ফলোআপ- আদালতের রায়ের অপেক্ষায় এতিম চার ভাইবোন by শংকর দাস

পটুয়াখালীর চার এতিম সন্তান তাদের টাকা-পয়সা ও স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের আলোচিত মামলাটির পারিবারিক আপিল শুনানি বুধবার শেষ হয়েছে। উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি গ্রহণ হয়। ২০০৮ সালের ২৩ মে সৌদি আরবে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তাজনুর আক্তারের বাবা আবুল কালাম আজাদ, মা তহুরা বেগম ও জ্যেষ্ঠ ভাই আল হেলাল (১৬)। বেঁচে যায় চার ভাইবোন।


এর হলো তাজনুর, মারজান, মাহমুদ ও আইমান। এর মধ্যে তাজনুর সবার বড় এবং প্রাপ্তবয়স্ক।
এ দুর্ঘটনার পর তাজনুরদের আত্মীয়-স্বজনেরা ওদের বাবার অর্জিত টাকা-পয়সাসহ সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার কূটকৌশল শুরু করে।
তাজনুর অভিযোগ করে বলেন, তাঁর আপন চাচা পটুয়াখালীর আলতাফ হোসেন তাঁকে না জানিয়ে গোপনে তাঁদের অভিভাবক হন এবং তাঁদের সম্পত্তি, টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাতের পাঁয়তারা শুরু করেন। এ নিয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হলে আদালত তাঁর অভিভাবকত্বকে অবৈধ গণ্য করে তা বাতিল করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত চাচা আলতাফ হোসেন ১৪ আগস্ট আপিল দায়ের করেন এবং ওই রায়ের ওপর যাবতীয় কার্যক্রমের স্থগিতাদেশ পান।
তাজনুরের আইনজীবী আবদুস ছত্তার বলেন, বুধবার আদালতে ওই পারিবারিক আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানিকালে আলতাফ হোসেন তাজনুরদের গচ্ছিত স্বর্ণালংকার আদালতে প্রদর্শন করেন। এ সময় তাজনুর এই স্বর্ণালংকার তাঁদের বলে শনাক্ত করেন। তাজনুর বলেন, পারিবারিক আপিলের ওপর শুনানিকালে তাঁর নানা জালাল মুন্সি এবং অপর দুই চাচা ফরিদ হোসেন ও সেলিম হোসেন তাঁদের অভিভাবকত্ব দাবি করে আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু গত দুই বছরে তাঁদের অভাব-অনটন ও দুর্ভোগের সময় এঁরা কেউই তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াননি। তাঁর ধারণা, এটা তাঁদের একটা নতুন কৌশল। ২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর আইন অধিকার পাতায় ‘এতিমদের স্বর্ণ এখনো মাপেনি চাচা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই তাজনুরদের টাকা-পয়সা ও স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারের বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় ওঠে আসে। তবে চাচা আলতাফ হোসেন ওই প্রতিবেদনের তথ্য অসত্য, মনগড়া দাবি করে স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান। তাজনুর স্থানীয় পত্রিকায় তাঁর চাচার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘আমরা এতিম। প্রচুর ধন-সম্পদ আব্বু রেখে গেলেও আমরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ন্যায়ের পক্ষে আদালত রয়েছে। আমরা আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছি।’

No comments

Powered by Blogger.