পাকিস্তানের শেষ বিকেলের অস্বস্তি

মাঠে দর্শক বলতে বার্মি আর্মির কিছু সদস্য। গ্রায়েম সোয়ান বোলিংয়ে এলেই জোর গলায় গাইল তারা ‘সোয়ান, সোয়ান...তোমাদের ছিঁড়েখুঁড়ে খাবে’। ছিঁড়েখুঁড়ে খেতে পারেননি সোয়ান, পারেননি সাঈদ আজমলের জবাব হতেও। ছিলেন না নিজের সেরা ফর্মেও। তবে দ্বিতীয় দিন শেষে পাকিস্তানের যা খানিকটা অস্বস্তি আর ইংল্যান্ডের তৃপ্তি, তাতে বড় অবদান সোয়ানেরই। কালকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দুটি তো এই অফ স্পিনারই নিলেন।


ইউনুস খানের সঙ্গে হাফিজের জুটিটা (৪৮) যখন জমে উঠেছিল, তখনই সেঞ্চুরির মুখ থেকে ফেরালেন হাফিজকে। শেষ বিকেলে ফেরালেন আস্থার প্রতিমূর্তি হয়ে থাকা মিসবাহ-উল-হককে। দিনের শেষ ওভারে রেহমানকে ফিরিয়েছেন অ্যান্ডারসন, পাকিস্তানের দিনটাও তাই শেষ হলো অস্বস্তি নিয়ে। দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ৯৬ রানের লিড, এগিয়ে রাখতে হবে পাকিস্তানকেই। কিন্তু শুধু কালকের দিনে এগিয়ে রাখতে হবে ইংল্যান্ডকেই। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ম্যাচটাকে পুরো নিজেদের মুঠোয় নিতে পারেনি পাকিস্তান, ইংল্যান্ডের তৃপ্তি ওখানেই!
ইংল্যান্ড ৭ উইকেট তুলে নিয়েছে আসলে ১৭৪ রানে, মোহাম্মদ হাফিজ ও তৌফিক উমর উদ্বোধনী জুটিতেই যে তুলে ফেলেছিলেন ১১৪! পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা উদ্বোধনী জুটিতে কেউই হয়তো শুরুর দিকে রাখবেন না এই জুটিকে। কিন্তু সত্যিটা হলো, শতরানের জুটির বিচারে পাকিস্তানের সফলতম উদ্বোধনী জুটি এটিই। প্রথম দিন বিকেলের দৃঢ়তা কাল সকালেও ধরে রেখেছিলেন দুজন। ইংলিশ বোলারদের সব প্রচেষ্টা মাথা কুটে মরছিল এই দুজনের সতর্ক ব্যাটিংয়ে। জুটিটাকে আলাদা করতে প্রয়োজন ছিল বিশেষ কিছু, সেটা বের হলো স্টুয়ার্ট ব্রডের হাত থেকে। রাউন্ড দ্য উইকেটে করা অসাধারণ এক আউট সুইঙ্গারে বোল্ড তৌফিক।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে একটি ইনিংসই খেলেছিলেন হাফিজ। ২০০৬ সালে ওভালে ওই ইনিংসে আউট হয়েছিলেন ৯৫ রান করে। কালও প্রাপ্য সেঞ্চুরিটা হাত থেকে ফেলে দিলেন। দারুণ খেলছিলেন, হঠাৎই সোয়ানের ফুল লেংথ বলে প্রিয় স্লগ সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লু। দুই ওপেনারের মাঝে ফিরে গেছেন আজহার আলী, স্টুয়ার্ট ব্রডের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে অযথা ডিফেন্স করতে গিয়ে। তিনজন দুই উইকেট করে পেলেও দিনের সেরা বোলার ছিলেন নিঃসন্দেহে ব্রড। নিষ্প্রাণ উইকেটেও সুইং করিয়েছেন, পেয়েছেন ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলার মতো বাউন্স।
দিনের সেরা চমক অবশ্য জোনাথন ট্রট। বল হাতে পেয়ে প্রথম ওভারেই দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে ফিরিয়েছেন পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ভরসা ইউনুসকে। শেষের আগের ওভারে মিসবাহ-আদনানের ৫২ রানের জুটি ভেঙেছেন সোয়ান। লিডটা আরেকটু বাড়াতে এখন আদনান আকমলের দিকেই তাকিয়ে পাকিস্তান। ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.