আরিফুলের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেটে সোমবার হরতাল

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নাম প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার সিলেটে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ‘আমরা সিলেটবাসী’ নামের একটি সংগঠন। আজ শনিবার বিকেলে নগরের কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ করে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক হরতাল ডাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সোমবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সিলেট মহানগরসহ জেলার সব থানায় হরতাল পালন করা হবে।’ তিনি আরও জানান, হরতাল ঘোষণার পর সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ থেকে সংগঠনের (আমরা সিলেটবাসী) নেতৃবৃন্দ হরতালের পক্ষে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া সিলেট শহরের বিভিন্ন বিপণি বিতানের ১৩টি সংগঠন হরতালের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে বলে জানান আবদুর রাজ্জাক।
গত বৃহস্পতিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এস এম কিবরিয়া হত্যা মামলার চতুর্থ দফার সম্পূরক অভিযোগপত্র হবিগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে দাখিল করে। অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতাসহ নয়জনকে নতুন করে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে মামলার আসামির সংখ্যা দাঁড়াল ৩৫। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নামও রয়েছে।
এদিকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপি নেতাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে অভিযোগ তুলে আজ সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলন থেকে কাল রোববার সিলেটের কোর্ট পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশে ডেকেছে জেলা ও নগর বিএনপি। বিএনপির দলীয় কর্মসূচির আগেই ‘আমরা সিলেটবাসী’র ব্যানারে হরতাল ঘোষণা করা হয়।
আজ বিকেলে হরতাল ঘোষণার আগে ‘আমরা সিলেটবাসী’র ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে আবদুর রাজ্জাক হরতাল ঘোষণা করে বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কিবরিয়া হত্যার সম্পূরক অভিযোগপত্রে সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সিলেট নগরবাসীর বিপুল ভোটে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্র কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হরতাল আহবান করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে একটি ঈদ–পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী। হামলায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। মারাত্মক আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ-১ আসনের বতর্মান সাংসদ আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করেন।

No comments

Powered by Blogger.