বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

এইচএসসি পাসের পর উচ্চশিক্ষার বিষয় নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। কেননা যুগোপযোগী বিষয় নির্বাচনের মাধ্যমে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্যারিয়ার রিলেটেড কোর্স চালু করেছে।


আসুন জেনে নিই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যুগোপযোগী চারটি বিষয়ে পড়াশোনার বিস্তারিত।
১৯৯৫ সালে ড. এ.বি.এম মফিজুল ইসলাম পাটোয়ারীর একক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়। গত ১৭ বছরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেÑব্যবসায় প্রশাসন, আইন, সমাজ বিজ্ঞান, ইংরেজী, কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক্স এ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফার্মেসি বিভাগ। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮০০০। পূর্ণকালীন শিক্ষক প্রায় ১৫০।
ব্যবসায় প্রশাসন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মোঃ সেলিম ভূইয়ার নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিতে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে। এ বিভাগে রয়েছেন মেধাবী, অভিজ্ঞ ও পরিশ্রমী ২৪ পূর্ণকালীন ও কিছুসংখ্যক খণ্ডকালীন শিক্ষক। বর্তমানে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে প্রায় ১৬০০ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত। এমবিএ পাস ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে এমবিএ এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়েছে এবং প্রতিবছর এ এ্যাসোসিয়েশন বিভিন্ন ধরনের শিক্ষণীয় ও আনন্দঘন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। বর্তমানে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ৪ বছর মেয়াদী বিবিএ দিবাকালীন ও সান্ধ্যকালীন প্রোগাম, ১ বছর মেয়াদী এমবিএ এবং ২ বছর মেয়াদী ইএমবিএ প্রোগ্রাম চালু রয়েছে এবং ছাত্রছাত্রী ভর্তি চলছে।
সুুযোগ-সুবিধা: ইংরেজী মাধ্যমে পাঠদান, পর্যাপ্ত কেস স্ট্যাডির ব্যবস্থা, চলমান বিষয়ের ওপর এ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাস পার্টিসিপেশনের ব্যবস্থা, মিডটার্ম ও ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতির ব্যবস্থা, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর জোর দেয়া, কোর্স শিক্ষকদের ক্লোজ মনিটরিং, লাইব্রেরী ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা, স্টাডি ট্যুর ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিজিটের ব্যবস্থা, ইন্টার্নিশিপের ব্যবস্থা, মৌখিক পরিক্ষায় উপযোগী করে তোলা, ডিবেট, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা ইত্যাদি।
ফার্মেসি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ডিন অধ্যাপক এবিএম ফারুক ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপদেষ্টা। যার নেতৃত্ব ও দিকনিদের্শনায় ফার্মেসি বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩৫০টি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যা থেকে উৎপাদিত ওষুধসমূহ দেশের সম্পূূর্ণ চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৭০টি দেশে রফতনি করছে। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগ দক্ষ ও উপযুক্ত ফার্মাসিস্ট তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। এই বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত। এতে রয়েছে সময়োপযোগী ও অনুমোদিত পাঠক্রম, আধুনিক ও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ ল্যাবরেটরি এবং প্রয়োজনীয় ও আধুনিক পুস্তকসংবলিত গ্রন্থাগার। দেশের বরেণ্য ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রবীণ ও নবীন শিক্ষকরা এই বিভাগে শিক্ষাদানের সঙ্গে জড়িত । ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে রয়েছে সুসজ্জিত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংবলিত ৫টি ল্যাবরেটরি যেখানে আধুনিক, সৃজনশীল ও বিভিন্ন জটিল বিষয় নিয়ে ছাত্ররা সার্বক্ষণিক গবেষণা করে থাকে। এসব গবেষণার ফলাফল, তথ্য-উপাত্ত দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সাময়িকীতে ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে যা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে পড়তে সর্বসাকুল্যে প্রয়োজন ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ঢাকার বাইরের ছাত্রদের থাকার জন্য রয়েছে আবাসিক ব্যবস্থা।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং : কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধীনে এখানে প্রায় আটটি সুবৃহৎ কম্পিউটার ল্যাব আছে। আরও আছে প্রায় ৪০০টি অত্যাধুনিক কম্পিউটার রয়েছে। এছাড়া রয়েছে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট ল্যাব। পুরো ক্যাম্পাসটি ডরভর হওয়ায় এখানে যত্রতত্র ওহঃবৎহবঃ-এ জবংবধৎপয করা যায়। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সাইন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধীনে তিনটি কোর্স চালানো হয়Ñবি.এস.সি (অনার্স) ইন সি.এস.ই (দিবা শাখা), বি.এস.সি (অনার্স) ইন সি.এস.ই (সান্ধ্যকালীন/ডিপ্লোমা) ও এম.এস.সি ইন সি.এস.ই। কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানেই উচ্চতর ডিগ্রী নিতে পারে। এম.এস.সিতে রয়েছে থিসিস গ্রুপ ও ননথিসিস গ্রুপ মেধাবী ও উচ্চতর গ্রেড পাওয়া শিক্ষার্থীদের থিসিস করার সুযোগ দেয়া হয়, যেখানে খ্যাতিমান কোন অধ্যাপকের অধীনে গবেষণা করতে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হাফিজ মোঃ হাসান বাবু ও সাবেক চেয়ারম্যান এখানে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছে।
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং : ইলেক্যট্রিকাল ইলেকট্রনিক এ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধীনে দুটি কোর্স চালানো হয়। যথা: বি.এস.সি (অনার্স) ইন ই.ই.টি.ই (দিবা শাখা), বি.এস.সি (অনার্স) ইন ই.ই.টি.ই (সান্ধ্যকালীন/ডিপ্লোমা শাখা)। এই বিভাগে ডিগ্রী অর্জনকারী গ্র্যাজুয়েট একই সঙ্গে ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিকস্ এ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ সম্যক ধারণা লাভ করে। বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খ্যাতিমান অধ্যাপকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ল্যাবগুলো পরিচালনা করা হয়।
আইন বিভাগ : ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আইন অনুষদে বর্তমানে যে কোর্সসমূহে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হচ্ছে সেগুলো হলো : চার বছর মেয়াদী এল.এল.বি (সম্মান) দিবা শাখা, চার বছর মেয়াদী এল.এল.বি (সম্মান) সান্ধ্যকালীন শাখা, দুই বছর মেয়াদী এল.এল.বি (পাস) প্রোগ্রাম, এক বছর মেয়াদী এল.এল.এম (মাস্টারস) প্রোগ্রাম, দুই বছর মেয়াদী এল.এল.এম (মাস্টারস) প্রোগ্রাম। এছাড়া অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধীনে দুই বছর মেয়াদী মাস্টারস অব হিউম্যান রাইটস ল প্রোগ্রাম রয়েছে। এই আইন অনুষদের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন ও ডিন হিসেবে আছেন ড. উত্তম কুমার দাস এবং চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োজিত আছেন সহকারী অধ্যাপক শামীম আরা। এখানে রয়েছেন সুদক্ষ ২০ জন পূর্ণকালীন শিক্ষক।
স্থায়ী ক্যাম্পাস: ঢাকার বনানীতে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি একটি নিজস্ব ক্রয়কৃত ভবন আছে। এছাড়াও সাভারের বলিয়ারপুরে প্রায় ৮ একর নিজস্ব জমি আছে। সম্প্রতি দ্্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ঢাকার বাড্ডার সাঁতারকূলে এক একরের অধিক জায়গা ক্রয় করেছে এবং বিগত ৭ এপ্রিল ২০১২ স্থায়ী ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
যোগাযোগ: ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ৬৬ গ্রিনরোড, ঢাকা-১২০৫।
বাড়ি ৪, সড়ক ১, ব্লক এফ, বনানী, ঢাকা-১২১৩, ফোন: ৯৮৫৮৭৩৪-৫, ০১৭১৮৭৫৮৪১২।
ক্যাম্পাস প্রতিবেদক

No comments

Powered by Blogger.