জনপ্রিয় হলেই খুন-নরসিংদীতে আর গণমানুষের নেতা রইল না by হায়দার আলী ও সুমন বর্মণ,

রসিংদীবাসীর দুর্ভাগ্যই বলা যায়। গণমানুষের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ জননেতা খুব বেশি জন্মাননি এখানকার মাটিতে। হাতে গোনা যে কজন জন্মেছিলেন, তাঁরা আবার শিকার হয়েছেন নোংরা রাজনীতির। কোনো নেতা মোটামুটি জনপ্রিয় হয়ে উঠলেই, তাঁর মাঝে গণমানুষের নেতা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিলেই খুন হয়ে গেছেন তিনি। সরেজমিন অনুসন্ধানে এ রকম অন্তত চারটি ঘটনার কথা জানা গেছে। সর্বশেষ মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডসহ এই চারটি ঘটনায় চারজন সম্ভাবনাময় জননেতাকে অকালে হারিয়ে চোখের জলে ভেসেছে নরসিংদীবাসী।


এভাবে একের পর এক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে জনপ্রিয় নেতাদের হারিয়ে এখন সত্যিকারের জননেতাহীন হয়ে পড়েছে নরসিংদী।
মেয়র লোকমান হোসেন বাদে অন্য তিনজন হলেন সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) বিল্লাল হোসেন রনি ও কেন্দ্রীয় তাঁতি দলের সহসভাপতি রায়পুরার মনিরুজ্জামান মনির। সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই রিপন সরকারও খুন হন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পরই নিহতদের পরিবার রাজনৈতিক কারণকে দায়ী করে দলীয় ও বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। কিন্তু কোনো হত্যাকাণ্ডেরই বিচার পায়নি নিহত নেতাদের স্বজনরা। উল্টো হত্যা মামলাকে রাজনৈতিক বিবেচনায়
প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেছে বারবার। আর হত্যাকাণ্ডের মূল হোতারাও পার পেয়ে গেছে সহজেই। এ কারণে নরসিংদীতে 'জনপ্রিয় নেতা নিধন অভিযান' লাই পেয়ে আসছে বরাবর। তাই নরসিংদীবাসীর অভিমত, এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে জনপ্রিয় নেতা নিধন বন্ধ করতে।
চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড : নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম খুব ছোটবেলায় অভাবের তাড়নায় কারখানায় কাজ শুরু করেন। যুবক বয়সে তাঁর অমায়িক ব্যবহার অল্প সময়ে তাঁত শ্রমিকদের মাঝে তাঁকে জনপ্রিয় করে তোলে। ধীরে ধীরে সেই জনপ্রিয়তা নিজ গ্রাম থেকে হাজীপুর ইউনিয়ন ছাপিয়ে আশপাশের ইউনিয়নেও ছড়িয়ে পড়ে। একসময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হন তিনি। ২০০৩ সালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাজীপুরের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ খান পিন্টুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিপুল ভোটে জয়ী হন সাইফুল। এর পর থেকে দিন দিন তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। কারখানার শ্রমিকদের সুখ-দুঃখ নিয়েই বেশির ভাগ সময় কাটত তাঁর।
এই জনপ্রিয়তাই কাল হয় সাইফুলের। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্যে দিনের আলোয় ছোট ভাই রিপন সরকারসহ সাইফুল ইসলামকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নরসিংদী মডেল থানায় হাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ খান পিন্টু ও তাঁর সহযোগীসহ ঘাতকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রও দেয়। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলাটি রাজনৈতিক মামলা হিসেবে প্রত্যাহার করে নেয়।
সাইফুলের বড় ভাই মহালম সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জনপ্রিয়তার বলি হয়েছে আমার ছোট ভাই। এলাকার গরিব মানুষের নেতায় পরিণত হয় সে। নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে ঘাতকরা আমার দুই ভাইকে হত্যা করে। মামলায় পুলিশ চার্জশিট দেওয়ার পরও পার পেয়ে যায় ওরা।' মহালম সরকার অভিযোগ করেন, মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করানো হয়।
দুই ছেলে হারিয়ে বৃদ্ধ মা জীবন্নেছা বেগম এখনো পাগলের মতো বিলাপ করেন। গভীর রাতে তাঁর কান্নার শব্দে অনেকের ঘুম ভেঙে যায়। সাইফুল হত্যার বিচার চেয়ে বিতরণ করা প্রচারপত্রে ছেলের ছবি দেখিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মা বলেন, 'আমার পোলারে ওরা মাইরা এলাকায় মাথা উঁচু কইরা ঘুইরা বেড়ায়। দেশে বিচার নাই। দুই পোলারে এক লগে ওরা গুলি কইরা মারল, কিন্তু সরকার হেগোর দোষ মাফ কইরা দিল। মরার আগে ওগো বিচার দেইখ্যা যাইতে পারলে মনডায় শান্তি পাইতাম।'
