সংবিধান লঙ্ঘন : সরকার ও ইসিকে জবাবদিহি করতে হবে : এম কে আনোয়ার

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা না করে নির্বাচন কমিশনও (ইসি) সংবিধান লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, এজন্য সরকার ও ইসি উভয়কেই জবাবদিহি করতে হবে।স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে ‘জাতীয় সংসদে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও সংসদীয় গণতন্ত্রের ভবিষ্যত্’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।


৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন ২৮ অক্টোবর সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকায় চার কোম্পানি সেনা মোতায়েনের নির্দেশনা দেয়। কিন্তু তা না হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে কমিশন ও সরকার। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করে এবং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার ভোটের ৭ ঘণ্টা আগে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এটিএম শামসুল হুদা ওইদিন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কমিশনের নির্দেশনা মানার ব্যাপারে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সরকার তা করেনি। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন, সেনা মোতায়েন না হওয়ায় সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের
সমালোচনা করে এম কে আনোয়ার বলেন, তার (প্রধানমন্ত্রী) এই বক্তব্য সঠিক নয়। তার দলের সিনিয়র অনেক নেতাও বলেছেন, নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনী চাওয়ার পর সেনা মোতায়েন করা সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক। সংবিধান বিশেষজ্ঞরাও একই কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলছেন, তা কোনো সভ্য জগতের ভাষা নয়। সংবিধানের ধারা তুলে ধরে সাবেক এই আমলা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা না করে সরকার সংবিধানের ১২০ ও ১২৬ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে। একইভাবে সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা না করে নির্বাচন কমিশনও সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। এজন্য উভয়কেই একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ করে এম কে আনোয়ার বলেন, নারায়ণগঞ্জে একদলীয় নির্বাচন হয়েছে। আপনাদের পায়ের তলায় যে মাটি নেই এই নির্বাচনের মাধ্যমে তা স্পষ্ট হয়েছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই কমিশন স্বাধীন হলে কমিশনাররা পদত্যাগ করতেন, অথবা হাইকোর্টে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এমপি বলেন, দেশে যদি মুরগি চুরির বিচার হয়, তবে সংবিধান লঙ্ঘনেরও বিচার হবে।
অন্যদের মধ্যে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিমা রহমান, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.