লেডি গাগা ‘চোর’!

তাঁর কিম্ভূতকিমাকার বেশভূষা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। তাঁর ফ্যাশন নিয়েও তর্ক-বিতর্ক গালগপ্পো কম হয়নি। কয়েকটি মিউজিক ভিডিও সমালোচিত হয়েছে খুল্লামখুল্লা নাচের কারণে। সমকামিতা প্রসঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও অনেকে অনেক কথাই বলে। কিন্তু লেডি গাগা চোর—এমন অপবাদ আগে কখনো জোটেনি। জুটল এবার।


আরেক সংগীত তারকা ম্যাডোনাকে উদ্ধৃত করে ফক্সনিউজ যা শিরোনাম করেছে, সেটার বঙ্গার্থ দাঁড়ায় এই: ‘ম্যাডোনা বললেন লেডি গাগা তাঁর “এক্সপ্রেস ইয়োরসেলফ” গানটি চুরি করেছেন।’
গত ফেব্রুয়ারিতে লেডি গাগা তাঁর ‘বর্ন দিস ওয়ে’ সিঙ্গেলটি প্রকাশ করার পরই কেউ কেউ মৃদু স্বরে গুঞ্জন তুলেছিলেন। সংগীতশিল্পীদের মধ্যে এ নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তোলেন ২০০৬ ‘আমেরিকান আইডল’ দিয়ে আলোচনায় আসা ক্রিস ডাউট্রি। টুইট করেন, ‘মাত্রই লেডি গাগার বর্ন দিস ওয়ে শুনলাম। বলতেই হচ্ছে, এটা শুনতে অনেকটা ম্যাডোনার এক্সপ্রেস মাইসেলফের মতো।’
বড় একটা অগ্নিকাণ্ডের জন্য আগুনের ছোট্ট একটা স্ফুলিঙ্গই লাগে। ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে জমে ওঠে বিতর্ক। গত বছরের আগস্টে এমটিভি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড গানটি পরিবেশন করেছিলেন লেডি গাগা। এক অজানা ব্যক্তি, এর মধ্যে করে বসেন দারুণ এক কাজ। ম্যাডোনার গানটির মিউজিক ভিডিও আর এমটিভি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে গাওয়া গাগার গান তুলে দেন পাশাপাশি একই ভিডিওতে। সেটি পোস্ট করা হয় ইউটিউবে। রীতিমতো ঝড় ওঠে। সেখানে অনেকেই মন্তব্য করেন, এমনকি গাগা এদিন চুলের স্টাইলও করেছেন ম্যাডোনার অনুকরণে। সেখানেই এক ভক্ত মন্তব্য করেন, ‘গাগাকে যে প্রায়ই পপসম্রাজ্ঞীর সঙ্গে তুলনা করা হয়, সেটা মোটেও কাকতালীয় ব্যাপার নয়। ম্যাডোনার নাচের মুদ্রাও গাগা অনুকরণ করেন। সেটা এক পলক দেখলেই বোঝা যায়।’
‘অনুকরণ’ পর্যন্তই ছিল ব্যাপারটা। কিন্তু সেটা চৌর্যবৃত্তির কলঙ্কে পরিণত হলো সদ্যই। এ ব্যাপারে ম্যাডোনা শুরুর দিকে নিশ্চুপ থাকলেও মুখ খোলেন তাঁর ভাই ক্রিস সিসকোন, ‘তাদের ব্যাপারটা খেয়াল করা উচিত ছিল, কারও না কারও বলা উচিত ছিল, দুটো গানই বিস্ময়করভাবে একই রকম। এটা আবার সরাসরি কপিও নয়, অনেকটা সেই রকম।’
গাগা কিন্তু সব সময়ই খোলামেলাভাবে তাঁর ওপর দুই ‘ম’-এর প্রভাবের কথা বলে এসেছেন—মাইকেল জ্যাকসন আর ম্যাডোনা। অনেকেই বলেন, গাগার গানে আছে জ্যাকসনের বলিষ্ঠতা আর আছে ম্যাডোনার যৌনাবেদন। ‘বর্ন দিস ওয়ে’ যে ম্যাডোনার গানে প্রভাবিত, এটাও স্বীকার করেছেন গাগা। এর পরও এত সব বিতর্ক। সবাই তাই মুখিয়ে ছিল ম্যাডোনা কী বলেন শোনার জন্য।
অবশেষে সম্প্রতি এ নিয়ে দুটো সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এই ৫৩ বছর বয়সী। দুই জায়গাতেই তাঁর প্রতিক্রিয়া মিশ্র। এবিসি নিউজকে ম্যাডোনা বলেছেন, ‘ওর অনেক কাজে আমার রেফারেন্স আছে। মাঝেমধ্যে মজাই লাগে, আত্মশ্লাঘা বোধ করি। ওর কাজ ভালোই মনে হয়। ব্যাপারটিকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়। আমি তো আর এতে বিরক্ত হতে পারি না...ও তো আমাকে দিয়েই প্রভাবিত। প্রথম যখন রেডিওতে শুনলাম, মনে হলো, গানটা চেনা চেনা ঠেকছে।’ তবে ম্যাডোনা একটা পাদটীকাও যোগ করে দেন, মনে হয়েছে, তাঁর গানটার চেয়ে এটার মান অনেক নিচে।
 রাজীব হাসান
তথ্য: হলিউড রিপোর্টার

No comments

Powered by Blogger.