অনেক প্রত্যাশা এখনও অপূর্ণ-টেলিফোনে নাগরিক মন্তব্য

মহাজোট সরকারের চার বছর পূর্ণ হলো। নির্বাচনী ইশতেহারের বিশাল অঙ্গীকার সামনে রেখে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করে। সরকারের চার বছর নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা জনমত জরিপ করে।
সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতার নানা দিক নিয়ে অভিমত জানিয়েছেন পাঠকরা। গ্রন্থনা করেছেন
একরামুল হক শামীম, মাহফুজুর রহমান মানিক ও ইলিয়াস কমল

মো. মামুন
শিক্ষক, ফেনী শিশুনিকেতন
দিনবদলের স্বপ্ন দেখিয়ে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসে। দিনবদলের নামে আমরা দেখেছি পিলখানার হত্যাকাণ্ড, শেয়ারবাজারে ধস, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, একাধিকবার তেল-গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি, রেলের কালো বিড়াল এবং বিশ্বজিতের লাশ। সরকারের দিনবদলের স্বপ্ন মানুষের কাছে স্বপ্নই রয়ে গেল।

মো. মোক্তার হোসেন তালুকদার
ব্যবসায়ী, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ
চার বছর মোটামুটি সফলভাবেই গেছে। নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়ন সন্তোষজনক পরিস্থিতিতে আছে। তবে দুটি বিষয় পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে ভালো হতো। একটি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। এগুলো করতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা।

নাজিম উদ্দিন শোভা
শিক্ষক, টাঙ্গাইল
মহাজোট সরকারকে সফল সরকার বলব। যারা কাজ করে তাদের দোষও হয়। হলমার্ক, পদ্মা সেতুতে যদি কোনো দুর্নীতি হয় তার বিচার করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ হওয়া উচিত। মন্ত্রীদের কথা কম বলে কাজ বেশি করা উচিত। নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলোকে পূর্ণ করা চাই।
আমির উদ্দিন শিহাব
লেখক, সিলেট
মহাজোট সরকারের তিনটি খাতে সাফল্য আছে_ শিক্ষা, জঙ্গিবাদ নির্মূল আর কৃষি। এ ছাড়া সবকিছুতেই তারা ব্যর্থ। শেয়ার কেলেঙ্কারি, সাগর-রুনি হত্যার বিচার, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইত্যাদি। বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতায়ও তারা ব্যর্থ। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুর সমাধান হয়নি।
খোকন আহমেদ সালমান
ব্যবসায়ী, বেলাব, নরসিংদী
সরকারের ব্যর্থতা ও সফলতা উভয়ই আছে। শিক্ষা ও কৃষিতে তারা সফল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পদ্মা সেতুতে ব্যর্থতা আছে। আমাদের এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি।
আবদুল মতিন মামুন
ব্যবসায়ী, আত্রাই, নওগাঁ
সরকারের সফলতার পাল্লা ভারী, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সন্তোষজনক। সর্বহারার দাপট কমেছে। শিক্ষা, কৃষি, গ্রামে উন্নয়ন হয়েছে।
গোলাম মোস্তফা
ইউনানি চিকিৎসক, পাবনা
সরকারের ব্যর্থতা বেশি। শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতু, ডেসটিনি, রেলে ব্যর্থ।
সুবল কান্তি দে
শিক্ষার্থী, মহেশখালী, কক্সবাজার
অনেক বিষয়ে আরও মনোযোগ দেওয়া দরকার_ শিক্ষা, অর্থনীতি ইত্যাদি। সরকারকে জনগণের জন্য কাজ করতে হবে।
দেলোয়ার হোসেন দেলু
সংগঠক, নারায়ণগঞ্জ
হোঁচট খেয়েছে মহাজোটের দিনবদল। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো উন্নয়ন হয়নি; হয়েছে মহাজোট নেতাকর্মীদের ভাগ্যের। বিরোধী দল হিসেবে যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে ১৮ দলীয় জোট।
বিজয়
ব্যবসায়ী, মাগুরা
সরকারের চার বছরে যেমন সফলতা, তেমনি ব্যর্থতা রয়েছে। সফলতা কৃষি, শিক্ষা, বিডিআর বিদ্রোহ, শেখ মুজিবের খুনিদের বিচার, জঙ্গিবাদ দমন। ব্যর্থতা রয়েছে সাংবাদিক হত্যা, হলমার্ক কেলেঙ্কারিসহ অনেক বিষয়ে।
ফারুক হোসেন
সাংবাদিক, রাজশাহী
সফলতার বড় অর্জন থাকলেও ব্যর্থতা রয়েছে। চার বছরে উন্নয়ন হয়েছে। কিছু ব্যর্থতা এগুলোকে ম্লান করে দিয়েছে। বাকি সময়ে সরকার প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করি।
মোস্তাফিজুর রহমান
শিক্ষক, ময়মনসিংহ
সন্ত্রাস দমন, জঙ্গিবাদ দমন, শিক্ষানীতি উপহার এবং সমুদ্রজয়সহ সফলতা রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের দুর্নীতি, ক্রসফায়ার, গুম ইত্যাদি ন্যক্কারজনক কাজগুলো সফলতাকে ম্লান করেছে। আসলে সরকারের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী।
