সুন্দরী নীল বনলতা by সৌরভ মাহমদু

হু দূরে অদৃশ্য নীলাকাশ। চোখের সামনে উঁচু-নিচু পাহাড়। সবুজ যেন উঁচু থেকে বেয়ে নেমে গেছে সমতলে। একটু দূরে দেখা যাচ্ছে আদিবাসী মেয়ে বসে বসে স্বপম্ন বুনছে ভালোবাসার। ফুলের মতোই যেন সে ফুটে আছে পাহাড়ের সবুজে। অচেনা পাখিরা উড়ে চলেছে। পাহাড়ের চারদিকে অনেক ঝোপঝাড়। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। চোখ জুড়িয়ে যায়, মন ভরে ওঠে। মনে হয় যেন হাজার বছর ধরে এভাবে কাটিয়ে দিই এখানে প্রকৃতির রূপ-রস-গন্দ-সুধায়।

জায়গাটা শেরপুরের গজনীর অবকাশযাপন কেন্দ্র। এখানে শেঘ আর পাহড়ের অভিসার চলে নিত্যদিন। পাহাড়ের গায়ে ফুটে আছে নাম না জানা হাজারো ফুল। হঠাৎ চোখ আটকে গেল নীলচে এফুলের আকর্ষণে। সাদাটে নীলচে ফুলগুলো ছাপিয়ে আছে পাহাড়ি টিলার গা বেয়ে। অপূর্ব এক উচ্ছ্বাসের ভঙ্গিতে ছেয়ে আছে চারপাশ। এর নাম 'নীল বনলতা'। বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রামে এই প্রজাতির দেখা মেলে বেশি। আছে শেরপুরের শালবনেও। এছাড়া সারা দেশের আনাচে-কানাচে হঠাৎ হঠাৎ দেখা মেলে। কাষ্ঠল লতা, ভুমি থেকে পাহড়ের গা বেয়ে ৮-১০ মিটার ওপরে ওঠে। পাতার বোঁটা মোড়ানো। পাতা রুক্ষ, আগা চোখা। ফুল লম্বা, ঝুলন্ত ডাঁটায় ফুল ফোটে এক বা একাধিক।
ঘণ্টার মতো ফুলের গড়ন, দল নল সামান্য বাঁকা, পাপড়ি পাঁচটি, অসমান, হালকা নীল, ৬ সেমি লম্বা, ফুল ফোটে মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। ফল শক্ত।

উদ্যানে কিংবা বাড়ির ছোট্ট বাগানে ঝাঁকা কিংবা মাচা তৈরি করে এদের লাগানো হলে ফুলের বাহার দেখে আপনার প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। বিশেষ খবর বিভিন্ন দেশে এর কদর আছে। আর উন্নত বিশেষ খব গাডরাউন প্ল্যান্ট হিসেবে খ্যাতি কুড়িয়েছে এই নীল বনলতা। আমাদের কাছের স্বজন এই ফুল বছরের প্রায় নয় মাস মেলে ধরে থাকে এর সৌন্দর্য। তাই এটি বাগানের জন্য খুবই উপযোগী একটি ফুল। আর ইচ্ছে করলেই অধিক মাত্রায় এর চাষ করে বাণিজি্যকভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। আমাদের নিজস্ব এ বনলতা দিয়ে আমরাও সাজাতে পারি আমাদের ব্যক্তিগত বাগান।

No comments

Powered by Blogger.