হাজিপুর এলাকার রহিম, আলম, জীবন নামে তিন শ্রমিক প্রায় একই সুরে বলেন, সাইফুল চেয়ারম্যান ছিলেন গরিব মানুষের নেতা। গরিব মানুষ বিপদে পড়লে তাঁর কাছে গেলে উপকার পেত। সেই উপকারী চেয়ারম্যানকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে মেরেছে।
জিএস বিল্লাল হোসেন রনি হত্যা : বন্ধুদের হাত ধরে ছাত্রদলের রাজনীতিতে ঢোকেন বিল্লাল হোসেন রনি। অল্প সময়েই নেতৃত্বগুণে সবার মন জয় করেন তিনি। জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর রনি ২০১০ সালের ২৬ মে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে।
গত ১৫ মার্চ সকালে কলেজ ছাত্র সংসদ ভবনের নিজ কার্যালয়ে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে রনিকে। নিজের রক্তে ভাসতে থাকে রনির দেহ। ১৭ হাজার ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নরসিংদী সরকারি কলেজে এভাবে প্রকাশ্যে নৃশংস খুনের ঘটনায় নরসিংদীবাসী শোকাহত হয়ে পড়ে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, নিজ দলের বিভক্ত রাজনীতির কোন্দলের শিকার হয়ে খুন হয়েছে রনি।
এ ঘটনায় বিল্লাল হোসেন রনির বড় ভাই আবুল ফজল বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার প্রায় আট মাসে পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি কুত্তা রুবেলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে, কিন্তু প্রধান অভিযুক্তরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মামলার বাদী আবুল ফজল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য কিছুদিন আগে ইভ টিজিংয়ের অভিযোগ এনে রনিসহ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে ওই মামলা মিথ্যা প্রমাণ হয়। কোনোভাবেই ঠেকাতে না পেরে শেষে রনিকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ তৎপরতা দেখালেও পরে ঝিমিয়ে যায়। এতে রনি হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে দিন দিন আমাদের সংশয় বাড়ছে।'
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নরসিংদী সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাসিফ সানোয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করেছেন। ইতিমধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বেশির ভাগই চিহ্নিত হয়েছে।
তাঁতিদলের নেতা মনিরুজ্জামান মনির হত্যা : কেন্দ্রীয় তাঁতিদলের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ছাত্ররাজনীতি দিয়ে। নেতৃত্বগুণে ধাপে ধাপে তিনি পরিণত হন জনমানুষের নেতায়। তাঁর উত্থানে কোণঠাসা হয়ে পড়েন রায়পুরা উপজেলার অনেক প্রভাবশালী নেতা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ২০০৫ সালের ২৯ মার্চ নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই বাচ্চু মিয়া বাদি হয়ে ১৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তদের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাদের মধ্যে রয়েছেন_তৎকালীন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এন জামান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমান। মামলাটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৯ সালে সিআইডি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
নিহত মনিরুজ্জামানের ছেলে আশরাফুজ্জামান রনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রাজনৈতিক কারণেই আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। সিআইডি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও এখনো চার্জ গঠন করা হয়নি। আসামি ১৮ জনের মধ্যে ইতিমধ্যে ১৪ জন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে গেছে। তারা এখন এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ড : মেধাবী এক যুবকের কত দ্রুত রাজনৈতিক উত্থান ঘটতে পারে, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হোসেন। ২০০৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় তিনি পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়ে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেন সাবেক মেয়র আবদুল মতিন সরকারকে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের পৌর নির্বাচনে লোকমান হোসেন ২২ হাজার ভোটের ব্যবধানে আবার মেয়র নির্বাচিত হন। পাশাপাশি শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এবং মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের সভাপতি হন তিনি।