শিব সরকার
ব্যবসায়ী, ফুলতলা, খুলনা
বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে সরকার বলল, খুনিরা ছাত্রলীগের নয়। কিন্তু অবশেষে ছাত্রলীগই প্রমাণিত হলো। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিই প্রধান ব্যর্থতা।
ফয়সাল আহমদ সোহান
শিক্ষার্থী, বাকৃবি, ময়মনসিংহ
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হয়েছে। শিক্ষায় সফলতা এসেছে। কিন্তু রাজনৈতিক সমঝোতায় সরকার ব্যর্থ। জঙ্গিবাদসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করাও তাদের সফলতা রয়েছে। এসব সফলতা যেন অন্যান্য দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যেতে না পারার কারণে ভেস্তে না যায়।
মো. রফিকুল আনাম
ব্যবসায়ী, পটিয়া, চট্টগ্রাম
মহাজোট সরকারের এই আমল আগের বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের চেয়ে ভালো। শিক্ষার্থীদের বছরের প্রথম দিনেই বই দেওয়া, বিদ্যুৎ সংকট সমাধান, গ্রামীণ অর্থনীতি মানুষের দোরগোড়ায় পেঁৗছে দিয়েছে সরকার।
সুমিত বণিক ও অমিত বণিক
উন্নয়ন কর্মী, কিশোরগঞ্জ
চার বছর চলে গেল। সাফল্য-ব্যর্থতার মিশেলে সময় অতিক্রান্ত করেছে। বিশাল অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এলেও অনেক অঙ্গীকারই বাস্তবায়ন করতে পারেনি। ফলে তাদের অগি্নপরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে।
মো. কুদ্দুস মিয়া
শিক্ষক, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ
সরকারের সফলতা অনেক। হলমার্ক কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতুতে ব্যর্থতা রয়েছে। সরকারের কিছু মন্ত্রী এর জন্য দায়ী।
ডা. সুমন সূত্রধর
চিকিৎসক, ওসমানীনগর, সিলেট
সরকারের সবচেয়ে সফলতা বেশি শিক্ষায়। বই বিতরণ, উপবৃত্তি প্রদানে গুণগত মান উন্নয়ন হয়েছে। গ্রামের অনেক শিক্ষার্থীর বই কেনার টাকা থাকত না। এখন তারা বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। তারা স্কুলে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। তবে রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। এদিকে সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত।
হুমায়ুন কবির রুমু
ব্যবসায়ী, রংপুর
চার বছরে সরকার খুন, ধর্ষণ, ব্যবসা সিন্ডিকেট ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। বিএনপির সময়ে একটা হাওয়া ভবন ছিল। এখন অনেক হাওয়া ভবন হয়েছে। জনগণের কোনো প্রতিশ্রুতিই তারা রক্ষা করেনি।
মো. সেলিম
ব্যবসায়ী, ছাতক, সুনামগঞ্জ
এত ঘন ঘন হরতাল হচ্ছে কেন? এতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সরকার যেন ব্যবস্থা নেয়।
বাদল চন্দ্র সরকার
শ্রমিক নেতা, কুমিল্লা
সরকার বলেছে, দ্রব্যমূল্যের দাম কমাবে অথচ তারা কমায়নি। এখন শীতকালেও সবজির দাম অনেক বেশি। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর মিথ্যাচারে এক অনিশ্চিতের দিকে যাচ্ছে দেশ। তারা যেন জনগণের জন্য কাজ করেন।
হোসাইন
শিক্ষার্থী, সিলেট
নির্বাচনী ইশতেহারে সরকার অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ঘরে ঘরে চাকরি, বিনামূল্যে সার, দ্রব্যমূল্যে কমতি। অথচ এর কোনোটাই পূরণ হয়নি। যদিও সরকারের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। সরকার তার প্রতিশ্রুতিগুলোর গুরুত্ব না দিয়ে ইচ্ছামতো দেশ চালাচ্ছে। মানবাধিকার পরিস্থিতি, খুন, ধর্ষণ, গুম ইত্যাদি বেড়েছে। তারা যেন নির্বাচনী ইশতেহার দেখে বাকি সময়টা কাটান।
মো. কামাল হোসেন
কৃষক, বরিশাল
গত বছর কৃষি কাজ করে আমার ষাট হাজার টাকা লোকসান গেছে। এ বছরও লোকসান ছাড়া লাভের মুখ দেখছি না। নতুন করে তেলের দাম বাড়ানোটা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
মো. তরিকুল ইসলাম
চাকরিজীবী, কমলাপুর, ঢাকা
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সবক্ষেত্রে লুটপাট, গুম, কেলেঙ্কারির মধ্যেই দেশ চলছে। তারা সবক্ষেত্রে ব্যর্থ। তাদের ক্ষমতায় থাকার আর অধিকার নেই, পদত্যাগ করা উচিত। নির্বাচন হোক তত্ত্বাবধায়কের অধীনে।
হুমায়রা ইসলাম সুমনা
শিক্ষার্থী, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
