দ্রব্যমূল্য আয়ত্তে থাকুক by রাজু আহমেদ বনি

সামনে রমজান মাস। এ সময় নাকি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনির ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পায় রমজানে। আমদানিনির্ভর বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবির মাধ্যমে এর সামান্যই আমদানি করা হয়।
আমদানি ছেড়ে দেওয়া হয় মূলত ব্যবসায়ীদের হাতে। এর ফলে সিন্ডিকেট করে কারসাজির মাধ্যমে তারা বিপুল মুনাফার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। ভুক্তভোগী হয় খেটে খাওয়া মানুষ। বর্তমানে মেহনতি মানুষের সংকট অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
সম্প্রতি ঢাউস আকারের বাজেট পাস হলো সংসদে। বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে সাড়ে ৮ ভাগ। অর্থাৎ গত বছর যে জিনিসের দাম ১০০ টাকা ছিল, সেটি এ বছর আমাদের কিনতে হবে ১০৮.৫০ টাকায়। প্রকৃতপক্ষে মূল্যস্ফীতি বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের নাগাল ছাড়া। বছর শেষে বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়া ও সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। এক অথবা দু'জনের আয় বা পেনশন দিয়ে চার-পাঁচজনের পরিবারের দিনযাপন কষ্টকর। অর্থাৎ দিন দিন ব্যয় বাড়ছে কিন্তু আয় কমেছে।
এই দুরবস্থার কারণ অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, যে দলগুলো দেশ পরিচালনা করেছে, তারা মূলত অর্থনীতির উৎপাদনশীল বিকাশ না ঘটিয়ে লুটপাটকেন্দ্রিক অর্থনীতি গড়ে তুলেছে। ছোট কৃষকের জন্য কৃষি ক্রমেই অলাভজনক হয়েছে। তারা মূলত জমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে মজুর, রিকশা-ভ্যান-ঠেলাওয়ালা, হকার অথবা গার্মেন্ট শ্রমিকে পরিণত হয়েছে। তাদের কাজ, চিকিৎসা, শিক্ষাজীবন সর্বোপরি মৌলিক চাহিদার কোনো নিশ্চয়তা নেই। যেসব মেহনতি মানুষের শ্রমে টিকে আছে বাংলাদেশ, তাদের নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত হয়নি আজও। বরং শাসকরা নিজের আখের গোছানোসহ গত ৩৫ বছরে দুই লাখ কোটি টাকারও বেশি পাচার করেছে বিদেশি ব্যাংকে। হকারদের এসব 'দশ টাকা-বিশ টাকা', 'এক দাম এক দাম' জাতীয় প্যাঁচাল আমলে না নিলেই বরং আমাদের স্বস্তি। আরে বাবা, তুই হকার মানুষ, দিনে যা হয় তা নিয়ে 'নিরামিষ খা আর আলু ঘুম দে'_ এত মাথা ঘামানো তোর দরকার কী? দেশে মাথামোটা লোকের আকাল নাকি! কে শোনে কার কথা, সে আবার ডাক দেয়_ 'বন্ধুগণ, আমাদের দেশ-মাটি নিরাপদ নয়। আসুন, চোখে স্বপ্ন আর বুকে সাহস নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। জনগণের আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলি।' তোমরা বাপু তুলতে থাকো, আমরাও বাহবা দিই!
নড়হরধযসবফ.নফ@মসধরষ.পড়স

No comments

Powered by Blogger.