পৌরবাসীর ভাষ্য, লোকমান হোসেন নরসিংদী শহরকে সাজিয়েছেন সাধ্যমতো। যে শহরের ভাঙা ও সরু সড়ক দিয়ে যানবাহন চলত না, ছিল না কোনো নাগরিক সুবিধা, সেই শহরের চেহারা তিনি আট বছরেই পাল্টে দিয়েছেন। মাদক গ্রাস করেছিল নরসিংদীকে। এক রাতে মদ পান করে দেড় শতাধিক লোকের মৃত্যুর কথা মনে করে এখনো আঁতকে ওঠেন অনেকে। মেয়র নির্বাচিত হয়ে সেই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন লোকমান। জনতার সহযোগিতায় কাউরিয়াপাড়ার মাদকের সবচেয়ে বড় আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে নির্মাণ করেন পৌর ঈদগাহ মাঠ। মাদক বিক্রি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেন তিনি। নরসিংদী বাজার, রেলস্টেশনসহ পাড়া-মহল্লায় চাঁদাবাজি বন্ধে গড়ে তোলেন এলাকাভিত্তিক লাঠি-বাঁশি সমিতি। দ্রুত জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে তাঁর।
শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা বলে, লোকমান হোসেন নেতা থেকে হয়ে ওঠেন গণমানুষের নেতা। নরসিংদীর প্রতিটি রাস্তা-ঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা আধুনিক করা হয়। শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে রাতদিন পরিশ্রম করেন তিনি। খেলাধুলার মাঠ, নতুন বাসস্ট্যান্ড, পৌর পার্ক, পৌর ঈদগাহ, কবরস্থানসহ নানা উন্নয়নকাজ করেন। শহরে নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক গোলচত্বর_মুক্তি চত্বর, শাপলা চত্বর, গোলাপ চত্বর, রজনীগন্ধা চত্বর, স্বাধীনতা চত্বর, দোয়েল পাখি চত্বর, শিক্ষা চত্বর, রকেট চত্বর। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তুলেছেন শহীদ মিনার, বাস টার্মিনাল। এসবের স্বীকৃতিস্বরূপ লোকমান হোসেনকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) পরপর দুই বার (২০০৮ ও ২০০৯ সালে) দেশের শ্রেষ্ঠ পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ণপদক প্রদান করে।
লোকমান হোসেন নরসিংদীর মেয়র হলেও তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল জেলাব্যাপী। শুধু পৌর এলাকার লোকজনই নয়, জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে লোকজন ছুটে আসত তাঁর কাছে। জেলার পাশাপাশি সম্প্রতি তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছিল দেশব্যাপী। গত বছর সুতার অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে যখন দেশে একের পর এক তাঁতকল বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, তাঁতিরা যখন পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছিলেন, তখন তিনি শ্রমিকদের নিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন করে মিল মালিকদের সিন্ডিকেট ভাঙেন। এতে সুতার দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে এবং তাঁতিদের প্রিয় নেতায় পরিণত হন লোকমান।
অবশেষে নোংরা রাজনীতির শিকার হতে হলো লোকমানকেও। তাঁর পরিবারের দাবি, লোকমানের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তায় ভীত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চক্রান্তে ও সহযোগিতায় পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত লোকমানের ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান করে ১৪ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে দুজন ছাড়া বাকি সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
বাদী কামরুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে আমার ভাই লোকমান হোসেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচারকাজ চালাচ্ছিলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু নিজেও ওই পদে প্রার্থীর জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এরই সঙ্গে লোকমানের রাজনৈতিক উত্থান দেখে কিছু প্রভাবশালী নেতা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েন। এরই জের ধরে আমার ভাইকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।'
নিহত মেয়রের ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ বলেন, 'আমার ভাইকে নরসিংদীর মানুষ ভালোবাসত। এটাই ছিল তাঁর অপরাধ। আর এ জন্যই তাঁকে প্রাণ হারাতে হয়েছে।'
লোকমান হোসেনের স্ত্রী বুবলী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ষড়যন্ত্র করে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আমি শান্তি পাব না, আমার স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে না। আমার বাচ্চাদের যারা এতিম করেছে, আমাকে যারা বিধবা করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।'

No comments

Powered by Blogger.