মানববন্ধনে বক্তারা-ঘনবসতিপূর্ণ দেশে পরমাণু স্থাপনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ

খন সারা পৃথিবী পরমাণু বিদ্যুৎ চুলি্ল স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে, তখন বাংলাদেশ সরকার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমাদের মতো দরিদ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশে পরমাণু স্থাপনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। কারণ পরমাণু বিদ্যুৎ সম্ভাবনা নয়, নিরাপদও নয়।গতকাল শুক্রবার বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা এ কথা বলেন। বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবু নাঈমের সভাপতিত্বে ও সাদাত হাসান নিলয়ের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রগতিশীল প্রকৌশলী ও স্থপতি ফোরামের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক প্রকৌশলী হারুন আল রশীদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন, প্রকৌশলী কল্লোল মুস্তাফা, রতন পাল, নজরুল ইসলাম রাসেল, মামুন মোর্শেদ খান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, 'সচেতন মহলের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে বাংলাদেশ সরকার গত ২ নভেম্বর রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের বিষয়ে রাশিয়ার সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেছে। এ প্রকল্প পরিচালনার জন্য কাঁচামাল, প্রযুক্তি ও কারিগরি অর্থাৎ সব দিক থেকে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবে, যা আমাদের জাতীয় ও জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি। রাশিয়া আগামী ২৫ বছর পর্যন্ত পারমাণবিক বর্জ্যের দায় নেবে। কিন্তু এরপর ওই বর্জ্য আমাদের ঘাড়েই চাপবে। পরমাণু স্থাপনা ও পরমাণু বর্জ্য থেকে যে তেজস্ক্রিয়া নির্গত হয় এর ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ ও কোনো মাত্রায় একে চিহ্নিত করা যায় না।'
বক্তারা আরো বলেন, 'বর্তমান জটিল বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো জটিল প্রযুক্তির জন্য রাশিয়া বা যেকোনো পরাশক্তির ওপর নির্ভরশীলতা আমাদের স্বাধীন জাতীয় অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলতে পারে।' তাঁরা পরমাণু শক্তি নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আধিপত্য বিস্তারের কূটকৌশল সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'পরাশক্তিগুলো তাদের বিক্রি না হওয়া রি-অ্যাক্টর আমাদের মতো অনুন্নত ও দুর্বল দেশগুলোর কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে।' সমাবেশে বক্তারা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.