যমুনা ফিউচার পার্কের অননুমোদিত অংশ ভাঙ্গা হচ্ছে

রাজধানীর কুড়িলের যমুনা ফিউচার পার্কের অবৈধ অংশ ভাঙ্গার কাজ শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপৰ (রাজউক)। রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট রোকনউদ্দৌলস্নার নেতৃত্বে সকাল এগারোটা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত নির্মাণাধীন ভবনের অননুমোদিত অংশ ভাঙ্গার প্রথম দিনের কাজ চলে।
অবৈধ অংশ ভাঙ্গার কাজ আবার শুরম্ন হবে বলে জানিয়েছেন রাজউক কর্তৃপৰ। যমুনা ফিউচার কর্তৃপৰ ছয়তলা ভবনের অনুমতি নিয়েছে। ছয়তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি নিয়ে তার চেয়েও অনেক উঁচু ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যমুনা ফিউচার পার্কের কর্ণধার ও দৈনিক যুগানত্মর পত্রিকার মালিক নূরম্নল ইসলাম বাবুলকে গত ১৭ জানুয়ারি যমুনা কর্তৃপৰকে অননুমোদিত অংশ ভেঙ্গে ফেলার জন্য নির্দেশ দেয় রাজউক। তিনি এর বিরম্নদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। বুধবার তাঁর রিট আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তাঁর রিট আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাজউক অননুমোদিত অবৈধ অংশের ভাঙ্গার কাজ শুরম্ন করে।
রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট রোকনউদ্দৌলস্নাহ জানিয়েছেন, আদালতের আদেশ অনুসরণ করেই এ ভবনের অবৈধ অংশ ভাঙ্গার কাজ হচ্ছে। রাজউকের আপীলের বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, যমুনা কর্তৃপৰকে বলেছি, রাজউকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করম্নন। আমরা কাজ বন্ধ রাখার ব্যাপারে রাজউক চেয়ারম্যানের কাছ থেকে কোন নির্দেশ পাইনি।
রাজউকের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুল মান্নান বলেছেন, যমুনা ফিউচার পার্কের অবৈধ অংশ ভাঙ্গার কাজ আবার হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গুলশান) একেএম হাফিজ আক্তার বলেছেন, রাজউক কার্যক্রম চলার সময়ে পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে সেজন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রাজধানীর কুড়িলে ১০ একর জায়গার ওপরে নির্মিত দেড় লাখ বর্গমিটারের যমুনা ফিউচার পার্ক নির্মাণের আগেই দৰিণ এশিয়ায় সর্ববৃহৎ ও এশিয়ার মধ্যে তৃতীয় বৃহৎ শপিংমল হচ্ছে বলে যমুনা গ্রম্নপ কর্তৃপৰ দাবি করে বলেছে, রাজউকের অভিযানের সময়ে তছনছ ও লুটপাট হয়েছে। ভবনের দশম তলায় যমুনা গ্রম্নপের চেয়ারম্যান নূরম্নল ইসলাম বাবুলের কার্যালয় রয়েছে, যা অভিযানের সময়ে তছনছ করা হয়েছে। কার্যালয় থেকে কিছু সরানোর সুযোগ দেয়া হয়নি। যমুনা গ্রম্নপের ২৬টি ইউনিটের ৩০ হাজার কর্মীর বেতন দেয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। এজন্য টাকা এনে রাখা হয়েছে। সেই টাকাও আনা যায়নি। আগে থেকে তাদের মালপত্র সরানোর সুযোগ দেয়া হয়নি। সকাল সাড়ে নয়টায় রাজউকের লোকজন এসে যমুনা গ্রম্নপের লোকজনকে বের করে দেয়। এরপর তারা ভাঙ্গার কাজ শুরম্ন করে।
পুলিশ পাহারায় ভবনের প্রথমে দশম তলা ও পরে নবম তলায় হাতুড়ি, শাবল, গাঁইতি দিয়ে বিভিন্ন দেয়াল ভাঙ্গার কাজ শুরম্ন করে রাজউক কর্মচারীরা। বেলা দেড়টার দিকে প্রথম দিনের কাজ শেষ করে বের হওয়ার সময়ে শ্রমিকদের দেহতলস্নাশি চালায় পুলিশ। যমুনা ফিউচার পার্কের অননুমোদিত অংশ ভাঙ্গার সময়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও শত শত কৌতূহলী মানুষ আশপাশে ভিড় করে অভিযান পরিচালনার কাজ দেখতে।
যমুনা গ্রম্নপের পৰ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হাইকোর্টের নির্দেশ ও আপীল আবেদন অগ্রাহ্য করে এবং কোন সময় না দিয়ে যমুনা ফিউচার পার্কের তৃতীয় তলা কর্পোরেট শাখা অফিস ভেঙ্গে দিয়েছে রাজউক। রাজউক তাদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করেছে। মূল্যবান কাগজপত্র তছনছ ও নষ্ট করেছে। শত শত পুলিশ ও র্যাব দিয়ে নারকীয় তা-ব চালিয়েছে। অবশেষে আপীল সংক্রানত্ম কাগজ দেখে মাঝপথে ভাঙ্গার কাজ বন্ধ করেছে।

No comments

Powered by Blogger.