অস্ত্রই খুঁজে নেবে হামলার লক্ষ্য

চালকবিহীন সশস্ত্র বিমান (ড্রোন) এখন যুদ্ধক্ষেত্রের হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে। প্রযুক্তিবিদেরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলছেন, ভবিষ্যতে মানুষের ওপর নির্ভরতা কমে অস্ত্র নিজেই ঠিক করে নেবে কোথায় আঘাত হানতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলের কাছাকাছি এলাকায় বোমারু বিমান বি-ওয়ান থেকে গত বছর পরীক্ষামূলক গোলাবর্ষণ করা হয়। বলা হচ্ছে, এটি যুদ্ধের নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। বিমানটির আরোহী পাইলটেরা প্রাথমিকভাবে এতে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রটির লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু গন্তব্যের পথে অর্ধেক পাড়ি দেওয়ার পর তা যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনটি জাহাজের মধ্যে থাকা মানুষবিহীন ২৬০ ফুট উঁচু একটি রণতরিতে আঘাত হানে।
বিজ্ঞানীরা এখন এ ধরনের বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করছেন, যেগুলো মানুষের পরিবর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) প্রযুক্তিতে কাজ করবে। এ ক্ষেত্রে কাকে আঘাত করতে হবে, তা অস্ত্র নিজেই ঠিক করে নেবে।
লকহিড মার্টিন কোম্পানির তৈরি জাহাজবিধ্বংসী এলআরএএস ক্ষেপণাস্ত্র নতুন যুগের অস্ত্রগুলোর একটি। সমালোচকেরা বলছেন, সুবিধার পাশাপাশি অত্যাধুনিক সমর প্রযুক্তির কিছু সমস্যাও আছে। ‘নিজের মেধা’ থাকায় একসময় হয়তো অস্ত্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের জন্যই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। নিখুঁতভাবে ব্যবহার করার ফলে বেসামরিক জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, তেমনি মানুষের অসতর্কতায় সহজেই যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকবে।

>>এলআরএএস ক্ষেপণাস্ত্র l ছবি: লকহিড মার্টিন
যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল ও নরওয়ে মানুষের নিয়ন্ত্রণবিহীন রাডার, ট্যাংক বা জাহাজে হামলা করার উপযোগী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ ক্ষেপণাস্ত্র ট্যাংক ও সাধারণ গাড়ির মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারে এবং এআই প্রযুক্তির সেন্সরের সাহায্যে লক্ষ্য নির্ধারণ করে আঘাত হানতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গবেষণাকেন্দ্রের পদার্থবিদ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ স্টিভ অ্যামোহুনড্রো বলেন, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের প্রতিযোগিতা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এ নিয়ে প্রতিযোগিতার সম্ভাব্য উত্থানে উদ্বিগ্ন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আগামী বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে অংশ নেবেন। এসব অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা হবে কি না, সেখানে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

No comments

Powered by Blogger.