পেখম তোলা পক্ষী by সিরাজুল ইসলাম

পৃথিবী থেকে অনেক প্রাণী ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে আরো অনেক প্রাণী। ক্রমর্বধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে উজাড় হচ্ছে বনজঙ্গল। ফলে খদ্যো ও আবাসস্থলের চরম সংকটে পড়ছে বন্যপ্রাণীরা। সে সঙ্গে চোরাকারবারি ও শিকারিদের নির্বিচার নিধনের ফলে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বিপন্ন বন্যপ্রাণীর জীবন। আর তাই দারুণ উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা।

১৯৯১ সালে বিশ্ব বন্যপ্রাণী সংস্থা এক রিপোটরাউ ১৯৪৭ সালের তুলনায় ময়হৃরের সংখ্যা অধরাউকে নেমে এসেছে বলে উল্লেখ করে। আর ১৯৯১ থেকে ২০০৭ সাল অর্থাৎ দীর্ঘ ১৬ বছরে ময়হৃরের সংখ্যা তো বাড়েইনি বরং কমেছে দ্রুতগতিতে। ভারতে '৭২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে বিভিন্ন প্রজাতির ময়হৃর এক নম্বর তফসিলভুক্ত হয় এবং ময়হৃর হত্যা বা শিকার করা সেখানে আইনত দ-নীয় অপরাধ। তারপরও থেমে নেই চোরা পক্ষি শিকারিরা। তাই ময়হৃর বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে ভারতের 'নন্দন কানন' প্রাণী উদ্যান ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। প্রকল্পের অংশ হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে ৬টি ডিম কৃত্রিমভাবে তা দিয়ে ৬টি ময়হৃরছানা পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৪টি সাদা এবং ২টি স্বাভাবিক রঙের। উড়িষ্যা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুবিজ্ঞান বিভাগের পশুশালায় নির্দিষ্ঠ তাপমাত্রা ও আদর্্রতায় ২৮ দিন তা দেওয়ার পর ডিমগুলো সফলভাবে ফোটানো সম্ভব হয়। ৬টি ছানাসহ নন্দন কাননে ময়হৃরের সংখ্যা এখন ১৪টি। যার মধ্যে ৭টিই সাদা। নন্দন কাননের পশু চিকিৎসক ও প্রাণীবিজ্ঞানী পিকে রায় জানান, গত দু'বছরের মধ্যে নন্দন কাননে বন্দি অবস্থায় কোনো ময়হৃরের ডিম ফুটে বাচ্চা হয়নি। কেননা বন্দি অবস্থায় তাদের প্রজননের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ছিল না ডিম তা দিয়ে ফোটানোর ব্যবস্থাও। ফলে এ সময় ১০০টিরও বেশি ডিম নষ্ঠ হয়ে যায়। অবস্থা বুঝে কর্তৃপক্ষ কৃত্রিমভাবে ডিম ফোটানোর ব্যবস্থা করেন এবং ৬টি ডিম পরীক্ষামূলকভাবে কৃত্রিম উপায়ে তা দিয়ে সফলভাবে ফোটানো সম্ভব হয়। এতে কর্তৃপক্ষ উৎসাহিত হয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন ময়হৃরের কৃত্রিম প্রজনন করাতে। এর আগেও তারা পান্ডা, গরিলা ও হাতি রক্ষায় বেশ সফল হয়েছেন এবং শকুনের জন্যও অনুরূপ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। আর আমরাও আশা করব যে করেই হোক ময়হৃরের সংখা বৃদ্ধি পাক, টিকে থাক নান্দনিক এই পাখি।

No comments

Powered by Blogger.