পৈশাচিক

হত্যার ১০ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার ও ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পৈশাচিক বর্বরতার শিকার হয়েছে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী চাঁদনি। পাষণ্ডরা তাকে ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি।
শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরের সিলিং-এর সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর শাহ আলী থানাধীন গুদারাঘাট এলাকায়। এ ঘটনায় গতকাল বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকাবাসী থানার সামনে বিক্ষোভ করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলেও পরে ছেড়ে দেয়। শাহ আলী থানার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলী জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মোখলেসুর রহমানের তত্ত্বাবধানে তিন সদস্যের টিম ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। এতে ধর্ষণের আলামত খুঁজে পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার নাগরি-সাগরি গ্রামে দাদীর কাছেই কেটেছে। স্কুলের ছুটি কাটাতে বাবা-মা’র কাছে ঢাকায় এসেই তাকে নিতে হলো চিরদিনের ছুটি। বাবা-মা হারালেন তাদের একমাত্র সন্তানকে। কোন সরকারি সাহায্য না, শুধু দাবি তার মেয়ের অপরাধীদের ফাঁসির দাবি- এইভাবেই আকুতি জানালেন মা নারগিস বেগম। তিনি জানান, মেয়ের লাশ নিজের হাতেই নামাতে হয়েছে। থানায়  আমাদের অভিযোগ নিতে চায়নি। মামলা নিতে চাননি, সাংবাদিকদের জানাতে নিষেধ করেছেন। পুলিশ বলেছে, শান্তির বস্তির মালিকের সঙ্গে টাকা দিয়ে বোঝাপড়া করে নেন। ওই স্কুলছাত্রী তার বাবা বাবুল মিয়া ও মা নার্গিস আক্তারসহ শাহআলী থানা এলাকার কমার্স কলেজ সংলগ্ন হাজীপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকতো। মা একমাস আগে এ বাসা ছেড়ে পাশের গুদারাঘাট (খেয়াঘাট) এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। বাসা ছেড়ে দিলেও পুরানো বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে শিমু প্রায়ই আসতেন। গত শনিবার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় পুরানো বাসার দিকে। পরে শনিবার বিকাল ৪টার দিকে  হাজীপাড়া রোডে শান্তির বস্তির সিএনজি চালক খোকনের রুমের বাঁশের সিলিংয়ে গলায় ওড়না পেঁচানো মৃতদেহ ঝুলে থাকতে দেখে ভূত বলে চিৎকার করে উঠে খেলার সাথী খালেদা। তবে এ সময়  খোকন বাড়িতেই ছিলো। পরবর্তীতে খোকনকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। বস্তির একাধিক বাসিন্দা জানান, মেয়েটিকে কে বা কারা ধর্ষণ করেছে তা কেউ দেখেনি। তবে যার ঘর থেকে  মেয়েটির লাশ উদ্ধার হয়েছে, সেই সিএনজি চালক  খোকনের চরিত্র ভালো না। এ পর্যন্ত খোকন তিনটি বিয়ে করলেও দুই স্ত্রীকেই ছেড়ে দিয়েছে।
তারা আরও জানান, ভোলা জেলার বাসিন্দা সিএনজি চালক খোকন মাত্র তিন মাস আগে বস্তিতে এসেছে। আগের প্রতিবন্ধী স্ত্রীর দুই সন্তান নিয়ে পরে বিয়ে করা স্ত্রীর সঙ্গে ঝিলপাড়ের বস্তিতে ভাড়া থাকছে সে।
এ ঘটনায় মা নার্গিস বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (৩) ধারা (ধর্ষণের পর হত্যা) মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় খোকনসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করা  হয়েছে। অপরজন হলো বস্তির মালিকের ছেলে রাজু। আর একজনকে  অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার এজাহারে রুমে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.