লক্ষ্য অর্জনে অনেক পিছিয়ে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী

আফগান যুদ্ধের ১০ বছর পেরিয়ে গেল। কিন্তু মার্কিন ও ন্যাটো নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী এখনো তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। জোট বাহিনীর সাবেক এক কমান্ডার মনে করেন এ কথা।
গতকাল শুক্রবার ছিল আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সেনা অভিযানের দশম বর্ষপূর্তি। এ উপলক্ষে মার্কিন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল স্টানলি ম্যাকক্রিস্টাল বলেন, একটি ভীতিকর দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এ যুদ্ধ শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই যুদ্ধের সফল সমাপ্তি কীভাবে সম্ভব, এখনো তারা তা সঠিকভাবে জানে না।
৯/১১-র হামলার পর আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরার অজুহাতে আফগানিস্তানে ‘অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম’ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের হিসাব মতে, এই যুদ্ধে শেষ পাঁচ বছরেই নিহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক। নিহত হয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি বিদেশি সেনা, যার অধিকাংশই মার্কিন সেনা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ বলে পরিচিত ভিয়েতনাম যুদ্ধকেও ছাড়িয়ে গেছে আফগান যুদ্ধ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বেসরকারি সাহায্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, গত এক দশকে আফগানিস্তানে ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু এই বিশাল অর্থ আসলে তেমন কোনো উন্নয়নকাজে আসেনি। যদিও কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে, যেমন স্বাস্থ্য খাত।
২০০১ সালে যেখানে মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পেত, এখন সেই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ শতাংশ।
আফগানিস্তানকে সহযোগিতা দিচ্ছে এমন সব বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ক প্রতিষ্ঠান এসিবিএআরের পরিচালক অ্যানি গারেলা বলেন, উন্নয়নের এই পরিসংখ্যানের আড়ালে আসলে মানুষকে এখনো চিকিৎসাসেবা পেতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। ক্লিনিকে চিকিৎসক নেই, নেই ওষুধ-সরঞ্জাম। পাঠ্যবই ছাড়াই ক্লাসে পড়াশোনার চেষ্টা করছে শিক্ষার্থীরা।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল চলতি সপ্তাহে আফগানিস্তানে মানবাধিকার আইন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি এবং নারীর প্রতি বৈষম্য হ্রাসের অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে বিচার বিভাগ, পুলিশের কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা ও বাস্তুচ্যুতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থার মতে, এসব ক্ষেত্রে পরিস্থিতি হয় আগের মতো আছে, নয়তো আরও অবনতি হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.