বার্ধকেয়ার অসুখ স্মরণশক্তি কমে যাওয়া by মিজানুর রহমান কল্লোল

বার্ধকেয়া স্মরণশক্তি কমে যাওয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা। পারিবারিকভাবে ও সামাজিকভাবে এটা অনেক সময় বিব্রতকর ও বিড়ম্বনাময়। সাধারণভাবে বলা হয়, তালকানা বা ভুলোমনা। কোনো কিছু মনে থাকে না। কোনো কিছু বলে বা করে হয়তো বলেন, করিনি বা বলিনি। কিন্তু কেন এমন হয়? সম্ভবত মস্তিষ্ফ্ক বা কেন্দ্রীয় স্টম্নায়ুতনে্পর পরির্বতন এবং কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে। বিভিন্ন ধরনের অসুখ এবং ফিদ্ধ রেডিক্যালস স্টম্নায়ুকোষ আঘাত হেনে স্টম্নায়ুকোষগুলোকে দুর্বল করে দেয়।

সুস্থ ও সচেতন হওয়া সত্ত্বেও স্মরণশক্তি কমে যায়। এগুলোকে ডাক্তারি ভাষায় 'ডিমেনশিয়া' বলে। ডিমেনশিয়ার অজস্র কারণ রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ব্রেইনের অসুখে এটা বার্ধক্য আসার আগেও হতে পারে। মস্তিষ্ফে্কর স্টম্নায়ুকোষের প্রদাহ ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস যে কোনো কারণেই হতে পারে। হতে পারে মস্তিষ্ফে্ক আঘাতজনিত কারণে। তাছাড়া মস্তিষ্ফে্কর ধমনীতে প্রদাহ, এক বা একাধিকবার স্ট্রোক, ক্যান্সার কোষ মস্তিষ্ফে্ক ছড়িয়ে পড়া, অতিরিক্ত মদ্যপান, ভিটামিন বি-১ ও বি-১২-এর স্বল্পতা, নিউরোসিফিলিস, এইডস, আলঝেইমার ও পারকিনসন রোগ 'ডিমেনশিয়া' সৃষ্টি করে থাকে। ইনফেকশন এবং ভিটামিনের অভাবজনিত কারণে ডিমেনশিয়া ভালো করা সম্ভব যথাসময়ে এবং যথাযথভাবে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে। দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস মস্তিষ্ফে্কর স্টম্নায়ুকোষের প্রভূত ক্ষতিসাধন করে ডিমেনশিয়া তৈরি করতে পারে। অতএব ডায়াবেটিস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। স্ট্রোক যাতে না হয় বা বারবার না হয় সেজন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। ধহৃমপান করা যাবে না, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
আলঝেইমার ও পারকিনসন রোগের নিরাময়যোগ্য কোনো ভালো চিকিৎসা নেই। যেসব কারণে ডিমেনশিয়া হয় সেসব কারণে বদুিব্দমত্তা কমে যেতে পারে, সৃজনশীলতা হ্রাস পেতে পারে, মানসিক জড়তা ও স্থবিরতা আসতে পারে। কাজেই বার্ধকেয়ার এসব মারাত্নক অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকতে হলে বুড়ো হওয়ার আগেই এসব রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
ডিমেনশিয়া বা স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার প্রধান প্রধান কারণ
ষ আলঝেইমার রোগ, ষ ভাসকুলার-মস্তিষ্ফে্ক ছোট ছোট স্ট্রোক বা একাধিক স্ট্রোক,  মাদকাসক্ততা পারকিনসন রোগ, ওষুধের বিষক্রিয়া অন্যান্য কারণঃ
ভিটামিন বি-১, বি-১২ ও নিকোটিনিক এসিডের অভাব। শরীরে বিভিন্ন হরমোন কমে যাওয়া যেমন থাইরয়েড হরমোন। ষ প্রধান অঙ্গগুলো ঠিকমতো কাজ না করা যেমন কিডনি, লিভার ও ফুসফুস অপরিমিত কাজ করা। ষ ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী জীবাণু সংক্রমণ যেমন এইডস, নিউরোসিফিলিস, প্রাইয়ন রোগ, ভাইরাস, যক্ষ্মা, সারকয়ডসিস ইত্যাদি। ষ মস্তিষ্ফে্ক আঘাতের জটিলতা। ষ ব্রেইন টিউমার অথবা মস্তিষ্ফে্ক ক্যান্সারের জীবাণু ছড়িয়ে পড়া। ষ ওষুধ, কীটনাশক বা দূষিত পরিবেশের বিষক্রিয়া। ষ দীর্ঘমেয়াদি বিষণম্নতা ও সিজোফ্রেনিয়া। ষ মস্তিষ্ফে্ক স্টম্নায়বিক ক্ষয়জনিত একাধিক রোগ।

No comments

Powered by Blogger.