কচুয়া চরফ্যাশন ও সেনবাগে হামলায় আহত ৩৭

বাগেরহাটের কচুয়া, ভোলার চরফ্যাশন ও নোয়াখালীর সেনবাগে হামলায় ৩৭ জন আহত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত :বাগেরহাট : বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বিলকুল গ্রামের পুলিশ সদস্য মো. জনাব আলীর বাড়িতে হামলা করে সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় বাঁধাল ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আ. কাদেরের পরিচয়ে একদল সন্ত্রাসী। গতকাল দুপুরে শতাধিক সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, দা, কুড়াল ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও আত্মীয়দের মারপিট করে বের করে দিয়ে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেয়।


এ সময় সন্ত্রাসীদের মারপিটে পুলিশ সদস্যের স্ত্রী জাহানারা বেগম, মেয়ে হেনা খাতুন ও হাজেরা খাতুন, ছেলে আবদুল্লাহ, ভাই জাফর হওলাদারের স্ত্রী জরিনা বেগম, আ. রব হাওলাদারের স্ত্রী রোজিনা বেগম ও লুত্ফর রহমানের স্ত্রী হালিমা বেগমসহ ৭ জন আহত হন। সন্ত্রাসীরা ঘরে থাকা কোরবানির গরু কেনার জন্য ৬০ হাজার টাকা, টেবিল-চেয়ার, খাট, ফ্যান, আড়াই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবপত্রসহ ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার খবর দেয়া হলেও প্রায় তিন ঘণ্টা পরে কচুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এর মধ্যে সন্ত্রাসীরা বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়ে সর্বস্ব লুটপাট করে চলে যায় বলে পুলিশ সদস্যের স্ত্রী জাহানারা অভিযোগ করেছেন। পুলিশ সদস্য মো. জনাব আলী হাওলাদার তার চাকরিস্থল সাতক্ষীরা সদর থানায় কর্মরত রয়েছেন। পরিবারটি এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যের স্ত্রী জাহানার বেগম বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি মামলা করেছেন। ঘটনাস্থল পরির্দশনকারী কচুয়া থানার এসআই আলমগীর হোসেন জানান, পুলিশ সদস্য
মো. জনাব আলীর বসতবাড়ি সন্ত্রাসীরা একেবারেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বাঁধাল ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাদের জানান, এ ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তার লোকজনের এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় তিনি অস্বীকার করেন।
চরফ্যাশন (ভোলা) : চরফ্যাশনের মাদ্রাজে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত চারজনকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতদের প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়েছে। হামলায় আহতদের মধ্যে মান্নান, রিপন, মিজান, জামাল ও রফিককে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চরফ্যাশন থানার ওসি রিয়াজ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সেনবাগ (নোয়াখালী) : কোরবানির হাট ইজারাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার নোয়াখালীর সেনবাগের বিরাহিমপুর বাজারে সন্ত্রাসীদের হামলায় বাজার লুট ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই বাজারের সভাপতিসহ কমপক্ষে ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন বাজার কমিটির সভাপতি বাবুল আহমেদ, কামাল, হানিফ, কালু, নজির আহমেদ, তবারক উল্লা, মো. ফারুক। এদের সোনাইমুড়ী ও বজরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়। বাজারে হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদে গতকাল ওই বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের বিরাহিমপুর বাজারের গরুর হাটের নিলাম ওই বাজারের জামে মসজিদের উন্নয়নের জন্য নেয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার ছিল ওই বাজারের হাট-বার। বসন্তপুর গ্রামের আমিন উল্লা মেম্বারের ছেলে অহিদুর রহমান গরুর বাজারের নিলাম না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়। ওই হাট-বারে অহিদুর রহমানের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর, লিটন ও চোরা মানিকসহ ২০-২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী এসে অতর্কিতভাবে গরুর বাজারে হামলা ও লুটপাট শুরু করে। এসময় বাজারের ব্যবসায়ীরা দিগ্বিদিক ছুটোছুটি শুরু করেন।
বাজারের সভাপতি বাবুল আহমেদ সন্ত্রাসীদের বাধা দিলে তারা বাবুল আহমেদসহ ১০-১২ জনকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এবং বাজার সভাপতি বাবুল আহমেদের দুটি অটোরিকশা নিয়ে যায়। সেনবাগ থানার এএসআই মো. হান্নানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্যর্থ হয়।

No comments

Powered by Blogger.