ইস্পাত শিল্পে গচ্চা প্রতিদিন গড়ে ৬০ কোটি টাকা

গ্যাসের অভাবে চট্টগ্রামের ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন গড়ে ৬০ কোটি টাকা গচ্চা দিচ্ছে বলে দাবি করেছেন উত্পাদকরা। চট্টগ্রামের প্রধান রড উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাস সঙ্কটের কারণে এই পরিমাণ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার ইস্পাত পণ্য উত্পাদকরা জানান, বন্দর নগরীতে প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার টন রড উত্পাদন হয়।


তারা জানান, গত ২৬ অক্টোবর থেকে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ঘোষণা মোতাবেক সপ্তাহে তিন দিনও গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। অথচ দেশে নরম ইস্পাতের মোট চাহিদার প্রায় শতভাগ এবং দেশের মোট ইস্পাত চাহিদার ৭০ শতাংশই পূরণ করে এই ইস্পাত উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উল্লেখযোগ্য ইস্পাত উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বিএসআরএম, একেএস, আরএসআরএম, কেএসআরএম, এসএআরএম, জিপিএইচ ইস্পাত, বায়েজিদ স্টিল ও ইসলাম স্টিল। এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন পাচ হাজার টনেরও বেশি ইস্পাত উত্পাদন করে। এছাড়া বাকি চল্লিশটির মতো রি-রোলিং মিল উত্পাদন করে আরও পাঁচ হাজার টন ইস্পাত পণ্য।
দেশের সর্ববৃহত্ ইস্পাত উত্পাদনকারী প্রতষ্ঠান বিএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী হুসাইন আকবর আলী বলেন, ‘আমরা হিসাব করে দেখেছি প্রতিদিন ইস্পাত শিল্পে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইস্পাতের নানামাত্রিক চাহিদার এই সময়ে গ্যাস সঙ্কটের কারণে এমএস ইস্পাত (মাইল্ড অ্যান্ড লো কার্বন স্টিল) উত্পাদনে সমস্যা হচ্ছে, যা তৈরি করছে ইস্পাত সঙ্কট।’
তার মতে, যারা গ্যাসের পরিবর্তে ফার্নেস অয়েলের দিকে ঝুঁকছে, তাদের উত্পাদন খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। কারণ, এতে প্রতি টন ইস্পাত উত্পাদন ব্যয়ের সঙ্গে বাড়তি ১৭শ’ টাকা যোগ করতে হবে।
অনেক মিল মালিক আশঙ্কা করছেন, আরও কিছু দিন যদি এমন গ্যাস সঙ্কট চলে, তাহলে তাদের মিল বন্ধ করে দিতে হবে। বিএসআরএম গ্রুপের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের প্রধান ফিরোজ জানান, চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট ও নাসিরাবাদে তাদের দুটো প্রধান রি-রোলিং মিল রয়েছে। অথচ গ্যাস সঙ্কটের কারণে ওই দুটি মিলের উত্পাদন কমে গেছে ৪৫ শতাংশ। তিনি বলেন, গ্যাস সঙ্কটের কারণে রড, অ্যাঙ্গেল, চ্যানেল ও অন্যান্য ইস্পাতজাত পণ্যের দাম বেড়ে যাবে।’

No comments

Powered by Blogger.