বেকারত্ব কমানোর প্রশ্নে কোণঠাসা ওবামা

নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের সম্মেলন শেষে এখন ঝুঁকিপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলো চষে বেড়াচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং তাঁর রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রমনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজার সম্পর্কে হতাশাব্যঞ্জক এক প্রতিবেদন এই প্রচারের লড়াইয়ে গত শুক্রবার বেশ কোণঠাসা করে ফেলে ওবামাকে।


চাকরির বাজারে প্রত্যাশিত স্থিতি আনা যায়নি_তা স্বীকার করতে বাধ্য হন তিনি। আর বিষয়টি নিয়ে ওবামার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণ চালান ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের সাবেক গভর্নর রমনি।
প্রসঙ্গত, জনমত জরিপগুলোয় প্রায় সমান সমান অবস্থানে আছেন ওবামা ও রমনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ৬ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণা লড়াই দারুণভাবে জমে উঠেছে।
তবে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত আগস্টে ৯৬ হাজার নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছে; যা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। তবে বেকারত্বের হার কমেছে। জুলাইয়ে এই হার ছিল ৮.৩ শতাংশ, যা আগস্টে ৮.১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বেকারত্বের এই নাজুক পরিস্থিতির বিষয়টি ওবামা নিজেও স্বীকার করেন। আইওয়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেন, 'বেকারত্বের হার কমিয়ে আনার গতি সন্তোষজনক নয়। আমাদের আরো দ্রুত কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। মন্দার কারণে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা পূরণ করতে হবে।' ওবামা গত শুক্রবার আইওয়া ও নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে ব্যস্ত দিন কাটান। সকালে নিউ হ্যাম্পশায়ারে জনসংযোগ শেষে সন্ধ্যায় আইওয়ায় এক জনসভায় অংশ নেন তিনি। এ সফরে তাঁর সঙ্গে আছেন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী।
নিউহ্যাম্পশায়ারে এই ইস্যুটি নিয়েই ওবামাকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেন রমনি। তিনি বলেন, 'গত চার বছরে প্রেসিডেন্ট ওবামার নীতি ব্যর্থ হয়েছে, এটা এরই প্রমাণ। প্রেসিডেন্ট কথা দিয়েছিলেন তাঁর মেয়াদের প্রান্তে এসে বেকারত্বের হার কমে ৫.৪-এ দাঁড়াবে। এর পরিবর্তে এখন আমাদের বেকারত্বের হার আটের ওপরে। এই প্রেসিডেন্ট চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি জানেন না, অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কী করতে হয়। আমি জানি।' তাঁর রানিং মেট পল রায়ান বলেন, 'আজকের অবস্থায় পরিস্থিতি সামলে ওঠার কোনো ইঙ্গিত আমরা পাচ্ছি না।' রমনি গত শুক্রবার সকালে আইওয়ার সিয়াক্স সিটিতে প্রচার শুরু করে দিন শেষ করেন নিউ হ্যাম্পশায়ারের নাশুয়ায়।
নির্বাচনের আর মাত্র দুই মাস বাকি থাকতে সর্বশেষ জরিপে উভয় প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি ভোটারদের সমর্থন বর্তমানে সমান ৪৭ শতাংশ করে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
এ পরিস্থিতিতে নর্থ ক্যারোলাইনায় তিন দিনের সফল ডেমোক্রেটিক সম্মেলনের প্রভাবে ভোটারদের মধ্যে ওবামা আবারও নিজের হৃত অবস্থান ফেরত পেতে সক্ষম হবেন বলে আশা প্রকাশ করছিল ডেমোক্রেটিক শিবির। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল অর্থনীতির সূচক এ প্রত্যাশার পথে বড় ধরনের বিঘ্ন তৈরি করল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.