হকির অচলাবস্থায়...-আমাকে সব দিক থেকেই বাধার মুখে পড়তে হয়েছে

কি মাঠে খেলা নেই অনেক দিন। বছর শেষ হতে চলল অথচ প্রিমিয়ার লিগ দলবদলের নামগন্ধও নেই। এ অচলাবস্থা ভাঙতেই দেশের শীর্ষ খেলোয়াড়রা আন্দোলনে নেমেছেন। তিন বছর পর মাঠে গড়ানো যুব হকির ফাইনাল পণ্ড করেছেন তাঁরা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে। ঘটনাটা যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর চোখের সামনে হওয়ায় তিনি উদ্যোগী হয়েছেন এর একটা বিহিত করতে। তাঁর উদ্যোগের প্রথম দফায় ফেডারেশনের ১৬ কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করায় এ অঙ্গনে এখন নতুন করে অচলাবস্থা।


অনিশ্চিত ভবিষ্যতে একসময়ের জনপ্রিয় খেলাটার জন্য তাই ঠিক কী অপেক্ষা করছে, বর্তমান এ পরিস্থিতিরই বা ব্যাখ্যা কী_জানতেই কালের কণ্ঠ স্পোর্টস কথা বলেছে তিনটি পক্ষের সঙ্গে। যেখানে পদত্যাগকারী সভাপতি খন্দকার জামিল উদ্দিন যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক মামুনুর রহমান চয়ন। মতামত চাওয়া হয়েছে সাবেক খেলোয়াড় ও ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শামসুল বারীরও। সাক্ষাৎকারগুলো নিয়েছেন শাহজাহান কবির

প্রশ্ন : এবার নিশ্চয় আপনার পদত্যাগ পত্র গৃহীত হবে?
খন্দকার জামিল উদ্দিন : হ্যাঁ, এখন তো মন্ত্রীর নির্দেশেই সবাই পদত্যাগ করছে। আমি তখন পদত্যাগ না করলেও এখন হয়তো কাগজ জমা দিতাম। তবে আমি মনে করি এটা সমাধানের পথ হতে পারে না।
প্রশ্ন : আপনার এমন মনে হচ্ছে কেন?
জামিল : দেখুন, আমি জীবনে হকি খেলিনি, হকির লোকও ছিলাম না। তো নতুন হিসেবে কাজ শুরু করতে গিয়ে আমি স্পষ্ট টের পেয়েছি এখানে দুটো গ্রুপ আছে। যারা সব সময়ই গুঁতোগুঁতি করে, এক পক্ষ আরেক পক্ষকে পেছন থেকে টেনে ধরে। সবাই জানে আমি এই দুই পক্ষকে একটা ঐকমত্যে নিয়ে আসার জন্য শুরুতেই চেষ্টা করেছি। কিন্তু সফল হতে পারিনি। তো এই দুই পক্ষকে সমঝোতায় না এনে আসলে সঠিক কোনো পথই পাওয়া যাবে না।
প্রশ্ন : অ্যাডহক কমিটি করা হলে সেখানেও বিরোধটা থেকে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন?
জামিল : না সেই আশঙ্কা করছি না। মন্ত্রী কিন্তু সভায় খুব সুন্দর করেই বলেছেন, তিনি পুরো ব্যাপারটাই অবগত আছেন এবং দুই পক্ষের লোকদের নিয়েই একটা গ্রহণযোগ্য কমিটি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রশ্ন : তাহলে এটা সমাধানের পথ নয় বলছেন কেন?
জামিল : এখনো তো সেই কমিটিটা হয়নি, তাই বলছি। দুই পক্ষের লোকদের নিয়ে কমিটি হলে সেটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবে।
প্রশ্ন : আপনি তাহলে অগ্রহণযোগ্য একটা কমিটি নিয়েই এত দিন কাজ করে গেছেন...
জামিল : শুরুতে আমি কিন্তু দায়িত্বই নিতে চাইনি। তখন আমাকে বলা হলো আপনি শুধু স্পনসরের দিকটা দেখবেন, জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধাগুলো নিয়ে ভাববেন। আমি তো সেগুলো করেছি, জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের বিদেশে খেলার সুযোগ করে দিয়েছি, স্পনসরের দিকটাও দেখছিলাম কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই তো যত সমস্যা।
প্রশ্ন : কিন্তু অর্থের অভাবেই নাকি যুব হকি করা যাচ্ছিল না, জাতীয় হকিও এখনো হয়নি।
জামিল : নতুন একটা মানুষ, আমাকে তো সবকিছু বুঝে নিতে সময় দিতে হবে, তাই না। এবার তো যুব হকি করলাম।
প্রশ্ন : বুঝে নিতে নিতেই তিন বছর পার!
জামিল : এভাবে বলতে পারেন না, আমাকে সব দিক দিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। সেগুলো সামাল দিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তো সহজ না।

No comments

Powered by Blogger.