সরকারের কিছু ব্যর্থতায় সাফল্যের ভালো দিক ম্লান হয়ে গেছে। তবে সবার মন রক্ষা করা কোনো সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়। গত কয়েক দিনে কয়েকটি শীর্ষ পত্রিকায় জনমত জরিপ নিয়ে বিশেষ আয়োজন ছিল। সেখানে সরকারের ভালো-মন্দ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায় মন্দের পাল্লাটা ভারী। তবে এখনও সরকারের হাতে এক বছর সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের তরী যেন ঘাটে এসে ভিড়ে।
ওয়াহিদ মুরাদ
কবি, স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর
চার বছরে আমরা লক্ষ্য করছি, হলমার্কের মতো সমস্যা আর শেয়ারের ভরাডুবি না হলে দেশ ভালোভাবেই চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা, বারবার তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দাম না বাড়ানো, গুম, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার জন্য কৃষককে ব্যাংক থেকে কম দামে ঋণ দিতে হবে। রেমিট্যান্সের বৃহৎ অংশ শিল্পে বিনিয়োগ করলে দেশ এগিয়ে যাবে।
আবু রায়হান
ধানমণ্ডি, ঢাকা
মহাজোট সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালে রাখার। সেটার বাস্তবায়ন হয়নি একদমই। সরকার-বিরোধী দলের মধ্যে এভাবে দ্বন্দ্ব চললে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সংঘাত লেগেই আছে। জ্বালানি তেলের দাম ৫ বার বাড়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। সরকার কর্মের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা বাড়াতে পারত অথচ তারা তা না করায় জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে।
সাকিবুল হাসান
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
সরকার ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, পুরো চার বছরেই ছাত্রলীগ নানা অপকর্ম করেছে।
মো. ইউনুস
ব্যবসায়ী, কুমিল্লা
সরকার সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করেছে।
রাজন ঘোষ
ব্যবসায়ী, কাপাসিয়া, গাজীপুর
সরকারের অনেক অঙ্গীকার এখনও অপূর্ণ। কিন্তু কিছু ভালো দিকও রয়েছে। যেমন বিদ্যুতের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। সরকারের বড় ব্যর্থতা দুর্নীতি। সরকার ন্যায়পাল নিয়োগ দিলে খুবই ভালো হতো।
কুমারেশ বিশ্বাস
শ্রমিক, ঝিনাইদহ টার্মিনাল
ভালো-মন্দ মিলিয়ে মহাজোট সরকার চার বছর পার করেছে। এর মধ্যে ভালো দিকটাই বেশি। বিদ্যুৎ উৎপাদন, জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ, চালের দাম কমানো, তরুণ শিক্ষিত যুবকদের চাকরির ব্যবস্থা, বহির্বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশের শ্রমিক বিদেশে পাঠানো_ এসবই বড় সফলতা। একটা মাত্র ব্যর্থতা আমি খুঁজে পেয়েছি। দলের রাজপথের ত্যাগী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করা।
আবদুর রাজ্জাক
ব্যবসায়ী, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল
মহাজোট সরকার গত চার বছরে জঙ্গি নির্মূল করেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে, শিক্ষায় ভালো করছে। পদ্মা সেতু, হলমার্ক কেলেঙ্কারি সরকারের ব্যর্থতা।
শাহ আলম
ব্যবসায়ী, সিরাজগঞ্জ
এই সরকারের তিনজন মন্ত্রী সফলতা অর্জন করেছেন। তারা হলেন শিক্ষামন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।
মো. আমির হোসেন
ব্যবসায়ী, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল
সরকার ক্ষমতায় আসার আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার ৭০ ভাগই পূরণ করতে পারেনি। তবে খাদ্য ও শিক্ষায় সফলতা পেয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নারী নির্যাতন বেড়েছে। ফলে দেশে অশান্তি বেশি।
তৌহিদ
ব্যবসায়ী, চট্টগ্রাম
গত চার বছরে মহাজোটের সফলতা বেশি। এই সফলতাকে ধরে রাখতে হবে।
আবু সাঈদ মণ্ডল
রাজনীতিক, সিরাজগঞ্জ
বর্তমান সরকারের কিছু সফলতাও আছে, আবার ব্যর্থতাও আছে। আমার মনে হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।
মো. সালাউদ্দীন
চাকরিজীবী, মাগুরা
যতটুকু সমস্যা আছে, আশা করি নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে তা মেটানো সম্ভব হবে।
কামরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর
মানবাধিকার কর্মী, মুন্সীগঞ্জ
