয় বিচারকের সামনে পেশ করা হলো।
এখন যেসব বিষয়ে দুই বিচারকের মতপার্থক্য ঘটেছে শুধু সেই বিষয়গুলোই নয় বরং মামলাটির নি্#৬৩৭৪৩;ত্তি করাই তৃতীয় বিচারকের কর্তব্য।
ভগৎ রাম বনাম রাজস্থান রাজ্য এআইআর ১৯৭২ (এসসি) ১৫০২ মামলায় দণ্ডবিধির ১২০খ, ২১৮, ৩৪৭ ও ৩৮৯ ধারায় আনীত অপরাধের অভিযোগ থেকে দুই আসামী বিওআার-এর খালাসের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যে আপীল পেশ করেছিল তা নাকচ করে দেয়া হয়েছিল। তবে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা ও দুনর্ীতি দমন আইনের ৫ (১) ক ধারায় অপরাধের েেত্র 'বি'কে খালাস দেয়ার আদেশের যথার্থতা নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারকদের মধ্যে মতপার্থক্য হওয়ায় বিষয়টি তখন ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৯ ধারায় তৃতীয় একজন বিচারকের কাছে পাঠানো হয়। উপরোক্ত অবস্থায় ভারতের সুপ্রীমকোর্ট মন্তব্য করেন যে,১২০খ, ২১৮ ও ২৪৭ ধারায় অপরাধের েেত্র আসামী 'বি'এর খালাসের বিষয়টি নতুন করে উন্মুক্ত করা তৃতীয় বিচারকের দায়িত্ব নয়। কেননা এই মামলায় বিচারিক আদালতের বিচারকের দেয়া খালাসের আদেশ বহাল রেখে ডিভিশন বেঞ্চ সুস্পষ্ট আদেশ প্রদান করেছেন এবং যেহেতু গোটা মামলাটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৯ ধারায় তৃতীয় বিচারকের কাছে পাঠানো হয়নি এই অবস্থায় তৃতীয় বিচারক শুধু মতপার্থক্যের বিষয়টিই বিবেচনা করে দেখতে এবং নিজ উপসংহারে পেঁৗছাতে পারেন।
মুহম্মদ শফি বনাম ক্রাউন ৬ ডিএলআর (ডবি্লউপি) ১০৪ (এফবি) মামলায় আপীলকারীদের আনীত আপীলে বিজ্ঞ বিচারকরা এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হন যে, 'তৃতীয় বিচারক বিচারকদের বেঞ্চের কতর্ৃত্ব প্রয়োগ করছেন এবং সেই কারণে সিন্ধু আদালত আইনের ১২ ধারা উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তার নিজেকে একজন একক বিচারক বলে মনে না করে একটা বেঞ্চ হিসাবে গণ্য করা উচিত।' আমি মনে করি উপরোক্ত মামলার দৃষ্টান্তটির এই মামলার েেত্র প্রয়োগ করার কোন উপায় নেই।
আব্দুর রাজ্জাক বনাম রাষ্ট্র ১৬ ডিএলআর (ডবি্লউপি) ৭৩ মামলায় মন্তব্য করা হয়েছিল যে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৮ ও ৪২৯ ধারার কোথাও লেখা নেই যে, যে বিচারক আসামীর অনুকূলে অভিমত দিয়েছেন তৃতীয় বিচারককে সেই অভিমত অনুসরণ করতে হবে কিংবা তিনি তা অনুসরণ করতে পারেন। অবশ্য এই উক্তিটি মেনে নেয়া হলে বিধির ৩৭৮ ধারায় 'সেই বিচারক তার বিবেচনায় যা উপযুক্ত তেমন শুনানির পর তার অভিমত দেবেন এবং রায় বা আদেশ সেই অভিমত অনুযায়ী হবে' কথাগুলো ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন হবে না।
যেহেতু দেখা যাচ্ছে যে বাবুর মামলায় (এআইআর ১৯৬৫ এসসি ১৪৬৭) ভারতীয় সুপ্রীমকোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের গৃহীত ভূমিকায় এই বিষয়টি দৃঢ়ভাবে সমর্থিত হয়েছে এবং পরবতর্ী মামলাগুলোতে ও এই মামলায় উক্ত সিদ্ধান্তটি অনুসৃত হয়েছে তাই ঐ অবস্থান থেকে সরে আসার কোন অকাট্য যুক্তি নেই। কারণ ঐ অবস্থানটি আইনের বিধানাবলীর সঠিক নির্মাণের ওপর প্রতিষ্ঠিত। অধিকন্তু যদি মেনেও নেয়া হয় যে তৃতীয় বিচারকের উচিত ছিল সকল আসামীর েেত্র রেফারেন্সের শুনানি করা তারপরও যেহেতু আমরা সজ্জন সিংয়ের মামলায় (সুপ্রা) যেমন করা হয়েছিল তেমনিভাবে আপীলকারীদের আপীল গুরুত্বানুযায়ী সবিস্তারে শুনানি করেছি তাই একথা বলার উপায় নেই যে, আপীলকারীরা তিগ্রস্ত হয়েছে।
'রায়'-এর েেত্র যে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে তাতে দেখা যায় ৬ আসামীকে দোষী সাব্যস্তকরণ নিয়ে মতপার্থক্য থাকার প্রেেিত ডিভিশন বেঞ্চে ১৪ ডিসেম্বর ২০০০ তারিখের আদেশ বলে নিম্নোক্ত আদেশ জারি করেছেন :
"ডেথ রেফারেন্স অংশত গ্রহণ করা হয়েছে, ২০০০ সালের ২৬০৪, ১৯৯৮ সালের ২৬১৩ এবং ১৯৯৮ সালের ২৬১৬ নং ফৌজদারি আপীল নাকচ করা হয়েছে। পৃথক পত্রে প্রদত্ত রায়ে বিচারপতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ১৯৯৮ সালের ২৬১৭ নং ফৌজদারি আপীলের অনুমতি দিয়েছেন।
বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক পৃথক পত্রে প্রদত্ত রায়ে ডেথ রেফারেন্স অংশত গ্রহণ করেছেন এবং ১৯৯৮ সালের ২৬০৪ নং ১৯৯৮ সালের ২৬১৬ নং এবং ১৯৯৮ সালের ২৬১৭ নং ফৌজদারি আপীল নাকচ করে দিয়েছেন।"
আদেশক্রমে
"১৪, ১২, ২০০০। ১৯৯৮ সালের ৩০ নং ডেথ রেফারেন্সের রায় বিভক্ত হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৮ ধারার বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আদেশ জারির জন্য বিষয়টি বিজ্ঞ প্রধান বিচারপতির কাছে পেশ করা হোক।"
বিচারপতি মো. রুহুল আমিন
বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক

No comments

Powered by Blogger.