কুড়িগ্রামে সৌরবিদ্যুৎ বদলে দিচ্ছে গ্রামাঞ্চলের দৃশ্যপট by রেজাউল করিম রেজা

কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ও চর এলাকার অন্ধকার তাড়িয়েছে সৌরবিদ্যুৎ। কমে আসছে গ্রাম শহরের পার্থক্য। বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ জীবনের দৃশ্যপট।
পল্লী এলাকায় ঢুকলেই দেখা যায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর ঘরের চালে শোভা পাচ্ছে সৌর প্যানেল; আলোকিত হচ্ছে ঘর। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার পাশাপাশি চলছে বিনোদনও। কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় ২০০৫ সাল থেকে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত হতে থাকে প্রত্যন্ত গ্রামগুলো। এ আলো ছড়িয়ে পড়ে চরাঞ্চলগুলোতেও। যারা কখনো ভাবেনি তাদের ঘরে বিজলী বাতি জ্বলবে, তারা এখন সহজ কিস্তিতে পেয়ে যাচ্ছেন সৌরবিদ্যুৎ। এ জেলায় গ্রামীণ শক্তির পাশাপাশি সোলার প্যানেল সরবরাহ করে আসছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও। গত এক বছর আগে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের চর কালুয়া গ্রামের শতাধিক পরিবার মোবাইল কোম্পানি রবির সহায়তায় বিনামূল্যে সোলার প্যানেল পেয়েছে।

সৌরবিদ্যুতের আলোয় এখন ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করতে পারছে। পাশাপাশি নাগালের মধ্যে পাচ্ছে নানান বিনোদন। সৌরবিদ্যুতের সুবিধা পাওয়ায় গ্রামের হাটবাজারগুলোতে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে ব্যবসায়-বাণিজ্য। চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের জব্বার আলী জানান, গ্রামে কখনো বিদ্যুৎ আসবে কি না জানা নেই তার। সে জন্যই তিনি কিস্তিতে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। এ বিদ্যুতের আলোয় ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করছে। পাশাপাশি মোবাইল চার্জ দেয়া থেকে শুরু করে টেলিভিশনও দেখছেন তারা।

সদর উপজেলার চর যাত্রাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, তার ইউনিয়নে বর্তমানে প্রায় চার শতাধিক সৌরবিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। এতে প্রত্যন্ত গ্রাম ও চরাঞ্চলগুলোতে চলছে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ বিনোদন। সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের ফলে জ্বালানি তেলের ওপর চাপ কমছে বলে জানান তিনি।

গ্রামীণ শক্তির কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মাহফুজ হোসেন বলেন, ২০০৫ সাল থেকে কাজ করে তারা এ পর্যন্ত জেলায় ১০ হাজার সৌর প্যানেল স্থাপন করেছেন। এতে সুবিধা পাচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। তিনি জানান, প্রতিটি সৌর প্যানেল চাহিদানুযায়ী ১২ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন তারা। নগদ অথবা কিস্তিতে এ প্যানেল সরবরাহ করা হয়। প্রতিনিয়ত সৌর প্যানেলের চাহিদা বেড়েই চলেছে এ অঞ্চলে। ইতোমধ্যে কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার লাধিক পরিবার পাচ্ছে এ বিদ্যুৎ সেবা। এ ছাড়াও যেসব ইউনিয়ন কাউন্সিল অফিসে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি সেখানে সৌরবিদ্যুতেই চলছে তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলো। চেষ্টা চলছে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সেচপাম্প চালানোরও।

No comments

Powered by Blogger.