রাজশাহীতে ছাত্রলীগ মৈত্রী মুখোমুখি, ১০ জনের বিরম্নদ্ধে মামলা- সানির লাশ দাফন আজ শোকর্যালি

রাজশাহী রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত ছাত্রমৈত্রীর সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে সানির লাশ শুক্রবার বাদ জুমা দাফন করা হয়েছে। অন্যদিকে সানি হত্যাকা-ের ঘটনায় পলিটেকনিক ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতিসহ ১০ জনের বিরম্নদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা


হয়েছে। ঘটনার দিন হোস্টেল তলস্নাশি করে গ্রেফতারকৃত চার ছাত্রলীগ কমর্ীকে মামলার এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত চারজনকে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতভর পুলিশ সানি হত্যার মামলার আসামিদের খোঁজে নগরীসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, রাজশাহীতে ছাত্রলীগ-ছাত্রমৈত্রী এখন পরস্পরের মুখোমুখি। মহাজোটের শরিক আওয়ামী লীগ এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সহযোগী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর কর্মকা-ে বিব্রত দলীয় নেতাকর্মী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের হামলায় রাজশাহী পলিটেকনিক শাখা ছাত্রমৈত্রীর সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী সানি নিহতের ঘটনায় বিদ্যমান পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পলিটেকনিকের সভাপতিসহ ৭ জনকে বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের সংশোধনের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্রমৈত্রীর নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে রাজশাহী মহানগরীজুড়ে ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্রলীগের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নগরীর বিভিন্ন গুরম্নত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
অন্যদিকে সানি হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রমৈত্রী শুক্রবার বিকেলে মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। তারা শনিবার নগরীতে শোক র্যালি কর্মসূচীও ঘোষণা করেছে।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, সানি হত্যাকা-ের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটায় সানির বাবা মনোয়ারম্নল ইসলাম চৌধুরী নান্নু থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেন। এতে ঘটনার দিন গ্রেফতারকৃত পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের চার কমর্ী এবং বহিষ্কৃত সভাপতি নিজাম উদ্দিনসহ ১০ জনের নাম উলেস্নখ করা হয়েছে। এ ছাড়া এজাহারে অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের কথা উলেস্নখ করা হয়। রাতেই এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ওসি জানান, প্রায় একই সময় মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি মতিউর রহমান মতি ৯ জনের নাম উলেস্নখ করে পৃথক আরেকটি এজাহার থানায় দাখিল করেন। তবে মতির এজাহারটি নথি হিসেবে রাখা হয়েছে।
এদিকে বাদ জুমা নগরীর টিকাপাড়ায় মহানগর ঈদগাহ ময়দানে নিহত সানির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের ওয়র্াকার্স পাটির পলিটবু্যরোর সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ্যাডভোকেট আব্দুল হাদী, বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ রফিক উদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সম্পাদক লিয়াকত আলী লিকু, জেলা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পিয়ারম্নল, জাসদের মহানগর সম্পাদক আব্দুলস্নাহ আল মাসুদ শিবলীসহ বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সানির নামাজে জানাজার পূর্বে ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, সন্ত্রাস ও হত্যার রাজনীতির বিরম্নদ্ধে সংগ্রাম করেই আমরা মহাজোট সরকার গঠন করেছি। এখানে সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেয়া হবে না। সানি হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীরা যে দলেরই হোক না কেন, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেয়া হোক, এটা আমরা চাই না। তিনি আরও বলেন, যারা সানিকে হত্যা করেছে এবং যারা শিক্ষাঙ্গনকে অস্থিতিশীল করে রাখতে চায়, আমরা তাদের বিচার চাই। এ সময় নিহত সানির পিতা মনোয়ারম্নল ইসলাম চৌধুরী নান্নু ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, আর যেন কোন মা-বাবার বুক খালি না হয়।

No comments

Powered by Blogger.