মেধাহীন ডিজিটাল সরকারের অদক্ষতা, সিদ্ধান্তহীনতা, দুর্নীতি আর প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতার কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ অধিকাংশ অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ প্রশাসনের সর্বস্তর। দেশপ্রেমিক শ্রমজীবীরা শিল্প কারখানা, গার্মেন্ট ও বিদেশে শ্রম বিক্রি করে রেমিট্যান্স এনে কেন্দ্রীয় মুদ্রাভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। কৃষকরা পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে দেশকে। অথচ সরকারের স্বেচ্ছাচারিতায় ধাপে ধাপে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বাজারে উদ্বৃত্ত খাদ্য রফতানি না করায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে হতাশায় ভুগছে কৃষক। এভাবেই সরকারের সাফল্যগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
রবীন্দ্র কুমার বর্মণ
পিডবি্লউডি চেয়ারম্যান, সখীপুর, টাঙ্গাইল
সরকার আমাদের অঞ্চলে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। তেমনি সারাদেশেও করেছে। তবে সরকারের সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও রয়েছে। ফলে সফলতাগুলো ঢাকা পড়ে গেছে।
মোস্তফা কামাল
সমাজসেবী, কুমিল্লা
সরকার দেশের আর্থ-সামাজিক এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করছে, তা বোঝা যায়। সরকারের চার বছরে ব্যর্থতা থাকলেও দেশের জঙ্গি দমন, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অগ্রগতি লক্ষণীয়। বিরোধী দলের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তাদের সংসদ বর্জন এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অসহযোগিতা দেশকে পেছনের দিক ঠেলে দিয়েছে।
মমিনুল ইসলাম খান
চাকরিজীবী, কারওয়ানবাজার, ঢাকা
অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা প্রশংসাযোগ্য। মন্ত্রিসভা কোনো চমক দেখাতে পারেনি। দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা প্রশংসনীয়। তবে দুর্নীতি দমনের সহজ নীতিতে সরকারকে উদাসীন দেখা গেছে, যা কাম্য নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সরকারের আরও কঠোর ও সচেতন হওয়া প্রয়োজন ছিল। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন প্রশংসাযোগ্য। তবে আবাসিক খাতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা আত্মঘাতী। এর প্রভাব নির্বাচনে পড়তে পারে। এ থেকে সরকারের উত্তরণের চিন্তা করা উচিত।
এমএইচএ দুর্জেয় ফরাজী
চাকরিজীবী, কলাবাগান, ঢাকা
কুলাঙ্গার সন্তানদের অধিক প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে সহোদরদের যেভাবে মূল্যায়ন করতে না পারার যন্ত্রণায় অভিভাবক কাতর থাকেন, বর্তমান মহাজোট সরকার আছে এ অবস্থায়।
শুভ্র,
চাকরিজীবী, ধানমণ্ডি
সরকারের চার বছরে কোনো সফলতা নেই। আর সামনের এক বছর ক্ষমতায় থাকলে দেশের আরও ক্ষতি হবে। তাই সরকারের এখনই পদত্যাগ করা উচিত।
মোহাম্মদ হুমায়ুন আজাদ
ব্যবসায়ী, কিশোরগঞ্জ
বর্তমান সরকার নামে মহাজোট। কাজে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ সরকারের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লা ভারী। তার কারণ, শরিকদের অমূল্যায়ন ও আওয়ামী লীগের একলা চলো নীতি।
আলীপ মাহমুদ অপু
ব্যবসায়ী, আশুলিয়া
মহাজোট সরকারের সফলতা শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন; সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ পর্যায়ে আনা সরকারের প্রধান সফলতা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি, প্রশাসনে সমন্বয়হীনতায় সরকারের ব্যর্থতা রয়েছে। এসব দিকে সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত।
আতাউল গনি
ব্যবসায়ী, ছাতক, সুনামগঞ্জ
শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন, ইসলামবিরোধী সংবিধান বাস্তবায়ন, আলেমদের আন্দোলন করতে না দেওয়া, নারীদের অপরাধী বলে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া অমানবিক। সর্বোপরি সরকারের সফলতা তেমন একটা নেই।
সাইফুল ইসলাম
সাংবাদিক, শিক্ষক, টাঙ্গাইল
মহাজোট সরকারে চার বছরের অনেক অঙ্গীকার এখনও অপূর্ণ রয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান, যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হলেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ক্রসফায়ার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লাগামহীন।

No comments

Powered by Blogger.