আলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু

সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদেও দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। কে পাচ্ছেন মনোনয়ন এ নিয়ে ইতিমধ্যে দলের অভ্যন্তরেও জোরেশোরে আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, শেষ পর্যন্ত ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে পারে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী আঁখীর।
এ আসনে উপনির্বাচনে আরও উল্লেখযোগ্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ও শিল্পপতি লুৎফর রহমান দিলু, তাড়াশ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী আমজাদ হোসেন মিলন, কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট, রায়গঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি স্বপন কুমার রায়, ঢাকা মহানগর (উত্তর) মহিলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রিটা কে আফজাল, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাদী আল মাদী জিন্নাহ এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর।আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, এ আসনে প্রাথমিকভাবে একজন নারীকে মনোনয়ন দেয়ার চিন্তা করেছিল আওয়ামী লীগ এবং শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে রিটা কে আফজাল উল্লেখযোগ্য প্রার্থী। কিন্তু ইতিমধ্যে এ আসনে প্রার্থী মনোনয়নের চিন্তায় ঘটেছে নতুন মেরুকরণ। সিরাজগঞ্জ থেকে এবারই প্রথম সংসদ সদস্য হওয়া একজনের চাওয়াকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে সূত্রগুলো জানায়। এই সংসদ সদস্যের আশীর্বাদপুষ্ট মনোনয়ন প্রত্যাশী হচ্ছেন আঁখী। তবে শেষ পর্যন্ত ওই সংসদ সদস্যের মতামতই মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে বলে সূত্রগুলো মনে করছে।এছাড়া লুৎফর রহমান দিলুও শক্ত প্রার্থী। তিনি যেমন সাংগঠনিকভাবেও পরিচিত, তেমনি শিল্পপতি হওয়ায় প্রচুর টাকারও মালিক। স্থানীয় পর্যায়ে এবং কেন্দ্রীয়ভাবেও তার রয়েছে শক্ত যোগাযোগ।মনোনয়ন পেতে পারেন হোসেন মনসুরও। তার ভালোমানুষি ইমেজ এবং দেশব্যাপী পরিচিতির কারণে তিনি মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শক্তভাবে আলোচনায় রয়েছেন। তবে তার নেতিবাচক দিক হল তিনি অরাজনৈতিক ব্যক্তি এবং এলাকায় কোনো প্রভাব বলয় নেই।আলোচনায় রয়েছেন কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট এবং তাড়াশ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী আমজাদ হোসেন মিলনও। তাদের দুজনেরই সাংগঠনিক ভিত মজবুত এবং নির্বাচনী আসনেও রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। দুজনেই সংগঠনের নানা পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে এদের একজনকে বেছে নিলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।এ আসনের মনোনয়নের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ যুগান্তরকে বলেন, দলের সংসদীয় বোর্ড সবকিছু যাচাই-বাছাই করে যোগ্যতম প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে।সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ইসহাক আলী তালুকদার ৬ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করলে এই আসন শূন্য হয়। এ আসনে উপনির্বাচন হবে ২৩ ডিসেম্বর। নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার এ উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা ২০ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। ২২ নভেম্বর যাচাই-বাছাইয়ের পর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে।প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ শুক্রবার দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক করে শনি, রবি ও সোমবার দলীয় ফরম সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয় আগ্রহীদের। ১৭ নভেম্বর সংসদীয় বোর্ডে আগ্রহীদের সাক্ষাৎকার শেষে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করা হবে।রায়গঞ্জ-তাড়াশ উপজেলার মোট ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৩ সংসদীয় আসন গঠিত। সম্ভাব্য মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩১, ভোটকক্ষ ৬৯৫টি। মোট ভোটার ৩ লাখ ৩১ হাজার ৩৩৬ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৯ এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৯৭ জন।প্রথম দিনে পাঁচটি মনোনয়ন ফরম বিক্রি : প্রথম দিনে আওয়ামী লীগের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন পাঁচজন। শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কার্যালয়ে এসে তারা ফরম সংগ্রহ করেন। তবে, প্রথম দিনে কোনো ফরম জমা হয়নি।আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ যুগান্তরকে জানান, প্রথম দিনে কৃষক লীগের সাখাওয়াত হোসেন সুইট, ডা. আজিজ, সিরাজ উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী ও সাইদুল ইসলাম খান মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.