অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে বিচারের মুখোমুখি করুন- যশোরে সাংবাদিক খুনের ঘটনা

যশোরে সাংবাদিক জামাল উদ্দীন খুনের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) তদন্তে। গত শুক্রবার প্রথম আলোতে এ-সংক্রান্ত খবরের পাশাপাশি অভিযুক্ত এএসআই মাসুদুর রহমান ও কনস্টেবল শহীদের সঙ্গে খুনের মামলার প্রধান আসামি তোতার ফোনালাপও প্রকাশিত হয়।


এতে দেখা যায়, তাঁরা সাংবাদিক খুনের ঘটনায় কেবল সহায়তাই করেননি, মামলার প্রধান আসামি তোতাকে আত্মরক্ষার কৌশলও বাতলে দিয়েছেন।
এ খবর প্রকাশের পর স্বাভাবিকভাবেই সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। আশা করা গিয়েছিল, পুলিশ বিভাগের চৈতন্যোদয় হবে এবং অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থেই এটা করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ‘আগের আদেশে’ তাঁদের কর্মস্থল থেকে বদলি করা ছাড়া কিছুই করা হয়নি। পুলিশের নিজস্ব তদন্তে খুনের সঙ্গে ওই দুই পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততা নেই বলে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ একটি অন্যায়কে ঢাকতে গিয়ে পুলিশ বিভাগ আরও বড় অন্যায় করেছে, অসত্যের আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশের তদন্ত যে অসত্য, তার প্রমাণ প্রধান আসামির সঙ্গে দুই পুলিশ সদস্যের ফোনালাপ। জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা যখন দাবি করছেন, ফোনালাপটি সাজানো হতে পারে, তখন এএসআই মাসুদুর রহমান এটাকে আসামি ধরার কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ তিনি ফোনালাপটির সত্যতা অস্বীকার করছেন না।
পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক গ্রামের কাগজ-এর কাশীপুর প্রতিনিধি সীমান্ত এলাকার চোরাচালানের খবর প্রকাশ করায় ওই দুই পুলিশ সদস্য তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন; যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ জুন তিনি খুন হন। খুনি ও চোরাচালানির পক্ষে অবস্থান নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে থাকার নৈতিক ও আইনগত অধিকার থাকতে পারে না। তাঁদের কেবল দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিলেই হবে না, বিচারের মুখোমুখি ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
গণমাধ্যম ও র‌্যাবের তদন্তে পুরো ঘটনা ফাঁস হওয়ার পরও অপরাধীকে রক্ষার এই চেষ্টা গোটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমরা জামাল উদ্দীনের খুনি ও তাঁদের সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

No comments

Powered by Blogger.